এগ্রিনিউজ২৪.কম ডেস্ক: দেশীয় পোল্ট্রি শিল্পের উন্নয়নে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ প্রদান করেছে ওয়ান হেলথ পোল্ট্রি হাব বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদ। গত ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত জুম ক্লাউড সভায় এ সকল সুপারিশ পেশ করা হয়।
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ মনে করেন দেশীয় পোল্ট্রি খাতকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিতে রপ্তানিতে গুরুত্ব দিতে হবে। যার অংশ হিসেবে পোল্ট্রি জোনিং, কম্পার্টমেন্টালাইজেশনের মত কাজগুলো জরুরিভিত্তিতে শুরু করতে হবে। তাছাড়া স্লটার হাউসগুলোর (জবেহখানা) মানোন্নয়ন এবং ‘পশু জবাই ও মাংসের মাননিয়ন্ত্রণ আইন-২০১১’ -এর কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) সভাপতি মসিউর রহমান এবং ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সাইন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান (শাহরিয়ার) বলেন, রপ্তানি বাজারে প্রবেশ করতে পারলে পণ্যের মান ও সক্ষমতা উভয়ই বাড়বে, খামারিরা লাভবান হবেন, কর্মসংস্থান বাড়বে এবং অর্থনীতিতে এ শিল্পের অবদান বৃদ্ধি পাবে। তাঁরা বলেন, সবার আগে এ সেক্টরে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং সেজন্য খামার, হ্যাচারি, ফিড মিলগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে। খামারের জীবনিরাপত্তা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষণ করে তবেই বৈধতা প্রদান করতে হবে। তাঁরা বলেন, উন্নত জীবনিরাপত্তা সুনিশ্চিত হলে রোগবালাই এবং ওষুধের প্রয়োগ কমবে, এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বন্ধ হবে।
সরকার আন্তরিক হলে এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে দেশে মাথাপিছু ২১০টি ডিম এবং ১২ কেজি মাংসের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মতামত দেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ। তাঁরা বলেন, ২৫ দিনে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি না করে ৩৫ দিন পর্যন্ত পালন করতে পারলে মাংসের পুষ্টতা ও টেক্সচার বৃদ্ধি পাবে, ফলে পুষ্টিমান ও স্বাদ উভয়ই বাড়বে।
ওয়ান হেলথ পোল্ট্রি হাব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়- পোল্ট্রি খামারি, মাঠ-পর্যায়ে র্কমরত ভেটেরিনারিয়ান ও ভেটেরিনারি মেডিসিনে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য ১২ পর্বের একটি এবং ১৩ পর্বের অপর একটি মোট দু’টি অনলাইন প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে; যেখানে পোল্ট্রি খামার ব্যবস্থাপনা, রোগবালাই প্রতিরোধ ও নিরাময়, জীবনিরাপত্তা প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। সিরিজ-১ এর উপর একটি সংক্ষপ্তি গ্রন্থ প্রকাশ করা হবে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
অনলাইন সভায় জীবাণুর বিরুদ্ধে এন্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতা বিষয়ে আইসিডিডিআরবি, ফ্লেমিং ফান্ড এবং ওয়ান হেলথ পোল্ট্রি হাব বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত প্রকল্পের কার্যক্রম ও এর ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ।
ওয়ান হেলথ পোল্ট্রি হাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়- “ন্যাশনাল প্ল্যান ফর এভিয়ান এন্ড প্যান্ডেমিক ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রিপেয়ার্ডনেস, প্ল্যান-৩” বিষয়ে যথাশীঘ্রই একটি পর্যালোচনা সভার আয়োজন করা হবে।
অনলাইন সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ডা. মো. মাহাবুবুর রহমান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ডা. শেখ আজিজুর রহমান, বিএলআরআই এর মহাপরিচালক ডা. মো. আব্দুল জলিল, জাতীয় সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. নিতীশ চন্দ্র দেবনাথ, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহমুদুর রহমান, পরিচালক, অধ্যাপক ড. তাহমিনা শিরিন, ডা. সুদীপ্তা সরকার; স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ড. মীরজাদী সাব্রিনা ফ্লোরা, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলিম, বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান, ডব্লিউ.পি.এস.এ- বাংলাদেশ শাখার সভাপতি আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান, বিএলআরআই এর সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মো. গিয়াস উদ্দিন, বর্তমান মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.আব্দুস সামাদ ও কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান; সিভাসু’র অধ্যাপক ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, ডা. রাশেদ মাহমুদ, ডা. নুরুন নাহার চিশতী, ডা. মেহেরজান ইসলাম, ডা. সৈয়দা মুনিরা দিলশাদ ও ডা. ইশরাত জাহান ইশা; প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ড. মোজাফ্ফর গণি ওসমানি, ওয়ান হেলথ পোল্ট্রি হাব বাংলাদশের জাতীয় সমন্বয়ক অধ্যাপক মো. আহসানুল হক প্রমুখ।