বৃহস্পতিবার , ডিসেম্বর ১৯ ২০২৪

নতুন করে কৃষি বিপ্লব ঘটবে -কৃষিমন্ত্রী

মুশুদ্দি (ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল) : কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, খাদ্যের  ক্রমবর্ধমান  চাহিদা মেটাতে আমাদের বিজ্ঞানীরা নিরলসভাবে কাজ করছে।  সম্প্রতি ব্রি–৮১, ব্রি- ৮৯, ব্রি ৯২, মুজিববর্ষে ব্রি- ১০০সহ অনেকগুলো উন্নত জাতের ধান উদ্ভাবিত হয়েছে। ব্রি-৮১, ব্রি- ৮৯ ও  ব্রি ৯২ জাতের ধানের ফলন অনেক বেশি। প্রতি বিঘায় ২৫- ৩০ মণ, প্রতি শতকে প্রায় ১ মণ। এ জাতগুলো  চাষের মাধ্যমে দেশে নতুন করে সবুজ বিপ্লব ঘটবে। দেশে খাদ্য উৎপাদন অনেকগুণ বাড়বে ও ভবিষ্যতে খাদ্য সংকট হবে না।

কৃষিমন্ত্রী আজ (৮ মে) শনিবার টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার  মুশুদ্দি কামারপাড়ায়  ‘ব্রি-৮৯ ও ৯২ জাতের ধান কর্তন ও কৃষক সমাবেশ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ  অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মন্ত্রী বলেন, ব্রি ৮৯ ও ব্রি- ৯২ চাষের মাধ্যমে উন্নত শস্য বিন্যাসে বোরো ধান ও আমন ধান চাষ করে পতিত সময়ে সরিষা করা যাবে। প্রতিবছর  আমাদেরকে বিদেশ থেকে ১৫-২০ হাজার কোটি টাকার  বিপুল পরিমাণ ভোজ্য তেল আমদানি করতে হয়। এ জাত দুটি চাষ করলে অতিরিক্ত ফসল হিসাবে সরিষা উৎপাদন করা যাবে। ফলে সরিষার উৎপাদন বাড়বে ও তেল আমদানির পরিমাণ কমবে।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র  সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ, বারির মহাপরিচালক ড. মো: নাজিরুল ইসলাম, বিনার ডিজি ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো: আতাউল গণি,  পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

ব্রির তথ্য মতে,  গত ফেব্রুয়ারি মাসে রোপণকৃত ব্রি ধান৮৯ ও ব্রি ধান৯২ আজ কাটা হয়। আগে এই এলাকায় ব্রি ধান২৮ এবং ব্রি ধান২৯ আবাদ করা হতো যেখানে ব্রি ধান২৮ ও ব্রি ধান২৯ এর ফলন ছিল বিঘাপ্রতি ১৮ থেকে ২০ মন, সেখানে ব্রি ধান৮৯ ও ব্রি ধান৯২ ধানের ফলন পাওয়া যায় বিঘাপ্রতি ২৫-৩০ মন। এছাড়াও, ব্রি ধান২৯ এর চেয়ে পাঁচ থেকে সাত দিন পূর্বেই কর্তন করা যায় এই দুটি জাত।

ব্রির তথ্যে জানা যায়,  বোরো-পতিত-রোপা আমন বাংলাদেশের একটি প্রধান শস্যবিন্যাস, যা সারাদেশের মোট আবাদযোগ্য জমির প্রায় ২৭% জমিতে চাষাবাদ করা হয়। এই দ্বিফসলী শস্যবিন্যাসের নানাভাবে উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে- বিশেষ করে উঁচু এবং মধ্যম উঁচু জমিতে।

এ শস্যবিন্যাসের উন্নয়নের জন্য প্রথমত বোরো এবং রোপা আমন ধানের মধ্যবর্তী সময়ে সরিষা চাষ করা হয়। ভোজ্য তেলের জন্য বোরো-পতিত-রোপা আমন শস্যবিন্যাসে সরিষা অর্ন্তভূক্তি করতে পারলে ২.৬০ মিলিয়ন টন সরিষা উৎপাদন সম্ভব, যা থেকে বছরে ১.০৪ মিলিয়ন টন সরিষা তৈল পাওয়া যেতে পারে।

এর আগে সকালে মন্ত্রী মধুপুরের গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ৩১,১৮৭ টি পরিবারকে ৪৫০ টাকা করে মোট ১ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার  ভিজিএফ বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন  করেন।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, দেশে খাদ্যের কোন সংকট নেই। এখন সারা দেশে বোরো ধান কাটা চলছে। তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদ উপলক্ষ্যে এই উপহার দিচ্ছেন যাতে করে কোনক্রমেই একটি মানুষকেও যেন ঈদে খাদ্যের জন্য কষ্ট করতে না হয়। ঈদের আনন্দ যাতে ম্লান না হয়।

This post has already been read 3382 times!

Check Also

মালদ্বীপের সাথে শীঘ্রই বাংলাদেশের সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হবে- নৌপরিবহন উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন …