বুধবার , জানুয়ারি ২৯ ২০২৫

কাজুবাদম, কফি চাষ ও প্রক্রিয়াজাতে এগিয়ে আসার আহ্বান কৃষিমন্ত্রী

বান্দরবন: দেশের  কৃষক  ও উদ্যোক্তাদেরকে কাজুবাদম,  কফি চাষে ও প্রক্রিয়াজাতে  এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক, এমপি। দেশে কাজুবাদাম ও কফির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ চলছে বলেও জানান তিনি।

কৃষিমন্ত্রী রবিবার (২০ জুন) সকালে বান্দরবন জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের অবহিতকরণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া, তিনি  দেশের উপযোগী উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও তা কৃষকের কাছে ছড়িয়ে দিতে  কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের পাহাড়ি অঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের অনেক জায়গায় কাজুবাদাম ও কফি চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে আমরা কাজ করছি।  পাহাড়ী অঞ্চলসহ সারাদেশের যে সব অঞ্চলে কাজুবাদাম এবং কফির চাষাবাদের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে; তা চাষের  আওতায় আনতে ‘কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ শীর্ষক ২১১ কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, শুধু দেশে উৎপাদন নয়, বিদেশ থেকে কাঁচা কাজুবাদম এনে প্রক্রিয়াজাত করেও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। সেজন্য কাজুবাদামের প্রক্রিয়াজাত বাড়াতে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। দেশে  কাজুবাদামের প্রক্রিয়াজাতের সমস্যা দূর করা ও  প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ইতোমধ্যে  কাঁচা কাজুবাদাম আমদানির ওপর শুল্কহার প্রায় ৯০% থেকে নামিয়ে মাত্র ৫% নিয়ে আসা হয়েছে।

কাজুবাদাম ও কফির মতো অর্থকরী উচ্চমূল্যের এসব ফসলের চাষ, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং প্রক্রিয়াজাতে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে জানান মন্ত্রী।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহর সভাপতিত্বে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব ওয়াহিদা আক্তার, , বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো: বখতিয়ার, বান্দরবনের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বান্দরবনের উপপরিচালক একেএম নাজমুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।  কাজুবাদম,  কফির সম্ভাবনা নিয়ে উপস্থাপনা তুলে ধরেন কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের পরিচালক শহিদুল ইসলাম। এসময় কৃষক, উদ্যোক্তা, প্রক্রিয়াজাতকারীসহ স্থানীয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকালে কৃষিমন্ত্রী স্থানীয় হর্টিকালচার সেন্টারে উন্নত জাতের কফি ও কাজুবাদামের চারা উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

উল্লেখ্য, ২১১ কোটি টাকার কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্পটি ২০২১-২৫ মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। দেশের ২৮টি জেলায় ৮৮টি উপজেলায় কাজ করবে। এর মাধ্যমে উচ্চফলনশীল ও উন্নত জাতের চারা উদ্ভাবন, প্রযুক্তি হস্তান্তর, কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত ও বাজারজাতে  প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

প্রকল্পের পরিচালক শহিদুল ইসলাম জানান, পার্বত্য তিন জেলায় প্রায় ৫ লাখ হেক্টর অনাবাদি জমি রয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ হেক্টর জমিতে কাজুবাদাম আবাদ করতে পারলে বছরে ৯ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। পাশাপাশি, পাহাড়ি জমিতে কফি আবাদ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করাও সম্ভব হবে। তিনি জানান, ১ লাখ হেক্টর জমিতে কফি চাষ করতে পারলে ২ লাখ টন কফি উৎপাদন সম্ভব যার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা।

This post has already been read 3903 times!

Check Also

লালমনিরহাটে ৫০ একর জমিতে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বোরো ধানের চাষ

লালমনিরহাট সংবাদদাতা: নানা কারনে শ্রমজীবি মানুষ এখন শহর মুখী।ফলে কৃষি কাজে শ্রমিক সংকট তীব্র হচ্ছে। …