শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪

বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৪ পেলেন ড. কেএম খালেকুজ্জামান

কৃষি উন্নয়নে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, উদ্বুদ্ধকরণ কৃষিবিষয়ক প্রকাশনা, ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে জনগনের মধ্যে কৃষিবিষয়ক তথ্য সরবরাহ ও প্রচারমূলক কাজে অবদানের জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিজ্ঞানী ড. কে, এম, খালেকুজ্জামান “বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার, ১৪২৪” প্রদান করা হয়েছে।

বিজ্ঞানী ড. কে, এম, খালেকুজ্জামান সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা ডাকঘরের অধীন চড়িয়া কালিবাড়ী গ্রামের মরহুম জোনাব আলী খান -এর কনিষ্ঠ পুত্র। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ হতে বি. এসসি. এজি. (অনার্স); এম. এসসি. (এজি.) প্লান্ট প্যাথলজি এবং পিএইচ. ডি. ইন প্লান্ট প্যাথলজি ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি হাবিপ্রবি, দিনাজপুর থেকে “পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সার্টিফিকেট কোর্স্ অন সিড টেকনোলজি” সম্পন্ন করেন।

ড. খালেকুজ্জামান ১৯৯৫ খ্রি: থেকে বিভিন্ন ফসলের রোগ, রোগের সনাক্তকরণ ও রোগের দমন ব্যবস্থাপনার উপর কৃতিত্বের সহিত গবেষণা করে আসছেন। তিনি বিভিন্ন ফসলের রোগ, রোগের সনাক্তকরণ, রোগ দমন ব্যবস্থাপনা, রোগের স্কোরিং স্কেল, রোগের পূর্বাভাস, ক্রপ মডেলিং, বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ (৪ মাস), ইনডাকশন ট্রেনিং, বীজ প্রযুক্তি, অফিস ব্যবস্থাপনা, প্রশাসন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ও ক্রয় নীতিমালা, গবেষনা পদ্ধতি, উদ্ভিদ কৌলিসস্পদ ব্যবস্থাপনা, নার্সারী ব্যবস্থাপনা, বানিজ্যিকভাবে ফুল উৎপাদন, মসলা ফসলের বীজ উৎপাদন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর, সায়েন্টিফিক রিপোর্ট রাইটিং, ইন্টারনেট, কম্পিউিটার, গ্রাফিক্স, ভিডিও এডিটিং, ডাটা প্রসেসিং, ডাটা এ্যানালাইসিস ইত্যাদি বিষয়ের উপর বিশেষভাবে প্রশিক্ষন প্রাপ্ত।

ড. খালেকুজ্জামান ২০১৫ সালে কৃষি বিয়য়ক লেখার উপর অবদান রাখার জন্য ”কৃষি সম্মাননা পদক ও ক্রেস্ট” প্রাপ্ত হয়েছিলেন। এ পর্যন্ত তাঁর মোট প্রকাশণার সংখ্যা ৪৬৭ টি। তার মধ্যে দেশী-বিদেশী ও আন্তর্জাতিক জার্নালে মোট ১৭৫ টি পূর্নাঙ্গ সায়েন্টিফিক পেপার, ২২ টি অ্যাবস্ট্রাক্ট ও ২ টি শর্ট কমিউনিকেশন প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও কৃষিকথা, উর্বরা, কৃষি সওগাত, কৃষি বার্তা, কৃষি প্রযুক্তি, কৃষি বিপ্ল¬বসহ দেশের বিভিন্ন জাতীয়, স্থানীয় ও ইন্টারনেট পত্র-পত্রিকায় কৃষি বিয়য়ক তাঁর মোট ২৪৫ টি পপুলার আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর ১১ টি বুকলেট ও ফোল্ডারও প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানী ড. খালেকুজ্জামান-এর প্রকাশিত মোট বই-এর সংখ্যা ১২ টি, তার মধ্যে প্রধান লেখক হিসেবে ৪টি ও সহযোগী লেখক হিসেবে ৮টি। তাঁর বইসহ অন্যান্য লেখার কাজ বর্তমানেও অব্যাহত আছে।

ড. খালেকুজ্জামান-এর উদ্ভাবিত ও বাস্তবায়িত গবেষণা প্রোগ্রামের সংখ্যা ১৫৯ টি এবং গবেষণাকৃত কৃতিত্ব ও ফলাফল ৮৫ টি। তিনি মসলা জাতীয় ফসলের বিভিন্ন জাত উদ্ভাবনের সাথেও জড়িত আছেন এবং প্রস্তাবিত জাতসমূহ মূল্যায়ন করে থাকেন। তিনি বিভিন্ন জার্নালের সহযোগী সম্পাদক ও পেপার রিভিউয়ারের দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। তিনি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, উদ্ভিদ রোগতত্ত¡ সমিতি, উদ্যানতত্ত্ব সমিতি, বীজ বিজ্ঞান সমিতি, উদ্ভিদ প্রজনন ও কৌলিতত্ত্ব সমিতি, ফল বিজ্ঞান সমিতিসহ মোট ১৫ টি পেশাজীবি সমিতির আজীবন সদস্য। বিজ্ঞানী ড. খালেকুজ্জামান বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. এস., এম. ফিল ও পি-এইচ. ডি. ছাত্র-ছাত্রীদের গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক ও থিসিস পরীক্ষক। তিনি অনেক জাতীয় ও আন্ত:র্জাতিক সেমিনার/ওয়ার্কশপ-এ অংশগ্রহন করেছেন ও ১৫ টি সায়েন্টিফিক পেপার উপস্থাপন করেছেন। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে বিভিন্ন ফসলের রোগ দমন ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রতিবেদন ও অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত তাঁর সাক্ষাৎকার প্রায়শই প্রচারিত হয়ে থাকে।

ড. কে, এম, খালেকুজ্জামান কর্তৃক লিখিত পুস্তক/প্রবন্ধ, টিভি প্রোগ্রাম, কৃষিবিষয়ক ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদির মাধ্যমে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকবৃন্দ, গবেষক, সস্প্রসারণকর্মী, এনজিও কর্মী, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এবং কৃষকগন উপকৃত হচ্ছেন। তাছাড়া এসব প্রকাশনা উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে সহায়তা করছে, যা কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি, বেকারত্ব দূরীকরণ এবং দারিদ্রতা হ্রাসে ভূমিকা রাখছে। ফসলের ফলন বৃদ্ধি, কৃষি উৎপাদনে খরচ কমানো, প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন, রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে তার প্রকাশনাগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। তিনি সকলের দোয়া প্রার্থী।

-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

This post has already been read 3373 times!

Check Also

ভেটেরিনারি ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভ্যাব) এর বিক্ষোভ সমাবেশ

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামলীগের বিদায়ের তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে …