ড. খালেদা ইসলাম : বেঁচে থাকা ও সুস্থতার জন্য প্রয়োজন খাদ্য আর এই খাদ্যের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদন হলো- প্রোটিন বা আমিষ। মাতৃগর্ভে থাকাকালীন সময় থেকে শুরু করে বৃদ্ধকাল পর্যন্ত প্রোটিনের গুরুত্ব অপরিসীম। আমিষ বা প্রোটিন মূলত কার্বন, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন ও নাইট্রোজেন- এগুলোর সমন্বয়ে গঠিত। প্রোটিন অণু প্রায় ২০টি বিভিন্ন রকম অ্যামাইনো অ্যাসিডের সমন্বয়ে গঠিত হয়। এই অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলোর সংযুক্তি আমিষের পুষ্টিগত দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশে আমিষ খাবারের ভালো উৎস থাকা সত্ত্বেও গুণমান সম্পন্ন আমিষ গ্রহণের পরিমাণে ঘাটতি রয়েছে। অধিক জনগোষ্ঠীর এই দেশে আমিষ ঘাটতির নানাবিধ কারণ রয়েছে। আমিষ জাতীয় খাদ্যের দাম অধিক হওয়ার কারণে ব্যাপক জনগোষ্ঠী তাঁদের খাদ্য তালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাদ্য অন্তর্ভূক্ত করতে পারেন না। ফলে আমাদের মত দেশে খাদ্যে আমিষ ঘাটতি থাকাটা অতি স্বাভাবিক একটি ঘটনা।
শতকরা ৬০ ভাগেরও অধিক আমিষ আমরা গ্রহণ করে থাকি বিভিন্ন প্রকার শর্করাজাতীয় খাবার থেকে যেখানে শতভাগ পরিপূর্ণ গুণগতমানসম্পন্ন আমিষ সাধারনত থাকেনা। এমনকি ঐ ধরনের আমিষে অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো এসিডের ঘাটতি থাকায় সুষম আমিষ গ্রহণ থেকেও অনেকে বঞ্চিত হন।
অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো এসিডের উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে আমিষের পুষ্টিমান। যে আমিষে অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো এসিডের মাত্রা মানুষের দেহের চাহিদার যত কাছাকাছি, সে আমিষের পুষ্টিমূল্য তত বেশি। আমিষের জৈব মান দিয়ে এর পুষ্টিমূল্য নির্ধারণ করা হয়। যে আমিষের জৈবিক মান ১০০ সে আমিষকে আদর্শ আমিষ বলা হয়। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে, সাধারণভাবে উদ্ভিজ্জ আমিষের তুলনায় প্রাণিজ আমিষের জৈবিক মান বেশি হয়ে থাকে।
প্রোটিনের উৎস
উৎস অনুযায়ী আমিষকে প্রধানত: দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যথা:
১. প্রাণিজ আমিষ: যে আমিষগুলো প্রাণিজগৎ থেকে পাওয়া যায় তাদেরকে প্রাণিজ আমিষ বলে। যেমন: মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি। এ জাতীয় প্রোটিনকে প্রথম শ্রেণীর প্রোটিনও বলা হয়।
২. উদ্ভিজ্জ আমিষ: উদ্ভিদ জগৎ থেকে প্রাপ্ত আমিষকে উদ্ভিজ্জ আমিষ বলে। যেমন: ডাল, বাদাম, সয়াবিন, শিমের বিচি, ইত্যাদি। উদ্ভিজ্জ আমিষকে দ্বিতীয় শ্রেণীর আমিষ বলে।
প্রতিদিন উদ্ভিজ্জ আমিষের পাশাপাশি কিছু প্রাণিজ আমিষও গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশে সহজলভ্য প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে অধিক প্রাধান্য পায় মুরগির মাংস ও ডিম। দামে ও গুণের বিচারে এই দু’টো প্রাণিজ প্রোটিন সর্বোৎকৃষ্ট। পুষ্টিবিদদের মতে, প্রাণিজ আমিষের ৪০ শতাংশ আসে পশু-পাখি থেকে এবং এর এক-তৃতীয়াংশ আসে পোল্ট্রি থেকে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর ২০১৮ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী- বার্ষিক মাংসের চাহিদা ৭২ দশমিক ১৪ লাখ মেট্রিক টন হলেও প্রকৃত উৎপাদন ৭২ দশমিক ৬০ লাখ মেট্রিক টন। দেখা যাচ্ছে- প্রতিদিন খাবার মেন্যুতে একজন ব্যক্তি মাংস পাচ্ছে ১২২ দশমিক ১০ গ্রাম। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২০ সালে মাথাপিছু ডিমের বাৎসরিক প্রাপ্যতা ছিল ১০৪ টির কিছু বেশি। ২০৩০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা ১৬৫টি এবং ২০৪১ সাল নাগাদ ২০৮টি তে উন্নীত হবে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। সে হিসাব অনুযায়ী ২০৩১ ও ২০৪১ সাল নাগাদ দেশে ডিমের বাৎসরিক উৎপাদন দাঁড়াবে যথাক্রমে প্রায় ৩২৯৩৪ মিলিয়ন এবং ৪৬৪৮৮ মিলিয়ন।
কেন প্রোটিন খাবেন?
আমাদের শরীর নিজ থেকে প্রোটিন তৈরি করতে পারে না, তাই বিভিন্ন খাদ্য থেকে প্রোটিন সংগ্রহ করতে হয়। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, অতিরিক্ত প্রোটিন গ্লাইকোজেন হিসেবে শরীরে জমা থাকে কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত চর্বিগুলো অতিরিক্ত চর্বি হিসেবেই জমা থেকে যায় আর এর ফলেই নানাবিধ জটিলতা দেখা দিতে থাকে।
প্রোটিন ছাড়া কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব কল্পনাও করা যায় না। তাই প্রোটিনকে সকল প্রাণের প্রধান উপাদান হিসেবেও গণ্য করা হয়। আমাদের শরীরের প্রধান প্রধান কাজগুলো করার জন্য প্রোটিনের প্রয়োজন হয়।
আমাদের ত্বক, চুল, আঙুল, হাড়, রক্ত ইত্যাদির জন্য প্রোটিনের প্রয়োজন। মূলত দেহের নানা অংশকে একত্রে ধরে রাখে প্রোটিন। আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখার জন্যও প্রোটিন প্রয়োজন।
- এছাড়া দেহের নানা অংশে পুষ্টি পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রোটিন দরকার। সুস্থ চুল ও নখের জন্যও প্রোটিন খুবই প্রয়োজন।
- শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধি সাধন ও দেহ গঠন করে।
- আমাদের দেহের কোষগুলো প্রতিনিয়তই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এই ক্ষয়প্রাপ্ত স্থানে নতুন কোষ গঠন করে ক্ষয়পূরণ করতে এবং কোনো ক্ষতস্থান সারাতে প্রোটিনের ভূমিকা রয়েছে।
- দেহে চর্বি ও শর্করার অভাব দেখা দিলে প্রোটিন তাপশক্তি উৎপাদনের কাজ করে।
- রোগ সৃষ্টিকারী রোগজীবাণুকে প্রতিরোধ করার জন্য দেহে অ্যান্টিবডি তৈরী করা আমিষের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
- মস্তিস্কের গঠন বা মানসিক বিকাশে আমিষ অপরিহার্য্য।
- দেহে আমিষের অভাব থাকলে বর্ধনশীল শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
- দীর্ঘদিন ধরে খাদ্যে আমিষের ঘাটতি থাকলে কোয়াশিয়রকর রোগ হয়। দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, মেধা ও বুদ্ধি কমে যায়। তাই আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।
- দেহস্থ উৎসেচক ও হরমোন তৈরি করা এবং অপরিহার্য্য অ্যামিনো অ্যাসিডের চাহিদা পূরণ করা প্রোটিনের একটি অন্যতম কাজ।
- এটি দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আবশ্যিক উপাদান।
- রক্ত ধারায় প্রবাহিত অক্সিজেনের বাহক। এবং
- কখনও কখনও শক্তির উৎস হিসেবেও কাজ করে।
উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বনাম প্রাণিজ প্রোটিন
- উদ্ভিজ্জ খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ প্রাণীজ খাবার থেকে কম।
- উদ্ভিজ্জ খাবারে অত্যাবশ্যকীয় নয়টি অ্যামিনো অ্যাসিডর একটি হলেও অনুপস্থিত থাকে।
- প্রাণিজ প্রোটিন থেকে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে খাবার এলার্জি ও সেন্সটিভিটি অধিক হয়ে থাকে। আমাদের অতি পরিচিত ৫টি উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের ফুড এলারজেন হল- গ্লুটেন, সয়া, ভুট্টা, সব ধরণের বাদাম ও চিনাবাদাম।
- প্রাণিজ প্রোটিন থেকে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে পরিপাকযোগ্যতা ও জৈবমান কম থাকে। যেমন- প্রাণিজ প্রোটিন যেখানে ৯৪% পরিপাকযোগ্য, সেখানে ভুট্টা ও শুঁটিজাতীয় মাছের পরিপাকযোগ্যতা ৭০%।
আমাদের দেহে প্রোটিনের চাহিদা
একজন পুরুষ কিংবা নারীর দৈনিক কতটুকু প্রোটিন প্রয়োজন তার একটি নির্দিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে। এটি একজন মানুষের সুস্থ্য থাকার জন্য চাহিদার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। তবে দেহের ওজন, উচ্চতা ও শারীরিক কর্মকান্ডের ওপরও প্রোটিনের চাহিদার কমবেশি হয়ে থাকে। কারো দেহের ওজন যদি ৯০ কেজি হয় তবে স্বাভাবিকভাবেই ৭০ কেজি ওজনের ব্যক্তির তুলনায় তার প্রোটিনের চাহিদা বেশি হবে। এ ছাড়া যারা সারাক্ষণ বসে কাজ করেন তাদের তুলনায় যারা দাঁড়িয়ে কিংবা অধিক পরিশ্রমের কাজ করেন তাদের প্রোটিনের চাহিদা বেশি থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেহের প্রতিকেজি ওজনের জন্য ০.৮ গ্রাম থেকে এক গ্রাম অনুপাতে প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন। তাঁরা বলেছেন, একজনের দৈনিক ক্যালরি চাহিদার ৩০ শতাংশ প্রোটিন থেকে মেটাতে হবে।
১ গ্রাম আমিষ থেকে শর্করা সমপরিমাণ চার কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক প্রয়োজনীয় ক্যালরির শতকরা ২০-২৫ ভাগ আমিষ জাতীয় খাদ্য থেকে গ্রহণ করা উচিত। গর্ভবতী মহিলা এবং দুগ্ধদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে আমিষের চাহিদা কিছুটা বেশি। গর্ভবতী মহিলার জন্য এবং ৭-১২ মাস বয়সী শিশুর মায়ের জন্য স্বাভাবিক আমিষের সঙ্গে বাড়তি দৈনিক ১৩-১৪ গ্রাম আমিষ যোগ করতে হবে। তবে শিশুর ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মূলত মায়ের দুধের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয় বলে মায়ের জন্য বাড়তি দৈনিক ১৯ গ্রাম আমিষ যোগ করতে হবে।
কতটুকু প্রোটিন গ্রহণ করবেন?
আমিষের চাহিদা ব্যক্তি, লিঙ্গ ও দেহের ওজন ভেদে ভিন্ন ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) কর্তৃক পরিচালিত গবেষণা মতে, এদেশে শতকরা ৬৬ ভাগেরও অধিক মানুষ প্রতিদিন ৫০ গ্রাম আমিষ গ্রহণ করে থাকে। তবে শতকরা ৭৫ ভাগ মানুষই শষ্যজাত খাদ্য থেকে এ আমিষ গ্রহণ করে থাকে। বীজ, দানাদার ও শস্যজাত খাবার- আমিষের উৎস হিসেবে তেমন উন্নত নয়। ফলে স্বাভাবিকভাবে মানুষের অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো এসিডের ঘাটতি রয়ে যায়। পুষ্টিবিদদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের কমপক্ষে দৈনিক ৬০ গ্রাম প্রোটিন এবং প্রাপ্তবয়স্ক নারীর কমপক্ষে দৈনিক ৫৫ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত।
আমিষের প্রধান উৎস হচ্ছে- ডিম, দুধ, মাছ, মাংস, দানাদার শস্য, ডাল, ইত্যাদি। এদের মধ্যে আমিষের মাত্রার তারতম্য রয়েছে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের (এআইএস) তথ্য অনুযায়ী, দানাদার শস্যে আমিষের পরিমাণ শতকরা ৬-১২ ভাগ, যা ডাল জাতীয় শস্যে ২০-২৫ ভাগ। মাছ, মাংস, ডিম ও দুধে আমিষের পরিমাণ যথাক্রমে শতকরা ১৩-২০ ভাগ, ২০ ভাগ, ১০-১৪ ভাগ এবং ৩-৪ ভাগ।
প্রাণিজ প্রোটিনের গুরুত্ব
প্রাণিজ আমিষের প্রধান কয়েকটি উৎস হলো ডিম, মাংস, মাছ, দুধ ও দুধ জাতীয় খাদ্য। আমাদের দেশে সাধারণত মাংসের উৎস হচ্ছে- গরু, মহিষ, ছাগল ও মুরগি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে গৃহপালিত পশুকে একটি নির্দিষ্ট ওজনে পৌঁছানোর পর জবাই করে বাজারে বিক্রি ও রান্না করা হয়। পশুর মাংসকে অধিকাংশ সময়েই সম্পূর্ণ প্রোাটিন, আয়রণ, জিংক ও ভিটামিন বি এর ভালো উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। রেড মিট বা লাল মাংস- প্রোটিন, ফ্যাট ও শক্তির অন্যতম উৎস হলেও লাল মাংসের অধিকাংশ ফ্যাট সম্পৃক্ত শ্রেণির যেখানে অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিডের মাত্রা কম থাকে এবং এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। মুরগির মাংস এক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম। এতে কোলেস্টেরল ও চর্বির পরিমাণ কম থাকে এবং এই চর্বি অসম্পৃক্ত শ্রেণির- যা আমাদের দেহের জন্য উপকারী।
দীর্ঘদিন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং হার্টের সুরক্ষার জন্য মুরগির মাংস খুবই উপকারি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- ১৭২ গ্রামের রান্না করা মুরগির বুকের মাংসে ৫৪ গ্রাম প্রোটিন থাকে কিন্তু ১৭২ গ্রামের রান্না করা গরুর মাংসে ৪২ গ্রাম প্রোটিন থাকে। আসলে, মুরগির মাংস (হোয়াইট মিট) থেকে লাল মাংসে (রেড মিট), আমিষের তুলনায় চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে।
মাছ সাধারনত প্রকৃতি হতে স্বাভাবিক উপায়ে আহরণ করা হয়। আমাদের দেশে প্রাণিজ আমিষের চাহিদার একটা বড় অংশের যোগান দিচ্ছে মৎস্যখাত। মাছ থেকে আমরা সম্পূর্ণ প্রোটিন, আয়রণ, ক্যালসিয়াম ও বি ভিটামিন পাই। সামুদ্রিক মাছ থেতে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়োডিন পাওয়া যায়। মাছের লিভার থেকে ভিটামিন এ এবং চর্বিযুক্ত মাছ থেকে অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়- যা আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী। লবণাক্ত মাছে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে। অন্যদিকে শুটকি মাছে পানির পরিমাণ কম ও অধিক পরিমাণ প্রোটিন থাকে।
দেশের বাজারে সাধারনত মুরগি ও হাঁসের ডিমই বেশি দেখা যায়। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে- প্রোটিন জাতীয় খাবারের মধ্যে ডিম হলো উৎকৃষ্ট উৎস ও সহজলভ্য। ডিমে ১০০ শতাংশ জৈবিক মান রয়েছে। সম্পূর্ণ প্রোটিন ও ভিটামিন বি ও ডি এর ভালো উৎস হচ্ছে ডিম। ডিমের কুসুমে চর্বি ও আয়রণ পাওয়া যায়। অন্য কোন সমস্যা না থাকলে ডিমের কুসুম কখনই বাদ দেয়া উচিত নয়। ভিটামিন ডি-র জন্য সূর্যের আলোর পাশাপাশি পথ্য হিসেবে ডিমের কুসুম খাওয়ারও পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।
দুধ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্য। তবে গরু ও ছাগলের দুধে প্রোটিন ও ফ্যাট এর পরিমাণ প্রায় সমান। ভেড়া ও মহিষের দুধে প্রোটিন অপেক্ষা ফ্যাট এর পরিমাণ বেশি থাকে। মায়ের দুধেও ফ্যাট অধিক পরিমাণে পাওয়া যায়। দুধের ফ্যাট সম্পৃক্ত ও অল্প কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড ধারণ করে। তবে ব্যতিক্রম মায়ের দুধ। মায়ের দুধে অধিক অসম্পৃক্ত ফ্যাট ও অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়। বর্ধনশীল শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় সম্পূর্ণ প্রোটিন এর ভালো উৎস হচ্ছে মায়ের দুধ।
লেখক: অধ্যাপক, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রোটিন সচেতনতায়: বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (ইউএসএসইসি)।