নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘বেশি বেশি মাছ চাষ করি, বেকারত্ব দূর করি’ এ প্রতিপাদ্যে গতকাল (২৮ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২১ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো রবিবার (২৯ আগস্ট)। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি। এদিন দুপুরে তিনি সংসদ লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি’র সভাপতিত্বে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু এমপি। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেন,“মৎস্য খাত দেশের অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত। মেধাসম্পন্ন জাতি গঠন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, নারীর ক্ষমতায়ন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাত তাৎপর্য অবদান রেখে চলেছে। তাই মৎস্য খাতের উন্নয়নে আমাদের সবসময়ে সচেষ্ট হতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে মৎস্য খাত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য খাতের উন্নয়নকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করেন এবং জনগণকে পুষ্টিকর খাদ্য প্রদানের লক্ষ্য সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকার ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে। যার সুফল আমরা ইতোমধ্যে পেতে আরম্ভ করেছি। মৎস্য খাতকে সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।”
বিশেষ অতিথি কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন,“শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা, প্রাজ্ঞ ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে দেশে অভূতপূর্ব কৃষি উন্নয়ন হয়েছে। বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাছের উৎপাদনও বেড়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনে, মানুষের আয় বাড়ানোর জন্য মৎস্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর। সারা পৃথিবীতে মাছ রপ্তানি করতে পারলে আমাদের আয় অনেক বেড়ে যাবে।”
সভাপতির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি বলেন, “মৎস্য খাতের সাথে প্রায় ১ কোটি মানুষ সাথে জড়িত। মৎস্য খাতকে বেকারদের বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে তৈরি করে দিয়ে আমরা তাদের বেকারত্ব দূর করার ব্যবস্থা নিচ্ছি। তারা উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি হচ্ছে এবং তাদের উৎপাদিত মৎস্য ও মৎস্য জাতীয় পণ্য রপ্তানি করে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারছি। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে। আমরা প্রচলিত ও অপ্রচলিত মৎস্য সম্পদ সামনে আনতে চাই। সমুদ্রের উপরে, গভীরে, স্বল্প পানিতে যেখানে যে মৎস্য সম্পদ আছে সেটাকে আমরা পরিকল্পিতভাবে ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে আহরণ করবো। সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। সমুদ্রে আমাদের বিশাল সম্পদ রয়েছে। সেগুলো সংগ্রহের জন্য আমরা নানা প্রকল্প নিয়েছি। আমাদের অর্থনৈতিক যোগানে ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে মৎস্য খাত ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।”
মৎস্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের এবং এ খাতকে উৎসাহিত করার লক্ষ্য নিয়ে এ বছর জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে ৯টি ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে ২১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জাতীয় মৎস্য পদাক প্রদান করা হয়। যার মধ্যে ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণপদক এবং ১২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে রৌপ্য পদক প্রদান করা হয়।