মঙ্গলবার , নভেম্বর ১৯ ২০২৪

আখ চাষ লাভজনক করতে উৎপাদন ও মাড়াইয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার দরকার –কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক, এমপি বলেছেন, দেশে আখ উৎপাদন এবং আখ মাড়াই বা চিনিকল-দুই জায়গাতেই আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে দুই জায়গাতেই যদি উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বাড়ে, তাহলে আখ চাষ লাভজনক হবে। একইসাথে, আখের সাথে সাথী ফসল চাষ করতে হবে। বিএসআরআই উদ্ভাবিত উন্নত জাতের সাথে সাথী ফসল চাষ করলে আখচাষ লাভজনক হবে। কৃষকেরা আখ চাষে উদ্বুদ্ধ হবে।

আজ শুক্রবার (০৩ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএসআরআই) আয়োজিত ‘সুগারক্রপ চাষের আধুনিক প্রযুক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন। মন্ত্রী ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক, এমপি।

মন্ত্রী বলেন, দেশের সুগারমিলগুলো অনেক পুরনো। চিনি উৎপাদন প্রযুক্তিও আধুনিক নয়। অন্যদিকে মাঠে আখের উৎপাদনশীলতা কম। এতে চিনি উৎপাদনে খরচ অনেক বেশি হয়। বর্তমানে ১ কেজি চিনি উৎপাদন করতে যে খরচ পড়ে তা কমিয়ে আনা যায় কিনা যাচাই করা দরকার। প্রয়োজনে ‘আধুনিক প্রযুক্তির ১টি মডেল সুগারমিল’ পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপন করা যেতে পারে। এর সাথে মাঠে উন্নত জাতের আখের চাষ। তারপরও যদি দেখা যায়, চিনির উৎপাদন খরচ কমছে না ও আখ চাষ লাভজনক নয়; তাহলে দেশে চিনিকল বন্ধ করে দেয়া দরকার।

বিএসআরআইর মহাপরিচালক ড. আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে বিএসআরআইর পরিচালক সমজিৎ কুমার পাল, জামালপুর উপকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা খন্দকার মহিউল আলম, টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক আহসানুল বাসার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিএসআরআই জানায়, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (‌এফএও) সুপারিশ অনুযায়ী জনপ্রতি বছরে ১৩ কেজি চিনি/গুড় গ্রহণ করা প্রয়োজন। সে হিসাবে দেশে প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ টন চিনি/গুড় প্রয়োজন। বর্তমানে উৎপাদিত হয় প্রায় ৬ লাখ টন (০.৬৮ লাখ টন চিনি আর ৫.৩২ লাখ টন গুড়)। বছরে ঘাটতি ১৪ লাখ টন।

ঘাটতি পূরণের জন্য দরকার আরো বেশি গবেষণা ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তি সম্প্রসারণ। সেলক্ষ্যে বিএসআরআই কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে আখের ৪৮টি জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে চিবিয়ে খাওয়া ও রস পান উপযোগী ৩টি, বন্যা সহিষ্ণু ৯টি, জলাবদ্ধতা সহিষ্ণু ১০টি, খরা সহিষ্ণু ৭টি, লবণাক্ততা সহিষ্ণু ৬টি উল্লেখযোগ্য। আখের সাথে সাথীফসল হিসেবে আলু, পিঁয়াজ, রসুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ডাল, তেল, মশলা প্রভৃতি ফসল চাষের প্রযুক্তিও উদ্ভাবন করেছে সংস্থাটি।

এছাড়া, বিএসআরআইর মহাপরিচালক ড. আমজাদ জানান, যেসব স্থানে অন্যান্য ফসল কম চাষ হয় সেখানে চাষের উপযোগী জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। খরাপীড়িত, বন্যাপ্রবণ, জলাবদ্ধতা, চর, হাওড়, লবণাক্ত ও পাহাড়ি এলাকায় আখ চাষে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। চিবিয়ে খাওয়া ও রস পান উপযোগী জাতের আখ চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে।

This post has already been read 3304 times!

Check Also

পাবনায় রাতের আধারে ১০ লাখ টাকার পেঁয়ারা গাছ কেটে সাবাড়!

পাবনা সংবাদদাতা : পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার ধলেশ্বর গ্রামের আব্দুল মতিনের দুই বিঘা জমির পেয়ারা বাগানের …