সোমবার , ডিসেম্বর ২৩ ২০২৪

দেশীয় উদ্যোক্তাদের হতাশ করে ভারতে ফের সয়াবিন মিল রপ্তানির অনুমতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশীয় উদ্যোক্তাদের হতাশ করে ভারতে ফের সয়াবিন মিল রপ্তানির অনুমতি দিল সরকার। পোলট্রি, মৎস্য ও ডেইরি ফিড তৈরি অন্যতম উক্ত কাঁচামালটি দেশের বাজারেই যখন সরবরাহ ঘাটতি ও দামের উর্ধ্বমুখী বিরাজমান ঠিক তখনই ভারতে সেটি রপ্তানি শুরু হয়। শিল্পসংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদের ব্যাপক সমালোচনা ও ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ফিআব) এর দাবী সম্বলিত একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ সেপ্টেম্বর কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট ইস্যু বন্ধ করার মাধ্যমে সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধ হয়। কিন্তু নিজেদের অবস্থানে শেষ পর্যন্ত শক্তভাবে স্থির পারেনি মন্ত্রণালয়। মাত্র ৪ দিন পরেই (৯ সেপ্টেম্বর) পূর্বের অবস্থান থেকে সরে এসে সয়াবিন মিল পুনরায় রপ্তানির অফিস আদেশ জারি করে কৃষি মন্ত্রণালয়। এর ফলে সমগ্র সেক্টরে শুরু হয়েছে নয়া করে অস্থিরতা ও ক্ষোভ।

বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক (উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং) এর পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে (স্মারক নং-১২.০১.০০০০.৫০০.৯৯.১১৬.১৭/৪৭৬৩) জানানো হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গত ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উল্লেখিত পণ্য (সয়াবিন মিল) রপ্তানিতে কোন বাধা না থাকায় পুনরায় রপ্তানি কার্যক্রম যথাযথভাবে শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হলো।

এ সম্পর্কে ক্ষোভ জানিয়ে ইউকে বাংলা ফিড এর পরিচালক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, এহেন সিদ্ধান্তে প্রমান হয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল হয়তে আমাদের মনের ব্যাথা ও কস্ট অনুভব করছেন না। তাই আমাদের শিল্প সংশ্লিষ্ট নেতাদের সাথে উচিত ফিডের দাম আরো বাড়িয়ে আমাদের উৎপাদন খরচের সাথে সমন্বয় করা।

এজি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড -এর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. লুৎফর রহমান বলেন, সেক্টরের প্রতি আন্তরিক না থাকলে এ সমস্যার সমাধান হবে না। দেশের পোল্ট্রি, মৎস্য ও ডেইরী  শিল্পে অস্থিরতা এবং মূল্যবৃদ্ধি অস্বাভাবিক অবস্থা সম্পর্কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন ছাড়া সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের পোল্ট্রি খামারিরা মরে যাচ্ছে আর আমরা ভারতের কথা এখনো আমলে নিচ্ছি। ভ্যাকসিন রাজনীতি, পেঁয়াজ এর দাম নিয়ে খেলা এসবের দিকে তাকালেই আমাদের শিক্ষা হয়ে যাবার কথা। আফসোস।

পোলট্রি খামারি মো. মহিউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের পোল্ট্রি খামারিরা মরে যাচ্ছে আর আমরা ভারতের কথা এখনো আমলে নিচ্ছি। ভ্যাকসিন রাজনীতি, পেঁয়াজ এর দাম নিয়ে খেলা এসবের দিকে তাকালেই আমাদের শিক্ষা হয়ে যাবার কথা। আফসোস।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২২ আগস্ট বাংলাদেশ ফিড ইন্ডস্ট্রিজ এসোসিয়েশন (ফিআব) -এর পক্ষ থেকে পত্রের মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো বরাবর ভারতে সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়। এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং এর পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ (স্মারক নং-১২.০১.০০০০.৫০০.৯৯.১১৬.১১৭/৪৬৪৮) -এর মাধ্যমে উক্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর একদিন পরেই পোলট্রি ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া সভাপতি রমেশ চন্দ্র খত্রি স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাঠানো হয় ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বরাবর। এতে চলতি বছরের অন্তত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে সয়াবিন মিল সরবরাহের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়।

This post has already been read 4541 times!

Check Also

বৈষম্যমুক্ত অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতে কৃষিকে গুরুত্ব দিতে হবে -কৃষি উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন,  বৈষম্যমুক্ত অর্থনৈতিক উন্নয়ন …