মো. আব্দুল্লাহ-হিল-কাফি : বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার খোরপোষ কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রুপান্তরিত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের কৃষি আজ বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য একটি রোল মডেল হিসাবে বিবেচিত । নতুন নতুন জাত এবং ফসলের পাশাপাশি কাজুবাদাম এবং কফি এদেশে সূচনা হতে যাচ্ছে জোরেশোরে। ইতিমধ্যে এই ফসল দুটির দ্রুত বিস্তারের জন্য প্রকল্প নেয়া হয়েছে। কাজুবাদাম গাছ পাহাড়ি অঞ্চলে কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রমের সাথে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে সমতল জমিতে চাষ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের সর্বত্র চাষযোগ্য এই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফলটি খাবার উপযোগী ২টি অংশ থাকে, যার একটি কাজু এবং অপরটি বাদাম। পাকা কাজু আপেলের মতো অত্যন্ত রসালো এবং তা কাঁচা খাওয়া যায় এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের পর অত্যান্ত পুষ্টিকর বাদাম খাওয়া যায়।
বাংলাদেশে কাজুবাদামের আমদানি ২০১৮-১৯ সালে প্রায় ৫,৮০,০০০ কেজি এবং উৎপাদন মাত্র ১ হাজার টন। আমাদের দেশে এক কেজি প্রক্রিয়াজাত করা প্যাকেটকৃত বাদামের মূল্য প্রায় ১০০০ ১২০০ টাকা। সাধারণ কৃষকগণ প্রক্রিয়াজাত করতে না পারলেও শুধু বাদাম বিক্রি করে টন প্রতি প্রায় ৬০,০০০ থেকে ১,০০০০০ টাকা পেয়ে থাকেন। কাজুবাদাম উৎপাদন সংগ্রহ, শুকানো ও সংরক্ষণ কাজে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন এজন্য শ্রমিক হিসেবে নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে যা আমাদের দেশের জন্য ইতিবাচক হতে পারে।
কাজুবাদামে বিবিধ পুষ্টি পদার্থ যেমন তামা, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, দস্তা, ফসফরাস, আয়রন, সেলেনিয়াম, থায়ামিন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিপদার্থ ভিটামিন কে, ভিটামিন বি৬ এসব রয়েছে। এর ১ আউন্স বা প্রায় ২৮.৩ গ্রাম কাজু বাদাম থেকে মোটামুটিভাবে ১৫৭ গ্রাম ক্যালরি, ৫.১৭ গ্রাম প্রোটিন, ১২.৪৩ গ্রাম ফ্যাট, ৮.৫৬ গ্রাম শর্করা, ০.৯ গ্রাম ফাইবার, ১.৬৮ গ্রাম চিনি পাওয়া যায়।
নাটোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মাহমুদুল ফারুক বলেন, কাজু বাদাম এবং কফি গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে কম্বোডিয়া হতে এম-২৩ জাতের ৫০ কেজি বীজ ইতিমধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে। এই সেন্টারে এই বীজ ব্যবহার করে প্রায় ৫০০০টি চারা তৈরি করা হচ্ছে। বিভিন্ন হর্টিকালচার সেন্টারের ন্যায় এই বীজ হতে মাতৃগাছ তৈরি করা হবে এবং উৎপাদিত চারা নাটোর জেলার বিভিন্ন উপজেলার চাষীদের মাঝে সম্প্রসারণ করা হবে। এর ফলে এই নাটোর জেলার চাষীরা এই নতুন ফসল সম্পর্কে জানতে পারবে এবং ফসলটি দ্রুত সম্প্রসারিত হবে।