নিজস্ব প্রতিবেদক: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ কারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান। বাংলাদেশ এবং অষ্ট্রেলিয়ার মধ্যে ট্রেড এন্ড ইনভেষ্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক এ্যারেঞ্জমেন্ট (টিফা) স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশে অষ্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একশতটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত সেবা প্রদান সহজ করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রায় ১৭ কোটি মানুষের একটি বড় বাজার। অষ্টেলিয়ার বিনিয়োগকারীগণ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। বাণিজমন্ত্রী বলেন, অষ্ট্রেলিয়ার সাথে বাংলাদেশের বানিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশ অষ্ট্রেলিয়ায় ৮০৪.৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে ৫৯৬.৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। কোভিড-১৯ এর কারনে বিগত দু’বছর বাণিজ্য আশানুরুপ হয়নি। উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীগণ সফর বিনিময়ের মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে পারেন। বাংলাদেশ সরকার এজন্য প্রয়োজনীয় সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে। আশা করা যায়, এ টিফা স্বাক্ষরের ফলে উভয় দেশ উপকৃত হবে এবং বেসরকারি সেক্টরে আগ্রহ বাড়বে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ এবং অষ্ট্রেলিয়ার মধ্যে ট্রেড এন্ড ইনভেষ্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক এ্যারেঞ্জমেন্ট (টিফা) স্বাক্ষর করে বক্তব্য প্রদানের সময় এসব কথা বলেন। অষ্ট্রেলিয়ার পক্ষে ভার্চুয়ালি এতে বক্তব্য প্রদান করেন এবং স্বাক্ষর করেন অষ্ট্রেলিয়ার ট্রেড, ট্যুরিজম এন্ড ইনভেষ্টমেন্ট মিনিষ্টার ডান টিহান,এমপি।
অষ্ট্রেলিয়ার ট্রেড, ট্যুরিজম এন্ড ইনভেষ্টমেন্ট মিনিষ্টার ডান টিহান,এমপি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তি উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান। অষ্ট্রেলিয়ার সাথে বাংলাদেশের ঘনিষ্ট বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, টিফা স্বাক্ষরের মাধ্যমে উভয় দেশের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়বে। বাংলাদেশের তৈরী পোশাকের পাশাপাশি আইসিটি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্লাস্টিক ও শিক্ষাসহ বেশকিছু সম্ভাবনাময় সেক্টর রয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মুজিব জন্মমতবর্ষ উদযাপন করছে। অষ্ট্রেলিয়া পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে প্রথম এবং বিশে^র মধ্যে চতুর্থ স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশ। এজন্য বাংলাদেশ অষ্ট্রেলিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞ। চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সারা বিশে^রমতো বাংলাদেশও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এর মুখোমুখি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে কোভিড-১৯ মোকাবেলা করে যাচ্ছে। তিনি ভ্যাকসিন উৎপাদকারী দেশ হিসেবে অষ্ট্রেলিয়াকে মানবিক কারন বিবেচনায় বাংলাদেশে কোভিড ভ্যাকসিন অনুদান হিসেবে সরবরাহের অনুরোধ জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, অষ্ট্রেলিয়া বিগত ২০০৩ সালে থেকে বাংলাদেশকে ডিউটি ফ্রি এবং কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা প্রদান করছে, এজন্য বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ। আগামী ২০২৬ সালে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরও অষ্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে প্রদত্ত বাণিজ্য সুবিধা অব্যাগত রাখবে এবং বিশ^বাণিজ্য সংস্থায় এলডিসি গ্রুপের প্রস্তাবে সমর্থন থাকবে বলে আশা করছি। অষ্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের তৈরী পোশাকের বড় রপ্তানির বাজার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকায় নিযুক্ত অষ্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরেমাই ব্রুয়ার(ঔবৎবসু ইৎঁবৎ), ভার্চুয়ালিযুক্ত হয়ে বক্তব্য প্রদান করেন অষ্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ শফিউর রহমান। অনুষ্ঠানে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব(রপ্তানি) মো. হাফিজুর রহমান, অষ্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার নার্দিয়া সিম্পসন(ঘধৎফরধ ঝরসঢ়ংড়হ)সহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কমকর্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।