রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪

জলবায়ুবান্ধব এয়ারকুলার রপ্তানিতে সহায়তা করছে সরকার -পরিবেশমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ওজোনস্তর সুরক্ষায় বাংলাদেশে চালু হওয়া হাইড্রোক্লোরোফ্লোরোকার্বন ফেজ আউট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান স্টেজ-২ এ জলবায়ু বান্ধব বিকল্প প্রযুক্তিকে উৎসাহিত করা হয়েছে। উক্ত স্টেজ-২ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে উৎপাদিত এয়ারকুলার বিদেশে রপ্তানির দ্বার উন্মুক্ত হবে। এলক্ষ্যে সরকার রেফ্রিজারেশন ও এয়ারকন্ডিশনিং পণ্য উৎপাদকদের জন্য ট্যাক্স ও ভ্যাট প্রদানের ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ প্রদান করছে। সরকার রপ্তানি উন্নয়নের লক্ষ্যে তৈরী পোশাক শিল্পের পর অন্যতম সেক্টর হিসেবে রেফ্রিজারেশনকে এগিয়ে নিচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, রূপান্তরিত এসিগুলো বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হলে দেশীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রপ্তানির সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ‘মন্ট্রিল প্রটোকল মেনে ওজোনস্তর রক্ষা করি, নিরাপদ খাদ্য ও প্রতিষেধকের শীতল বিশ্ব গড়ি’ প্রতিপাদ্যে বিশ্ব ওজোন দিবস ২০২১ উদযাপন উপলক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ওজোনস্তর রক্ষায় গৃহীত ভিয়েনা কনভেনশন এবং মন্ট্রিল প্রটোকলের সফলতার এক গর্বিত অংশীদার। বর্তমান করোনা মোকাবিলায় খাদ্য ও ভ্যাকসিন সংরক্ষণে রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি যুগোপযোগি ও পরিবেশবান্ধব করার ক্ষেত্রে মন্ট্রিল প্রটোকলের ভূমিকা প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ মন্ট্রিল প্রটোকল বাস্তবায়নের সকল ধাপ যথাসময়ে সঠিকভাবে অতিক্রম করেছে এবং প্রটোকলের বাধ্যবাধকতা প্রতিপালন করছে। হাইড্রোক্লোরোফ্লোরোকার্বন এর ওজোনস্তর ক্ষয়ের সক্ষমতা অত্যন্ত কম হলেও এর বৈশ্বিক উষ্ণতা সৃষ্টির ক্ষমতা অত্যন্ত বেশি। তাই বর্তমানে এয়ারকন্ডিশনার, অগ্নি নির্বাপন ও ফোম সেক্টরে ব্যবহৃত এইচসিএফসি ফেজ আউট করার কাজ চলছে।

পরিবেশমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ২০১৬ সালে কিগালি সংশোধনীর মাধ্যমে শুধু ওজোনস্তর রক্ষাকল্পেই নয়, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়ও মন্ট্রিল প্রটোকল একইভাবে সাফল্য লাভ করবে। তিনি বলেন, মন্ট্রিল প্রটোকল অত্যন্ত সফলভাবে বাস্তবায়নের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ এবং ২০১৭ সালে জাতিসংঘ পরিবেশ কর্তৃক বাংলাদেশ প্রশংসিত ও পুরস্কৃত হয়েছে। এছাড়া ওজোনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্যের অবৈধ অনুপ্রবেশ ও আমদানি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশন, জাতিসংঘ পরিবেশ এবং ওজোন সেক্রেটারিয়েট ২০১৯ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর- কে পুরস্কৃত করে।  মন্ত্রী ওজোনস্তর রক্ষায়ও মন্ট্রিল প্রটোকলের আওতায় গৃহীত অবশিষ্ট কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইউএনডিপি-সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব(উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজী, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মো. মিজানুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) মো. মনিরুজ্জামান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন এবং ইউএনডিপি এর আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মু্খার্জী প্রমুখ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওডিএস প্রকল্পের পরিচালক মো. জিয়াউল হক। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে ইনোভেশন পুরস্কার ২০২০, জাতীয় শুদ্ধাচার পুরস্কার ২০২০ এবং পরিবেশ অলিম্পিয়াড পুরস্কার ২০২১ প্রদান করেন পরিবেশমন্ত্রী।

This post has already been read 3318 times!

Check Also

পরিবেশ সুরক্ষা ও পানি সাশ্রয়ে এডব্লিউডি সেচ পদ্ধতি

ড. এম আব্দুল মোমিন: ধান বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য। আউশ, আমন  বোরো মৌসুমে আমাদের দেশে ধান …