নিজস্ব প্রতিবেদক: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি বলেছেন, কঠোরভাবে ডিজিটাল বাণিজ্য মনিটরিং করা হবে। ই-কমার্স বন্ধ না করে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য একটি রেগুলারেটরি অথরিটি গঠন করা হবে। সারাবিশ্বে ই-কমার্স চালু রয়েছে। ইতোমধ্যে এ ব্যবসার সাথে লাখ লাখ মানুষ জড়িত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাণিজ্য পরিচালিত হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা হবে। এখান থেকে ই-কমার্সের জন্য রেজিষ্ট্রেশন প্রদান করা হবে । করোনাকালে ই-কমার্স সুনাম অর্জন করেছে, মানুষ উপকৃত হয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অসৎ ব্যবসা ও প্রতারনার কারণে সকল ই- কমার্স বন্ধ করে দেয়া ঠিক হবে না। যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের প্রতারনার সুযোগ না পায়, সে জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ই-কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা কার্যকর হবার পর প্রতারনা বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান যে গ্রাহকদের প্রতারিত করেছে, ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সে বিষয়ে আরও কি করা যায়, সরকার তা পরিক্ষী-নিরীক্ষা করে দেখছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ডিজিটাল কমার্স ব্যবসায় সাম্প্রতিক সমস্যা বিষয়ে পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্ব করে এসব কথা বলেন। সভায় উপস্থিত থেকে মতামত প্রদান করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, এমপি এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, এমপি।
সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি বলেছেন, ই-কমার্সে অনেক মানুষ প্রতারিত হবার অভিযোগ আছে। ই-কমার্স পরিচালনার জন্য একটি আইন তৈরী করা প্রয়োজন। দেশের কোন মানুষ যাতে ডিজিটাল বাণিজ্যে প্রতারিত না হন, সে জন্য পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। একজন্য একটি প্লাটফর্ম গঠন করা দরকার।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ ডিজিটাল হবার সাথে সাথে ই-কমার্স জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মানুষ যাতে প্রতারিত না হন, সেজন্য আইন করা দরকার। এ ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা যেতে পারে। গুটিকয়েক প্রতারনাকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স বন্ধ করে দেয়া ঠিক হবে না। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য প্রচার মাধ্যম বিশেষ করে সোস্যাাল মিডিয়াকে কাজে লাগাতে হবে। তাহলে প্রতারনার সুযোগ কমে আসবে। রেগুলেটরি অথরিটিকে অত্যাধুনিক করে গড়ে তুলতে হবে এবং মনিটরিং জোরদার করতে হবে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, এমপি বলেছেন, ই-কমার্স বন্ধ করে দেয়া ঠিক হবে না। আইনের আওতায় এতে ই-কমার্সকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। যাতে করে কেউ প্রতারনা করতে না পারে। মানুষ কম দামে পণ্য পেতে চাইবে, এটাই বাস্তবতা। ই-ব্যবসার জন্য জামানত রাখার ব্যবস্থা করা যায়। ব্যবসা যত বড় হবে জামানত তত বেশি হবে। মানুষের কাছে বিশ^াসযোগ্য হতে হবে। মানুষকে প্রতারনার বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। মানুষ যাতে টাকা ফেরত পায় সেজন্য সহযোগিতা করা প্রয়োজন।
এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ, পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজির আহমেদ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন মো. মফিজুল ইসলাম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রীনা পারভীন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব(রপ্তানি) মো. হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব(আইআইটি) এএইচএম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. মেজবাউল হকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কমকর্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।