নিজস্ব প্রতিবেদক: খামারিদের টিকিয়ে রাখার স্বার্থে দ্রুত ‘সয়াবিন মিল’ রপ্তানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)। এটি বন্ধ না হলে দেশের পোল্ট্রি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে খাদ্য দাম বেড়ে যাচ্ছে। এতে করে খামারিরা বড় ধরনের লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই সয়াবিন রপ্তানি দেশের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধ করুন, ডেইরী পোল্ট্রি ও মৎস্য শিল্প রক্ষা করুন’ শীর্ষক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আলী আজম রহমান শিবলী, সাধারণ সম্পাদক শাহ এমরান, অর্থ সম্পাদক জাফর আহমেদ পাটোয়ারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজিব উল্লাহ প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনের আগে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে সংগঠনটি
তিনি বলেন, সয়াবিন রপ্তানি দেশের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তের কারণে দেশের পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক লোকসানে পড়বে। ইতিমধ্যে গণমাধ্যম ‘সয়াবিন মিল রপ্তানি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার’ এমন খবরে স্থানীয় সয়াবিন মিল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সয়াবিন মিলের দাম কেজি প্রতি ১০-১২ টাকা বৃদ্ধি করেছে। সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। মাংসে মাছ ও মুরগির উৎপাদন বাড়লেও দাম করেনি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পোলট্টি ও গবাদিপশু উৎপাদনে অন্যতম প্রধান খরচ হলো খাদ্য খরচ। গবাদিপশুর উৎপাদনে ৬৫ দশমিক ৭০ ভাগ খরচই হলো খাদ্য খরচ। বাণিজ্যিক খাদ্য তৈরীতে প্রধান খাদ্য উপকরণ হচ্ছে সয়াবিন মিল/ সয়াবিন এক্সট্রাকশন, চালের গুড়া, গমের ভূষি, ডাল ভূষি ইত্যাদি। দেশের সয়াবিন মিল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সয়াবিন সিড শুল্কমুক্ত শূন্য ভাবে আমদানি করে সয়াবিন তৈল উৎপাদন করে এবং বাই প্রডাক্টস হিসেবে সয়াবিন মিল দেশীয় বাজারে বিক্রি করে।
বর্তমানে দেশীয় চাহিদার সয়াবিন মিল দেশীয় সয়াবিন তৈল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়াও ভারত, আমেরিকা, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। দেশে ‘সয়াবিন মিল’ এর মোট চাহিদা বছরে প্রায় ১৮ থেকে ২০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৭৫ থেকে ৮০ ভাগ দেশীয় সয়াবিন তৈল উৎপাদকারি প্রতিষ্ঠান হতে এবং অবশিষ্ট ২০ থেকে ২৫ ভাগ আমদানির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয় দেশের মানুষের স্বার্থে শূন্য শুল্ক সুবিধায় আনা সেই সয়াবিন সিড থেকে উৎপাদিত সয়াবিন মিলই এখন ৩ থেকে ৪টি সয়াবিন তৈল উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান মুনাফার স্বার্থে রপ্তানি করছে। অতীতে কখনও ভারতে সয়াবিন সিড কিংবা সয়াবিন মিল রপ্তানি হয় নি বরং ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রায় প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য পরিমান সয়াবিন মিল আমদানি করা হয়ে থাকে।
তিনি আরো বলেন, গত ঈদে ২৯ লাখ গবাদিপশু অবিক্রিত রয়ে গেছে। এগুলো জন্য আমরা হিমায়িত মহিষের মাংস আমদানি বন্ধ রাখতে। চট্টগ্রামে থেকে ডিস্ট্রিক্ট লাইফস্টাক অফিসারের সই করা কাগজে মাংস হিমায়িত মহিষের মাংস ঢুকছে।
গো-খাদ্যে দাম বাড়ার লাগাম টেনে ধরতে হবে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে খামার বন্ধ করা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। তাই অনতিবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ কামনা করছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, খামারিদের বেঁচে থাকার স্বার্থে ভারত থেকে হিমায়িত মহিষের মাংস আমদানি বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি খামারিদের বিদ্যুৎ বিল কৃষিখাতে রূপান্তর করার দাবি করেছেন।