নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ৪৬ বছর অতিক্রম করেছে। এই সময়ের মধ্যে দুদেশের পারস্পরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে চীন বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে আর্থিক, কারিগরিসহ নানা ভাবে সহায়তা করছে। সামনের দিনগুলোতে এ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।
মন্ত্রী বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ভার্চুয়ালি গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ চীন সিল্ক রোড ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সুদূর অতীতকাল থেকেই আজকের বাংলাদেশ ও প্রাচীন চীনের মধ্যে যোগাযোগ ও সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। তবে আধুনিক সময়ে যোগাযোগ ও সম্পর্ক স্থাপিত হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাধ্যমে। তিনি ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে চীন সফরে গিয়েছিলেন। চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইয়ের সাথে মতবিনিময় করেছিলেন যা দুদেশের সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
ড. রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চীন এখন বাংলাদেশের আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস দেশে পরিণত হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাপক বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতায় ভুগছে। এটিকে কমিয়ে আনতে দুদেশকে আরও আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, স্ট্র্যাটেজিক ইস্যু হিসেবে নিয়ে চীনকে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদেরকে দ্রুত মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে সহযোগিতার জন্য চীনকে অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
আলোচনা সভায় ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ চীন সিল্ক রোড ফোরামের চেয়ারম্যান ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ড. মঈন খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বক্তাগণ গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সাফল্য কামনা করেন। তারা বলেন, আজ থেকে ৭২ বছর আগে ১লা অক্টোবর ১৯৪৯ সালে মাও সেতুং গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা গৃহযুদ্ধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদেশি আগ্রাসন থেকে মুক্ত হয় দেশটি। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল ধনী-গরীবের বৈষম্য কমানো ও শোষণহীন সমাজব্যবস্থা কায়েম করা।
তারা বলেন, তারপর থেকে গত ৭২ বছরে চীন জাতীয় উন্নয়নে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। দারিদ্র্যমোচন ও ধনী-গরীবের বৈষম্য কমিয়ে সমতা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। মানুষের জীবনমানের উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধিত হয়েছে। চীন বিশ্বে দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। সারা বিশ্বের প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহকারীর শীর্ষে এখন চীন। প্রযুক্তির উন্নয়ন ও গবেষণায়ও সামনের কাতারে ওঠে এসেছে। তাদের এ উন্নয়ন সারা পৃথিবীর কাছে আজ উদাহরণ, মিরাকল।