মো. খোরশেদ আলম জুয়েল: ঝড়ে এক নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো সিরাজগঞ্জের কলেজ পড়ুয়াা পোলট্রি খামারির স্বপ্ন। তিলতিল করে গড়ে তোলা স্বপ্ন যেন তাসের ঘরের মতো হঠাৎই ভেঙ্গে গেলো!
নাম তার মো. জাহিদুল ইসলাম (জুয়েল)। সিরাজগঞ্জ জেলার গান্দাইল ইউনিয়ন কাজিপুর থানার বরইতলা গ্রামের সন্তান, পিতা- মো. শাহআলম এবং মাতা মোছাঃ জহুরা খাতুন। সিরাজগন্জ সরকারী কলেজের অনার্স (মার্কেটিং) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। অন্য পাঁচটা ছেলের মতো জুয়েলের স্বপ্ন পড়াশোনা মানেই চাকরি নয়। জুয়েল স্বপ্ন দেখছিল নিজেই কিছু করবে, হবে উদ্যোক্তা। কিন্তু বিধি বাম। এক মুহূর্তের ঝড়ে চুরমার হয়ে গেলো তার সবকিছু।
জুয়েল এগ্রিনিউজ২৪.কম কে বলেন, রবিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বৃষ্টি শুরু হয় সাথে খুব জোরে বাতাসে আমার খামার এর টিনের চাল,খুটি সব ভেঙ্গে পড়ে। আমার প্রায় সব মুরগী, চাল, খাচা, খুটির চাপ খেয়ে মারা যায়। এতে আমার প্রায় ১৭ লাখ টাকা চোখের সামনে নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। আমি কিছুই করতে পারলাম না।
‘আমি যখন এসএসসি পরীক্ষা শেষ করলাম তখন থেকে নিজের ইচ্ছা ছিল পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু একটা করব যেন নিজেও পরিবার নিয়ে চলতে পারি,অভাব এর সংসার বাবা মা তেমন সহযোগীতা করতে পারত না আমি জানতাম ও না এত টাকা লাগেতারপর ৫০০ লেয়ার মুরগী দিয়ে শুরু করি,’ -জানালেন জুয়েল।
‘আল্লাহ ভালোই দিন নিচ্ছিলো। উৎসাহ পেয়ে আমি পরে আবার ১০০০ (এক হাজার) বাচ্চা উঠাই। আল্লাহর রহমতে এই সেটও বেশ ভালোই চলছিল। হঠাৎ মুরগিতে একটা রোগ দেখা দেয় এবং এতেদ বেশ কিছু মুরগী মারা যায়। পরে আবার ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা শুরু করি এবং নিজের কিছুটাকা ও ধারদেনা করে ২২০০ (দুই হাজার দুইশত) বাচ্চা নতুন করে শেডে উঠাই। তারপর অনেক কষ্টে একদিন একদিন করে পালন করতে থাকি পাঁচ মাস। এক সময় মুরগী ডিম দেওয়া শুরু করে, মাত্র ২ মাস হলো ডিম দিচ্ছে, আর সেই সময়েই ঝড়ে আমার সবকিছু কেড়ে নিল’ বলেই ডুকরে কেঁদে উঠেন জুয়েল।
কাঁদতে কাঁদতে জুয়েল এ প্রতিবেদককে বলেন, এখন আমি খুব বিপদে পড়ে গেছি। ব্যাংকে অনেক টাকা ঋণ, আত্মীয়স্বজন পরিচিতদের কাছে ধারদেনা তো আছেই। বাবা-মাকে কিছুতেই শান্তনা দিতে পারছি না। আমি না খেতে পারছি, না ঘুমাতে পারছি। এখন আমি কি করব, আমি এখন বাঁচতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মৎসও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর কাছে আবেদন আমাকে একটু বাঁচান।