এগ্রিনিউজ২৪.কম ডেস্ক: প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাল বিপিআইসিসি। আজ মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কার্যালয়ে বিপিআইসিসি’র একটি প্রতিনিধিদল প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা’র সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং নতুন দায়িত্ব প্রাপ্তিতে তাঁকে অভিনন্দন জানান। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন- বাংলাদেশ শাখা’র (ওয়াপসা- বিবি) সভাপতি মসিউর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ফিআব) এর সভাপতি এহতেশাম বি. শাহজাহান, সাধারন সম্পাদক মো. আহসানুজ্জামান, বিপিআইসিসি’র সদস্য এবং ওয়াপসা- বিবি সহ-সভাপতি সিরাজুল হক, সাধারন সম্পাদক মো. মাহাবুব হাসান, সাবেক সাধারন সম্পাদক ডা. এম. আলী ইমাম, সহ-সম্পাদক মো. ফয়জুর রহমান (ফয়েজ), কোষাধ্যক্ষ ডা. বিপ্লব কুমার প্রামানিক, নির্বাহী সদস্য ডা. মো. আল আমীন ও মো. আসাদুজ্জামান মেজবাহ, বিপিআইসিসি’র সেক্রেটারি দেবাশিস নাগ এবং যোগাযোগ ও মিডিয়া উপদেষ্টা মো. সাজ্জাদ হোসেন।
শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর অনানুষ্ঠানিক আলাপচারিতায় পোল্ট্রি শিল্পের বিদ্যমান কিছু সমস্যা আলোচনায় উঠে আসে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বিএসটিআই মানসনদ বিষয়ক জটিলতা; মৎস্য ও পশুখাদ্যের মোড়কীকরণে পাট ব্যাগের বাধ্যতামূলক ব্যবহার; পোল্ট্রি খামার, হ্যাচারি ও ফিড মিল নিবন্ধন; আমদানিকৃত বেশ কিছু কাঁচামালের অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা; চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের দূর্ভোগ, এনওসি মিটিং, পোল্ট্রি ফেস্ট, ইত্যাদি।
মৎস্যখাদ্য ও পশুখাদ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যকার দ্বৈত নিয়ন্ত্রণের অবসান ঘটিয়ে মৎস্যখাদ্য ও পশুখাদ্যকে বিএসটিআই এর মানসনদ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি প্রদানে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আবেদন জানান বিপিআইসিসি সভাপতি মসিউর রহমান। বিপিআইসিসি সেক্রেটারি দেবাশিস নাগ বলেন, বিএসটিআই -এর স্থানীয় কার্যালয়গুলোর মাধ্যমে ফিড প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অহেতু হয়রানি ও জরিমানা করা হচ্ছে। এ ধরনের অপ্রত্যাশিত অভিযানের কারনে ফিড প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা বিরাজ করছে- যা পোল্ট্রি, মৎস্য ও ক্যাটল ফিডের স্বাভাবিক উৎপাদনকে ব্যাহত করছে। তাই সাশ্রয়ীমূল্যে ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের উৎপাদন অব্যাহত রাখার স্বার্থে- এ ধরনের হয়রানি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি।
মসিউর রহমান বলেন, নিরাপদ ডিম ও মুরগির মাংসের উৎপাদন এবং পোল্ট্রি খাতে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হলে খামার, হ্যাচারি ও ফিড মিলের শতভাগ নিবন্ধন অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, এ কাজের অংশ হিসেবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাথে বিপিআইসিসি সারাদেশের ব্রিডার ফার্ম, হ্যাচারি ও ফিড মিলের উপর একটি জরিপ পরিচালনা করছে। খুব শীঘ্রই এ জরিপের কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি। প্রতি মাসে অন্তত: দুইবার এনওসি মিটিং আয়োজনেরও অনুরোধ জানান জনাব মসিউর।
ফিআব সাধারণ সম্পাদক আহসানুজ্জামান বলেন, পোল্ট্রি ও মৎস্য খাদ্য মোড়কীকরণে পাটজাত ব্যাগের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বন্ধে অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যৌক্তিক মতামত পেশ করার পরও বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বিষয়কে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি বৈঠক অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
আহসানুজ্জামান আরো বলেন, আমদানিকৃত কাঁচামালের পরীক্ষা সম্পন্ন করতে এমনিতেই অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে তার উপর অপ্রয়োজনীয় টেস্টের কারনে সময় ও অর্থের অপচয় হচ্ছে।
নবনিযুক্ত মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা বলেন, পোল্ট্রি শিল্পের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর বিষয়ে তিনি অবগত আছেন। “মহাপরিচালক নিযুক্ত হওয়ার আগেও আমি পোল্ট্রি শিল্পের উন্নয়নে সচেষ্ট ছিলাম, যতদিন মহাপরিচালকের দায়িত্বে আছি সে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। প্রাণিসম্পদ খাতকে আমি একটি নিয়মতান্ত্রিক কাঠামোয় দাঁড় করিয়ে যেতে চাই” বলেন- নবনিযুক্ত মহাপরিচালক। নতুন সচিব জনাব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী নিজ কার্যালয়ে যোগদানের পর তাঁর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে একটি বৈঠক করে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর আশু সমাধান নিয়ে আলোচনা করার আশ্বাস দেন তিনি। অন্যদিকে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাথে বিপিআইসিসি ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো একযোগ কাজ করবে বলে জানান মসিউর রহমান।