ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : নারী পুরুষের সমতা অর্জনকে বেগবান করতে হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নারীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক হারে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। নারী শিক্ষার মান উন্নয়ন, সৃজনশীল কর্মমুখী এবং গবেষণায় নারীর অংশগ্রহণ ও অবদান প্রয়োজন। সর্বোপরি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হতে চাইলে আমাদের সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে।
বুধবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে গল্লামারী মৎস্যবীজ উৎপাদন খামার সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত জেন্ডার মূল ধারাকরণ বিষয়ক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যাণ্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় খুলনা জেলা মৎস্য অধিদপ্তর এর আয়োজন করে। এতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, মৎস্যসম্পদবিষয়ক সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি, মৎস্যজীবী সমিতির প্রতিনিধি অংশ নেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ হোসেন বলেন, দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় এলাকা মাছের আধার। পরিকল্পিতভাবে মাছ চাষ, সম্প্রসারণ, আহরণ ও সংরক্ষণ করতে পারলে উৎপাদন বৃদ্ধির এখনও বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আর মৎস্য চাষে নারীদের সম্পৃক্ততা অধিকহারে বাড়াতে পারলে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব।
উপাচার্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে নারীদের ক্ষমতায়ন ও আর্থ সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি নারী উন্নয়ন নীতিমালা করেছেন। সকল পেশায় এখন নারীদের অংশগ্রহণের হার বেড়েছে। সমাজ এগিয়ে যাচ্ছে। নারী পুরুষ একসাথে কাজ করার ফলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ থামাতে পারবে না। বিশ্বে এবং আঞ্চলিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছে।
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পালের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবু ছাইদ, খুলনা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক মোঃ আব্দুর রউফ, মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ উপপরিচালক মোঃ আব্দুল দায়াত ও সাবেক উপপরিচালক প্রফুল্ল কুমার সরকার। প্রকল্প সম্পর্কে উপস্থাপনা করেন সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রি।
বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় গৃহীত এ প্রকল্পে এ অঞ্চলের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোর, গোপালগঞ্জ জেলা আওতাভুক্ত। খুলনা সদর ছাড়া ৯টি উপজেলা অন্তভুর্ক্ত রয়েছে। প্রকল্পের বিভিন্ন কম্পোনেন্টে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এ প্রকল্পের আওতায় খুলনা ও সাতক্ষীরায় দু’টি পিসিআর ল্যাব, খুলনা ও গোপালগঞ্জে দু’টি ফিশ ডায়াগনস্টিক ল্যাব এবং বাগেরহাট ও ভোমরায় দু’টি কোয়ারেন্টাইন ল্যাব স্থাপন করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ৫শ’ হেক্টর খাল খনন করা হবে বলে জানান উপ প্রকল্প পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রি।