রবিবার , নভেম্বর ১৭ ২০২৪

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরীর বিএলআরআই পরিদর্শন

সাভার সংবাদদাতা: বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) পরিদর্শন করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। সোমবার (২২ নভেম্বর) তিনি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেন এবং বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণের সাথে মত বিনিময় সভায় অংশ নেন। এ সময় তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রাণিসম্পদ-২) এস এম ফেরদৌস আলম।

বিএলআরআই-এর মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন -এর সভাপতিত্বে ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরীর সাথে মত বিনিময় সভায় অংশ নেন ইনস্টিটিউটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাসরিন সুলতানা, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ, প্রকল্প পরিচালকগণ এবং শাখাপ্রধানগণ। সভাটি সঞ্চালনা করেন ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আজহারুল আমিন।

উপস্থিত বিজ্ঞানীবৃন্দ ও কর্মকর্তাগণের পরিচিতি পর্ব সমাপ্ত হবার পরে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. গৌতম কুমার দেব ইনস্টিটিউটের পরিচিতি, সক্ষমতা, অবকাঠামোসহ চলমান গবেষণা কার্যক্রমসমূহ এবং বিএলআরআই-এর সাফল্য ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিবেশনা উপস্থাপন করেন।

সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, আমাদের নিজস্ব এবং দেশি জাতসমূহের সংরক্ষণ বেশি জরুরি। এরপর এসব জাতের উন্নয়ন ঘটাতে হবে এবং সংকর জাতের উদ্ভাবন করতে হবে যাতে করে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। একই সাথে খামারির চাহিদা বিশ্লেষণ করে এবং সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনায় নিয়ে প্রচলিত জাতসমূহের উন্নয়নে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে রেজাল্ট-ওরিয়েন্টেড এবং অবজেকটিভ-ওরিয়েন্টেড প্রকল্প নিতে হবে। প্রকল্পের সময়সীমা এমন লক্ষ্যমাত্রার হতে হবে যাতে করে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের সাথে সাথে সেটি মাঠ পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়।

এ সময় তিনি জনগণের কাছে বিএলআরআই-কে আরো বেশি করে পরিচিত করার উদ্দেশ্যে উদ্ভাবিত ও উন্নয়নকৃত জাতসমূহের নামের সাথে বিএলআরআই-এর নাম সংযুক্ত করার ব্যাপারে পরামর্শ দেন। এছাড়াও বিএলআরআই-এর কার্যক্রম ও সাফল্য জনগনের কাছে পৌঁছে দিতে গণমাধ্যমে প্রচারের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।

মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সচিব মহোদয় যেভাবে খামার এবং ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানতে চেয়েছেন, যেভাবে প্রশ্ন করেছেন তা থেকেই প্রমাণ হয় তিনি অনেক জ্ঞানী একজন ব্যক্তি, অনেক বড় মাপের একজন বিজ্ঞানী। এটি আমাদের জন্য একটি বিরাট সৌভাগ্য যে তাঁর মত এত বড় একজন বিজ্ঞানীকে আমাদের মাঝে পেয়েছি। তাঁর দিক-নির্দেশনায় বিএলআরআই দেশীয় খামারিদের আগ্রহ ও প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে দেশীয় জাতসমূহের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে গবেষণায় নিয়োজিত হবে এবং দেশের নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে ব্রতী হবে। একই সাথে নিরাপদ মাংস দেশের বাইরে রপ্তানি করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্যেও বিএলআরআই কাজ করবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, সচিব মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় দুটি প্রতিষ্ঠান পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে দেশের প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাবে। উভয় প্রতিষ্ঠান মিলে গবেষণার মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরতে কাজ করবে  এবং খামারির চাহিদা ও সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে নতুন নতুন উন্নত প্রযুক্তি মাঠে নিয়ে যাওয়া হবে।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৩ টায় ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বিএলআরআই-এ পৌঁছান। এরপর তিনি বিএলআরআই-এর বিভিন্ন গবেষণা খামার ঘুরে দেখেন এবং এসব খামারের পরিচালনা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। এসময় তিনি খামার ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণের জন্য বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। মহপরিচালক উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এ সময় সচিব এবং অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে গবেষণা খামার পরিদর্শন করেন।

মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠানের শেষে ক্রেস্ট দিয়ে সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরীকে ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। প্রসঙ্গত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরে ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী এবারই প্রথমবারের মত বিএলআরআই পরিদর্শনে আসেন।

This post has already been read 2881 times!

Check Also

বারি উদ্ভাবিত আনারসের লাড্ডু মেটাবে পুষ্টি চাহিদা

কৃষিবিদ ইফরান আল রাফি : বাংলাদেশের প্রধান ফলগুলোর মধ্যে পুষ্টিগুন সম্পন্ন আনারস অন্যতম। উৎপাদন মৌসুমে …