চারাপোড়া বা ঝলসানো ছত্রাকজনিত রোগ । রোগটি বোরো মৌসুমে বীজতলায় উৎপাদিত চারা বা যান্ত্রিক চাষাবাদের জন্য তৈরি ট্রেতে বেশি ক্ষতি করে।
রোগের গুরুত্ব
রোগটির ফলে বোরো মৌসুমে বীজতলায় শতকরা ২৫-৩০ ভাগ এবং ট্রেতে শতকরা ৭০-৮০ ভাগ ধানের চারা নষ্ট হয়। আক্রান্ত বীজতলা বা ট্রেতে ধানের চারার বৃদ্ধি অনিয়মিত হয় যা বোরো মৌসুমে যান্ত্রিক চাষাবাদের জন্য বড় বাধা ।
রোগের কারণ
এ রোগটি Fusarium spp. এবং Sclerotium rolfsii নামক ছত্রাক দ্বারা হয়।
রোগ চেনার উপায়
বীজ অঙ্কুরিত হবার আগেই আক্রান্ত বীজ পচে যেতে পারে অথবা অঙ্কুরিত হবার পর আক্রান্ত চারা আন্তে আন্তে শুকিয়ে মরে যেতে পারে যা পরবর্তীতে পুড়ে যাবার মত মনে হয়। শিকড় ও চারার গোড়ার দিকটা কালচে রঙের হয় এবং অনেক সময় সাদা ছত্রাক কান্ড চারার গোড়াতে দেখা যায়। রোগাক্রান্ত চারা দূর থেকে হলদেটে দেখায় এবং পাতা কুঁচকে যাওয়ার মত মনে হয়।
কখন এবং কোন অবস্থায় রোগ বেশি হয়
এ রোগ সাধারনত উচু জমিতে ও শুকনা বা কম ভেজা মাটিতে বেশি হয়। বোরো মৌসুমে বীজতলায় ও ট্রেতে উৎপাদিত চারাতে এবং মাঝে মাঝে আউশ মৌসুমে এ রোগ হয়ে থাকে। মাটি, আক্রান্ত নাড়া, আগাছা ও পচা আবর্জনা এ রোগ বিস্তারের জন্য দায়ী ।
রোগ দমনে করণীয়
রোগ হওয়ার আগে করণীয়.
- প্রতি লিটার পানিতে ২-৩ মিলি এজোক্সিসট্রবিন অথবা পাইরাক্রোসট্রবিন মিশিয়ে ১৮-২০ ঘন্টা বীজ শোধন করা।
- বীজ লাগানোর আগে সম্ভব হলে ধানের কুড়া বীজতলার মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া।
- বেশি শীতের মধ্যে বীজতলায় বীজ বপন না করা।
- শৈত্যপ্রবাহ চলাকালীন এবং রাতে বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা।
রোগ হওয়ার পরে করণীয়
- রোগ দেখা দিলে জমি বা বীজতলায় পানি ধরে রাখা ।
- এজোক্সিস্ট্রবিন অথবা পাইরাক্রোস্ট্রবিন ২ মিলি/ লিটার পানিতে মিশিয়ে বীজতলা/ট্রেতে স্প্রে করা।
সূত্র: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট।