নিজস্ব প্রতিবেদক: মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক দেশের প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বুধবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রাঙ্গণে অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) এর আওতায় দেশের প্রান্তিক খামারিদের দোরগোড়ায় আধুনিক ও জরুরি প্রাণিচিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুর রহিম। মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিকের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের চীফ টেকনিক্যাল কোঅর্ডিনেটর ড. মো. গোলাম রব্বানী।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, মো. তৌফিকুল আরিফ ও এস এম ফেরদৌস আলম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপপরিচালক শেফাউল করিম, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এসিআই এগ্রোবিজনেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ড. এফ এইচ আনসারী প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, “আগে প্রাণীকে নিয়ে যেতে হতো ডাক্তারের কাছে, এখন ডাক্তার চলে যাবে প্রাণীর কাছে। শেখ হাসিনার উপহার, প্রাণীর কাছে ডাক্তার। দেশের ইতিহাসে ইতিহাসে মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতায়। তিনি বিশ্বাস করেন সকল জীবের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, “প্রাণীর তাৎক্ষণিক চিকিৎসায় আমরা প্রান্তিক খামারিদের কাছে ভেটেরিনারি ক্লিনিক পৌঁছে দিচ্ছি। প্রথম পর্যায়ে আজ ৬১টি উপজেলায় ৬১ টি ক্লিনিক বিতরণ করা হচ্ছে। পরবর্তী ধাপে আরো ১৮০টি ভেটেরিনারি ক্লিনিক বিতরণ করা হবে। শেষ ধাপে আরও ১১৯টি ক্লিনিক বিতরণ করা হবে। ৬১টি জেলায় মোট ৩৬০টি মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক বিতরণ করা হবে।পর্যায়ক্রমে যেখানে পশুপাখির চিকিৎসা প্রয়োজন সেখানে আমরা মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক আমরা পৌঁছে দেবো। পশুপাখির চিকিৎসায় সব আধুনিক মেডিকেল সুবিধা এ ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকে থাকবে”।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, “প্রাণী স্বাস্থ্যের সাথে মানুষের স্বাস্থ্য সম্পৃক্ত। পশুপাখির অসুস্থতা থেকে জীবাণু আমাদের অজান্তে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। সেজন্য ‘ওয়ান হেলথ’ এর কথা ভাবলে পশু-পাখিকে অসুস্থ রেখে আমরা ভালো থাকলে হবে না। আবার পশুপাখিকে ভালো রেখে আমরা খারাপ থাকলেও হবে না। কারণ, অনেক পশুপাখিই মানুষের সংস্পর্শে আসে, মানুষের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। এজন্য প্রাণীদের ভালো রাখ রাষ্ট্রের দায়িত্ব, সরকারের দায়িত্ব। আমরা চাই নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটাতে। সে কারণে, আমরা প্রাণী চিকিৎসায় মোবাইল ফোনের ক্লিনিকের উদ্যোগ নিয়েছি। এ উদ্যোগের কারণে প্রাণিসম্পদ খাতে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে”।
“আমাদের অর্থনীতির চাকা গতিশীল করা,বেকারত্ব দূর করা, উদ্যোক্তা তৈরি করা এবং পুষ্টি-আমিষের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ খাত আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। এ গুরুত্বপূর্ণ খাতটি একসময় নানাভাবে অবহেলিত ছিল। বর্তমান সরকার এ খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন এ খাতকে এগিয়ে নিতে হবে জাতিকে এগিয়ে নেয়ার সাথে তাল মিলিয়ে”।-যোগ করেন মন্ত্রী।