নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পোলট্রি খামারীদের জন্য ভয়ানক দুটো রোগের নাম গামবোরো ও রানীক্ষেত, যার কারণে তারা প্রচুর পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। দেশের বাজারে প্রচলিত ভ্যাকসিনগুলো অনেক সময় রোগগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পুরোপুরি কার্যকর হয় না। খামারিদের এ সমস্যার কথা চিন্তা করে দেশের এনিমেল হেলথ সেক্টরের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি এসিআই এনিমেল হেলথ বাজারে নিয়ে এসেছে বিশ্বখ্যাত সিভা (CEVA) কোম্পানির তিনটি ভ্যাকসিন যা বাণিজ্যিক লেয়ার খামারিদের দুঃশ্চিন্তা অনেকখানি দূর করবে বলে দাবী করা হয়েছে।
CEVAC® TRANSMUNE IBD, VECTORMUNE® ND এবং CEVAC IBIRD® নামে তৃতীয় প্রজন্মের রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ ভ্যাকসিন তিনটি ইতিমধ্যে খামারিদের মাঝে ব্যাপক আস্থা তৈরি করেছে বলে জানা যায়। খামারিদের পোলট্রি খামার, রোগবালাই ও ভ্যাকসিন তিনটি সম্পর্কে এসিআই এনিমেল হেলথ ও সিভ্যাক এর যৌথ উদ্যোগে মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জয়পুরহাটের স্বপ্নছোঁয়া কমিউনিটি সেন্টারে দিনব্যাপি এক কারিগরি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। “Technical Session on Innovative Vaccine Technology”-শীর্ষক সেমিনারে সোনালী প্যারেন্ট, বাণিজ্যিক লেয়ার ও সোনালী খামারি মিলে প্রায় ৮০ জন খামারী উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে Ceva Asia Pacific-এর বিজনেস ম্যানেজার ডা. সাইফুল ইসলাম, Ceva -এর টেকনিক্যাল ম্যানেজার ডা. বিচিত্র বর্মণ, এসিআই এনিম্যল হেলথ্-এর বিজনেস ম্যানেজার (ভ্যাকসিন) ডা. মো. মইনুল রানীক্ষেত ও গামবোরো রোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং উল্লেখিত ভ্যাকসিনগুলো নানা কারিগরী দিক তুলে ধরেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এসিআই এনিম্যল হেলথ্-এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার (ইনস্টিটিউশনাল সেলস্) মো: মাহফুজুর রহমান, ডিজিএম মো. রফিক আহমেদ, জোনাল সেলস্ ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলম ছাড়াও কোম্পানির মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ।
ভ্যাকসিন দুটো সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. মো. মইনুল ইসলাম বলেন, প্রচলিত যে লাইভ ভ্যাকসিনগুলো আছে এমডিএ’র জন্য সেগুলো নিউট্রিলাইজ হয়ে যেতো কিন্তু এই ভ্যাকসিনগুলো বাইপাস হিসেবে কাজ করবে; যে কারণে ফিল্ডে এমডিএ’র টাইটার লেভেল যাই থাকুক এটি কিন্তু একাকী কাজ করতে পারবে এবং এটি সবচে লেটেস্ট টেকনোলজী। খামারিরা প্রচলিত লাইভ ভ্যাকসিনগুলো মুরগিতে দেয়ার পরও দেখা যেতো গামবোরো ও রানীক্ষেত রোগ হতো; কিন্তু নতু্ন এই ভ্যাকসিনগুলোতে সেই সমস্যাগুলো আর থাকবে না।
“অন্যদিকে প্রচলিত লাইভ ভ্যাকসিনগুলো পানির মাধ্যমে দেয়া হতো; কিন্তু উল্লেখিত ভ্যাকসিনগুলো ইনজেকশনের মাধ্যমে দেয়া হবে। এর ফলে খামারে থাকা বার্ডের (মুরগির) মর্টালিটি চেক করা সহজ হবে, তাদের আউটব্রেকের সংখ্যা কমবে, এফসিআরও ভালো থাকবে- সবমিলিয়ে তারা লাভবান হবেন। এছাড়াও নতুন এসব ভ্যাকসিনগুলো এতদিন শুধুমাত্র হ্যাচারিগুলোতে ব্যবহার হতো, কিন্তু বর্তমানে আমরা প্রান্তিক খামারিদের মাঝেও ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি ”-যোগ করেন ডা. মইনুল।