সোমবার , নভেম্বর ১৮ ২০২৪

২ বছরে প্রায় ১১ লাখ উন্নতমানের বাছুর তৈরি করেছে এসিআই -ড. আনসারী

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আয়োজিত “চিটাগং ক্যাটল এক্সপো-২০২২” -এর বিশেষ অতিথি এসিআই এগ্রিবিজনেস -এর প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনাসারীর সাথে আয়োজক কমিটিকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন চট্টগ্রাম ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন সভাপতি রাকিবুর রহমান (টুটুল)।

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: গত ২ বছরে প্রায় ১১ লাখ উন্নতমানের বাছুর তৈরি করেছে এসিআই বলে মন্তব্য করেছেন এসিআই এগ্রিবিজনেস -এর প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনাসারী। তিনি বলেন, আমাদের রয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম আধুনিক সুযোগ সুবিদা সম্পূর্ণ ও বিজ্ঞানসম্মত এনিমেল জেনেটিকস বুল স্টেশন ও গবেষণাগার। এই গবেষণাগার থেকে আমরা উন্নত মানের সিমেন তৈরি করি, যার ফার্টিলিটি রেট ৮০ শতাংশের বেশি।

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আয়োজিত “চিটাগং ক্যাটল এক্সপো-২০২২” -এ বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখছেন এসিআই এগ্রিবিজনেস -এর প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনাসারী

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আয়োজিত “চিটাগং ক্যাটল এক্সপো-২০২২” -এ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবদুস সবুর লিটন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, নাহার এগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও  চট্টগ্রাম ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন সভাপতি রাকিবুর রহমান (টুটুল)।  “অচিরেই আমরা সেক্সড সিমেন এবং এমব্রায়ো ট্রাসফারের মতো উন্নত টেকনোলজি বাংলাদেশে পরিচিত করবো। যা কি না প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে এবং দেশের প্রাণিজ্ব আমিষ সরবরাহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালিন করবে”- যোগ করেন ড. আনসারী।

এসিআই এনিমেল হেলথ পরিবার।

ড. আনসারী বলেন, দেশের প্রাণিসম্পদ খাতে মিডিয়ার অনুপ্রবেশ আরো বাড়াতে হবে। কারণ, দেশের প্রিন্ট, ইলেক্ট্রোনিক্স ও অনলাইন মিডিয়া প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণে ও নিত্যনতুন প্রযুক্তির অভিযোজন ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমার বিশ্বাস খামারীদের জ্ঞান বৃদ্দি ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরীতে অধিক বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা আমাদের মিডিয়া আরো ব্যাপক পরিসরে সম্প্রচার করবে, বলেন ড. আনসারী।

তিনি বলেন, বিগত ১০ বছরে দেশে দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণ বেড়েছে পাঁচ গুণ, মাংস গ্রহণ বেড়েছে ছয় গুণ, ডিম গ্রহণ বেড়েছে তিন গুণ। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্দোক্তা, প্রান্তিক খামারী, স্টেকহোল্ডার, বিজ্ঞানীদের যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আজ মাছ, মাংস, ডিম উৎপাদনে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে আমাদের দেশের বিজ্ঞানী, খামারী ও প্রাইভেট সেক্টর অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

ড. আনসারী বলেন, আমাদের উন্নত ব্রীড, উন্নত খাবার ও খামার ব্যবস্থাপনার দিকে নিবিড়ভাবে নজর দিতে হবে। ক্যাটেলের পাশাপাশি মাছ ও মুরগীর এফসিআর উন্নয়নের দিকেও নজর দিতে হবে। কারণ, আমাদের দেশে ১২ কেজি খাদ্য খেয়ে ১ কেজি গরুর মাংস উৎপাদন করা যায়, অথচ বেলজিয়ান ব্লু প্রজাতির ক্যাটেল থেকে ৪-৫ কেজি খাদ্য খেয়ে ১ কেজি মাংস উৎপাদন করে এবং দুই বছরে একটি ক্যাটেল থেকে ২.৫ টন মাংস পাওয়া যায়।

চট্টগ্রাম ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন সভাপতি রাকিবুর রহমান (টুটুল) সম্পর্কে তিনি বলেন, টুটুল একজন ইয়ং, ডাইনামিক এবং অত্যন্ত সফল উদ্ভোক্তা। তার নিত্যনতুন প্রযুক্তি নির্ভর এপ্রোচ এবং তার অর্জিত জ্ঞান তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য পাথেয় স্বরুপ। আমি তার মায়ের বক্তব্য শুনেছি, কৃষক ও খামারিদের নিয়ে তার স্বপ্ন অত্যন্ত সুদূর প্রাসারি, যার কারণে আজকে নাহার এগ্রো এতটা সফল। তার সুযোগ্য পুত্র বাবার ব্যবসার সাথে কতটা নিবিড় ভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে তা দেখেও আমি অনেক অভিভূত হয়েছি। একটি পরিবার কতটা ডেডিকেশন, প্যাশন এবং পজেটিভ এপ্রোজ থাকলে প্রাণিসম্পদ সেক্টরে এত দ্রুত উজ্জ্বল নক্ষত্রে পরিনত হয়, নাহার এগ্রো তার একটি আদর্শ উদাহরণ।

এসিআই এগ্রিবিজনেস এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন,  আমাদের মিশন হলো- জ্ঞান, দক্ষতা ও টেকনোলজির দায়িত্বশীল প্রয়োগের মাধ্যমে খামারীদের জীবন মান উন্নয়ন করা। এসিআই এগ্রিবিজনেস দেশের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য সরকারের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। আমরা প্রায় কম্পিলিট ভ্যালু চেইন নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশে আমরাই খামারীদের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে নিত্যনতুন প্রযুক্তি ও সমাধান পরিচিত করছি। উদ্ভাবনী প্রযুক্তি হিসাবে রোবটিক ভ্যাকসিনেশন, ডেইরী ভ্যাকসিনেশন, এনিমেল ফার্মাসিউটিক্যালস, উন্নত বাছুরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, প্রজনন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, পশু জেনেটিক্স, ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি এবং ক্লিনিক এর সব সার্ভিস দিয়ে থাকি।

চট্টগ্রাম বিভাগের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, প্রান্তিক খামারী, স্টেকহোলডার, বিজ্ঞানীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, উদ্যোগ ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে বিগত সময়ে প্রাণিসম্পদ সেক্টরের ব্যাপ্তি ও সফলতা এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে, উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, খামারিদের সাথে অনলাইন প্লাটফর্ম, যেমন- খামারি, রুপালি, সোনালি এর মাধ্যমে সম্প্রসারণেরও কাজ করছি। ফরওয়ার্ড লিংকেজ এর মাধ্যমে খামারিদের উৎপাদিত পণ্য বিপণনের ব্যবস্থা করছি এবং আরো ব্যাপকভাবে এর প্রসারের চিন্তা-ভাবনা করছি।

উল্লেখ্য, “চিটাগং ক্যাটল এক্সপো’র প্লাটিনাম স্পন্সর ছিল এসিআিই এনিমেল হেলথ লিমিটেড। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এসিআই এনিমেল হেলথ -এর ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোহাম্মদ শাহীন শাহ, সেলস ডিরেক্টর ডা. আমজাদ হোসেন, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার এসিআই এনিমেল জেনেটিক্স -এর বিজনেস ম্যানেজার মোজাফফর উদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজুর রহমান, এসিআই ক্যাটেল হেলথ কেয়ার পোর্টফোলিও হেড ডা. মো. ফয়সাল ফেরদৌস সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও মাঠ পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 5262 times!

Check Also

মহিষের উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার

সাভার সংবাদদাতা: মহিষের উৎপাদন বাড়ানো আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, একসময় …