ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : সরকার কৃষকদের সেচ সুবিধার্থে খুলনাঞ্চলে ৬শ’ কিলোমিটার খাল খনন ও পুন:খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় পানি ও মাটির লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণের অংশ হিসেবে সমন্বিত প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে হাজার হাজার কৃষক উপকৃত হবেন এবং দক্ষিণাঞ্চলে কৃষি বিপ্লব ঘটবে।
এদিকে শুষ্ক মৌসুমে বটিয়াঘাটা উপজেলার ভরাখালি খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় সহস্রাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি না পেয়ে তারা জমিতে সেচও দিতে পারছে না। ফলে জমিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আশির দশকে ফারাক্কা বাঁধের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদ-নদী ও খালের নাব্যতা সংকটে পড়ে যৌবন হারিয়ে ফেলে। এ কারণে কৃষক বাঁচাতে ২০২১ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ‘উপকূলীয় এলাকায় পানি ও মাটির লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণের সমন্বিত প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন প্রধান কার্যালয় প্রেরণ করেন। সেখান থেকে এই প্রকল্প কৃষি মন্ত্রণালয় প্রেরণ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে এর সম্ভব্যতা যাচাই বাছাই করার বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আগামী জুন মাসে সম্ভব্যতা যাছাই বাছাইয়ের কাজ শেষ হলেই খাল খনন ও পুন:খননের কাজ শুরু হবে। খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা এই তিন জেলায় ৬শ’ কিলোমিটার খাল খনন ও পুন:খনন করা হলে হাজার হাজার হেক্টর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আসবে।
এ বিষয়ে গোপলগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প (এসআরডিআই অংগ) প্রকল্প পরিচালক অমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে খাল খনন করা হলে শুকনো মৌসুমে কৃষক উপকৃত হবে। ফসল চাষের জন্য পানি পাবেন। এসআরডিআই এর গবেষণার মাধ্যমে লবাণাক্ত মাটিতে কোন ফসল কোন জাত চাষ উপযোগী তা নির্ণয়ে কৃষক সঠিক ফসল চাষ করতে পারবে এবং খাল খনন করা হলে এই এলাকায় কৃষি বিপ্লব ঘটবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে, বািটয়াঘাটা উপজেলার দেবীতলা ভরাখালি খালের পানির ওপর নির্ভরশীল এলাকার সহস্রাধিক কৃষক। তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এই খালের পানিই একমাত্র সেচের উৎস। এই ভরাখালী খালের আশপাশ জুড়ে ১২শ’ একর জমিতে বোরো ধান, তরমুজ ও ভুট্টার চাষ করা হয়েছে। পানির অভাবে সেচ বন্ধ হয়ে গেছে। কৃষক চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বেশী ক্ষতির মুখে পড়ছেন তরমুজ চাষিরা।