নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন এখন একটি মাত্রায় পৌছেছে। খাদ্য কখনো অনিরাপদ হয় না। একটি নিরাপদ খাদ্যও ব্যবহার সঠিক না হলে তা অনিরাপদ হয়ে যেতে পারে। এটা হতে পারে ব্যক্তির ঘর থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেও। এ জন্য আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। সরকারের পাশাপাশি আমাদের এ খাতকে এগিয়ে নিতে সমন্বিত ভাবে এগিয়ে যেতে হবে। সুখের বিষয় হচ্ছে, আমাদের সরকার এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট উদারতার পরিচয়ে দিয়ে আমাদের কাজ করার সুযোগ করে দিচ্ছে। এ কারণে, বর্তমানে দেশের খাদ্য উৎপাদনের খাতে ৯০ শতাংশ অবদান এখন বেসরকারি খাতের।
শুক্রবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল রয়েল প্যালেস কনফারেন্স হলে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সংগঠন ফুড সেফটি মুভমেন্ট আয়োজিত ‘মাহে রমজানে নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল’ -এ প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন এসিআই এগ্রিবিজনেস প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী। ফুড সেফটি মুভমেন্টের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দৈনিক সকালের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক মো. রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের মহাসচিব মো. ইউনুছ আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম।
অন্যানের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- দৈনিক সকালের সময়ের সম্পাদক ও প্রকাশক মো. নূর হাকিম, দৈনিক কালের ছবির সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম শিশির, বিসেফ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী রানা, হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ডের কান্ট্রি ডিরেক্টর আতাউর রহমান মিটন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সিওর নির্বাহী পরিচালক মো. সামছুল আলম, আলোকিত নারী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মেহেরুননিছা মেহেরীন, বিডি ফাইন্যান্স সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএইচএম নাজমুল হাসান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফুড সেফটি মুভমেন্টের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার তাপস পাল।
কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ খাদ্যই দেশের পরবর্তী সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা। এ খাত থেকে বছরে গার্মেন্টস শিল্পের চেয়েও বহুগুণ বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব । নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সংগঠন ফুড সেফটি মুভমেন্ট আয়োজিত ‘মাহে রমজানে নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কৃষি সচিব বলেন, বলেন, ভিয়েতনাম প্রক্রিয়াজাত খাদ্য রপ্তানী করে বছরে ৪২হাজার বিলিয়ন ডলার আয় করছে। যা আমাদের গার্মেন্টস রপ্তানীর চেয়েও বেশী। আমাদের সে সুযোগ কাজে লাগানোই এখন সময়ের দাবি।
প্রধান অতিথি বলেন, বাংলাদেশের খাদ্যসামগ্রীতে ভেজাল বিষয়ে অনেকের মাঝেই এক ধরনের উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা যায়। কিন্তু সুখের বিষয় হচ্ছে এ মাত্রা দিন দিন কমছে। এবং বাস্তব কারণেই তা কমে যাচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের কৃষি এখন বহুমুখীকরণ হতে শুরু করেছে। আমাদের খাদ্য উৎপাদনকে এখন শুধু খাদ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে না, এ খাতে প্রক্রিয়াজাতকরণের ওপর সরকার অধিক জোর দিচ্ছে। সরকার এজন্য সাধ্যের বাইরে গিয়েও কৃষিকে প্রচুর ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে। কারণ আমাদের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। রপ্তানি বাণিজ্যে নিরাপদ খাদ্য যোগ হলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ইতিহাসে এ খাত মাইলফলক হয়ে উঠবে। আর তা করতে হলে উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারজাতকরণের সব পর্যায়ে নিরাপত্তা বা নিরাপদতা রক্ষার কোনো বিকল্প নেই। সে কারণেই খাদ্য নিরাপত্তার ইস্যুতে সরকার অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আইন ও বিধি প্রণয়নের পাশপাশি তা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই এ ব্যাপারে একটি অ্যাকশন প্ল্যান তেরি করে তা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করেছি।
দৈনিক সকালের সময়ের সম্পাদক মো. নুর হাকিম বলেন, নিরাপদ খাদ্য আন্দালন সময়ের একটি দাবি। এ কাজের সাথে জড়িত সকলকে আমার শুভেচ্ছা। জাতির পিতা এ দেশটাকে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। তার স্বপ্নের পথেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। সরকারি বা বেসরকারি যে কোনো উদ্যোগের ভালো সংবাদ প্রচারের সাথে সকালের সময় সব সময় থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে রবিউল ইসলাম বলেন, সারাদেশে এ আন্দোলনটি ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সরকারের নীতি-পলিসির সুযোগ যাতে সাধারণ মানুষ পেতে পারে, সে বিষয়ে কাজ করবে ফুড সেফটি মুভমেন্ট। এ কাজে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।