নিজস্ব প্রতিবেদক: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি বলেছেন, দেশে এখন উল্লেখযোগ্য পরিমান চা উৎপাদিত হয়েছে। ২০২১ সালে দেশে ৯৬.৫১ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এর মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলে রেকর্ড পরিমান ১৪.৫৫ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। দেশে এখন বৃহৎ চা বাগানের সংখ্যা ১৬৭টি এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগানের সংখ্যা ৮ হাজারেরও বেশি। দেশে চা উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। একই সাথে আমাদের দেশে চা এর ব্যবহার কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে ঘরে ঘরে চা এর ব্যবহার বাড়ছে, সে কারণে চা এর উৎপাদন বাড়লেও সেভাবে আমরা রপ্তানি করতে পাচ্ছি না। কারণ, আমাদের দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে, চা এর ব্যবহার বেড়েছে। চা এর উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চা এর নতুন ও উন্নত জাত উদ্ভাবনে গবেষণা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কৃষকদের চা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এতো দিন শুধু দেশের পাহাড়ি অঞ্চল অর্থাৎ চট্রগ্রাম, মৌলভীবাজার ও সিলেটে চা উৎপাদিত হতো, এখন দেশের উত্তারঞ্চল পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও লালমনিহাটের সমতল ভূমিতেও চা উৎপাদিত হচ্ছে। এতে করে অন্য ফসল চাষে অনুপযোগী জমিগুলোতে চা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। ফলে দেশে চা শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চা উৎপাদনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে আমরা দেশের অভ্যন্তরিন চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে বিপুল পরিমান চা রপ্তানি করতে পারবো।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (২০ জুন) ঢাকায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত আসন্ন ৪ জুন দ্বিতীয় জাতীয় চা দিবস-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং এ বক্তৃতা প্রদানের সময় এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১৮৪০ সালে এখানে ব্যক্তি উদ্যোগে চা উৎপাদন শুরু হয়, তবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু হয় ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনিছড়া চা বাগানে। চা বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫১ সালে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ০৪ জুন থেকে ১৯৫৮ সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম বাঙালি হিসেবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। সে কারণেই ০৪ জুনকে জাতীয় চা দিবস হিসাবে বেচে নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী ৪ জুন, ২০২২ তারিখ সকাল ১১ টায় ওসমানি মিলনায়তনে দ্বিতীয় বারের মতো জাতীয় চা দিবস উদযাপন করা হবে। এখানে আলোচনা সভার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চা প্রদর্শন ও বিক্রয় করার ব্যবস্থা থাকবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, এমপি। দিনব্যাপী এ চা মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ঢাকার পাশাপাশি দেশের চা উৎপাদনকারী অঞ্চলের জেলাগুলোতে রেলি, আলোচনা সভা ও চা মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান ব্রি. জে. মো. আশরাফুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমানসহ বাণিজ্যমন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ টি বোর্ডের সিনিয়র কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।