রবিবার , নভেম্বর ১৭ ২০২৪

পোলট্রিজাত পণ্যের বহুমুখীকরণে গুরুত্ব দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর – ডিজি, ডিএলএস

শুক্রবার (১০ জুন) ঢাকায় অনুষ্ঠিত নিরাপদ ও টেকসই পোল্ট্রি উৎপাদন বিষয়ক দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সেমিনার ও পলিসি ডিসকাশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা।

নিজস্ব প্রতিবেদক:  সারাদেশের মানুষের পুষ্টির যোগান এবং নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের সরবরাহের পাশাপাশি খাদ্যের মান উন্নয়ন ও পোলট্রিজাত পণ্যের বহুমুখীকরণে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর গুরুত্ব দিচ্ছে। সেই সাথে পোলট্রির মাংস ও ডিম গ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিপিআইসিসি, ওয়াপসা-বিবি ও অধিদপ্তর সম্মিলিতভাবে বিশ্ব ডিম দিবস পালন করে আসছে। এতে করে পোলট্রি ডিম ও মাংসের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে।

শুক্রবার (১০ জুন) ঢাকায় অনুষ্ঠিত নিরাপদ ও টেকসই পোল্ট্রি উৎপাদন বিষয়ক দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সেমিনার ও পলিসি ডিসকাশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর পর্যাপ্ত নিরাপদ প্রাণিজ আমিষ উৎপাদন এবং সরবরাহের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণের দারিদ্র বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও পুষ্টির উন্নয়নে পোলট্রি সেক্টর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। প্রাণিসম্পদ সেক্টরের প্রাণিজ আমিষ সরবরাহের শতকরা ৩৫-৪০ ভাগ আসে পোলট্রি থেকে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কথা উল্লেখ করে ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা বলেন, ১৯৭২ সনে বাংলাদেশের সংবিধানে তিনি সবার জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টির নিশ্চিতের বিধান করেছিলেন। ২৩ শে এপ্রিল জাতীয় পুষ্টি পরিষদ গঠনে যে কমিটি হয়েছিল সেই কমিটিতে তিনি সই করেছিলেন। বর্তমান সরকার ২০১৫ সনে জাতীয় পুষ্টি নীতি ও ২০২০ সনে জাতীয় পুষ্টি ও খাদ্য  ও পুষ্টি নিরাপত্তা তৈরি করেন। বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র দূরীকরণ ও পুষ্টির উন্নয়নে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে।

তিনি আরো বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ২০০৮ সনে ‘জাতীয় পোলট্রি উন্নয়ন নীতিমালা’ তৈরি করে যার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে বর্তমানে পোলট্রি একটি বৃহত্তম সেক্টরে পরিণত হয়েছে এবং গণমানুষের পুষ্টির জোগান দিচ্ছে। বর্তমানে জনপ্রতি বছরে মাংসের প্রাপ্যতা ১৩৬ গ্রাম এবং ডিমের প্রাপ্যতা ১২১টি; প্রাণিজ আমিষ খাতের এই সফলতায় পোলট্রি সেক্টর এবং এই সেক্টরের সাথে জড়িত স্টেক হোল্ডারদের অসামান্য অবদান রয়েছে।

‘আমরা মানুষকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি যে, প্রতিটি ডিমের একটা সেলফ লাইফ আছে। আমরা সেখানে জ্যান্ত মুরগি নয়, ড্রেসড ব্রয়লারকে প্রমোট করেছি। এর ফলে ব্রয়লার মাংস সম্পর্কে মানুষের যে ভয় ছিল তা দূরীভূত হয়েছে এবং আমরা দেখেছি দিন দিন পোলট্রির চাহিদা বাড়ছিল’ দাবী ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা’র ।

‘জাতীয় পোলট্রি উন্নয়ন নীতিমালা ২০০৮’ সংশোধনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কাজ করছে উল্লেখ করে ডিএলএস ডিজি বলেন, নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের ব্যাপারে অধিদপ্তর এবং নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর একযোগে কাজ করছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বিপিআইসিসি (পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল) এবং ওয়াপসা পোলট্রির উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী এবং আমরা ইতিমধ্যে করে যাচ্ছি। প্রাণিজাত পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে মান নিয়ন্ত্রণ ল্যবরেটরী স্থাপন করেছে যা ইতিমধ্যে আইএসও সার্টিফিকেট সহ সারাবিশ্বের স্বীকৃতি লাভ করেছে।

তিনি আরো বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর নিরাপদ পোলট্রি উৎপাদন নিশ্চিতকরণসহ এই সেক্টরের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পোলট্রি খাদ্য ও খাদ্য উৎপাদনে আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করছে। তাছাড়া প্রান্তিক খামারিদের সচেতনতা ও কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ওয়াপসা-বিবি ও বিপিআইসিসি একযোগে সারাদেশে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে মানুষের পুষ্টির নিশ্চয়তা বিধান এবং বাজারে পোলট্রির মাংস ও ডিমের সরবরাহ নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমান বাজার চালু করেছে। এ ব্যাপারে সহাযোগিতার জন্য বিপিআইসিসিকে তিনি এ সময় আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, ওয়াপসা-বিবি আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারটির স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ছিল এসিআই লিমিটেড, আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিমিটেড, সিপি গ্রুপ, কাজী ফার্মস গ্রুপ, প্যারাগন গ্রুপ, নারিশ, রেনাটা লিমিটেড।

This post has already been read 4177 times!

Check Also

ডিমের মূল্যের ঊর্দ্ধগতিতে মধ্যস্বত্বভোগীরা বড় সমস্যা- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

পাবনা সংবাদদাতা: ডিমের মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মধ্যস্বত্বভোগীরা বড় সমস্যা উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা …