বুধবার , ডিসেম্বর ১৮ ২০২৪

কৃষি কর্মকর্তাদের দ্রুত খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর

রাজশাহী সংবাদদাতা: কৃষি কর্মকর্তাদের দ্রুত খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক, এমপি। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) সকালে রাজশাহী শহরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রাজশাহী, রংপুর বিভাগসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে তেল ফসল ও ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি শীর্ষক কর্মশালায় মন্ত্রী এ আহ্বান করেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, খাদ্যের জন্য বিদেশের উপর কোনক্রমেই নির্ভরশীল থাকলে হবে না। আন্তর্জাতিক বিশ্ব খুবই নির্দয় ও নিষ্ঠুর;  দেশের স্বার্থে,  জাতীয় স্বার্থে তাদের মধ্যে কোন মানবতাবোধ, গণতন্ত্র ও নীতি-আদর্শ কাজ করে না। রাশিয়ার- ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে ‘ শস্য রপ্তানির’ একটি চুক্তি হয়েছে, কিন্তু নানা অজুহাতে সেটি এখনো কার্যকর হয় নি। এরকম অস্বাভাবিক বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে নিজেদের খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে না পারলে, টাকা থাকলেও খাদ্য পাওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করা বিরাট চ্যালেঞ্জ। এই মুহূর্তে  দেশে সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ। অন্যদিকে কৃষি জমি কমছে। এ অবস্থায়, এই কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হলে কৃষিকে বিজ্ঞানভিত্তিক করতে হবে, যান্ত্রিক করতে হবে, আধুনিক করতে হবে। উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তিকে দ্রুত মাঠে নিয়ে যেতে হবে। তাহলেই খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করা সম্ভব হবে।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, দ্রুত চালের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ব্রি ২৮সহ পুরনো জাতের ধানের পরিবর্তে নতুন উদ্ভাবিত বেশি উৎপাদনশীল জাত  ব্রিধান ৮৯, ৯২, ১০০সহ নতুন জাতগুলো কৃষকের নিকট দ্রুত পৌঁছে দিন ও জনপ্রিয় করুন। এ জাতগুলোর ফলন বিঘাতে ৩০ মণের বেশি হয়। এগুলো চাষ করলে চালের উৎপাদন  ৩০% বাড়ান সম্ভব হবে।

ড. আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, দেশে ডলারের সংকট নেই, তেলের সংকট নেই,  সারেরও সংকট নেই। কিন্তু কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবীসহ যারা চায় সরকারের তাড়াতাড়ি পতন হোক, দেশে খাদ্য সংকট হোক, অর্থনৈতিক বিপর্যয় হোক, তারাই এটি বলে বেড়াচ্ছে।  তারা স্বপ্ন দেখছে, এসব সংকট হলে আন্দোলন করে ক্ষমতায় আসবে বা সরকারের পতন হলে অগণতান্ত্রিক অনির্বাচিত সরকারের উপদেষ্টা ও মন্ত্রী হবে। আমি মনে করি, তারা গণতন্ত্রের শত্রু, দেশের শত্রু।

কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে  বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার,

ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, বারির মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কর্মশালায় বিদ্যমান শস্যবিন্যাসে তেল ফসলের অন্তর্ভুক্তি ও উচ্চ উৎপাদনশীল ধানের জাত চাষের মাধ্যমে তেল ও ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে পরিকল্পনা ও করণীয় বিষয়ে ৫ টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কৃষি কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিকালে নগরীর একটি হোটেলে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত ‘ কৃষি সেক্টর রূপান্তরে বিনিয়োগ ‘ শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালায়  কৃষিমন্ত্রী  প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

This post has already been read 2738 times!

Check Also

এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে উপকারী ব্যাকটেরিয়া -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মানবদেহে ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে অনেক সময় …