মাহফুজুর রহমান (চাঁদপুর সংবাদদাতা) : এক সময় খালটি দুই পাশে ফেলা হত ময়লা-আবর্জনা। স্থানটি ছিল নোংরা ও দুর্গন্ধময়। পাশ দিয়ে চলার সময় নাকে রুমাল দিয়ে চলতে হতো পথচারীদের। তবে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে আজ পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। পরিবেশ হয়েছে সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন। ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে সেখানে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি ও ফল গাছ লাগানো হয়েছে।
এই দৃশ্যটি দেখা গেছে, চাঁদপুর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশ্ববর্তী এসবি খালের অংশটুকুতে। একপাশে রেল লাইন অন্য পাশে সড়ক পথ আর মাঝখানের নোংরা পরিত্যক্ত স্থানটি বর্তমানে পরিনত হয়েছে চমৎকার সবজি বাগানে। দূর্গন্ধযুক্ত স্থানে এমন সবুজের চাষ করে প্রশংসিত হচ্ছেন চাঁদপুরে হিরো আলম খ্যাত জাহাঙ্গীর আলম দিপু। যাকে সবসময় সাদা,লাল অথবা বাহারী এক রকম পোশাকে ফুটপাতের দোকানের সামনে টুলে বসা অথবা দাঁড়ানো অবস্থায় দেখা যায়।
বিগত ১০ বছর যাবত এই খালের রাস্তার পাশে ফুটপাতে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন দিপু। তখন থেকেই তার মাথায় আসে এই স্থানটি ব্যবহার করে কিভাবে চাষাবাদ করা যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী দিপু ধীরে ধীরে পরিষ্কার করে সবজি এবং বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগান এবং পরিচর্যা করা শুরু করেন।
গত বছর শীতকাল থেকে ফসল ফলানো শুরু করেন দিপু। বর্তমানে সেখানে শোভা পাচ্ছে রসালো লম্বা লম্বা আখসহ বিভিন্ন জাতের ফলে। তার এই আখ চাষে নজর ফেলছে পথচারীদের।
প্রতিদিন প্রায় হাজার হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে যাতায়াত করেন। তাই প্রত্যেকেই এই কাজের প্রশংসা করছেন।
পথচারীরা বলছেন, ময়লা খালটি পরিষ্কার করে সবজি এবং ফল চাষ করায় এই স্থানটি অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে। আগে যেমন দুর্গন্ধ বের হতো এই জায়গা থেকে এখন আর তেমন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে না। এতে করে শহরের সচেতন নাগরিকের ভূমিকায় যেনো দিপুকে দেখা গেলো।
দিপুর এই বিষয়টি নজর এসেছে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলেরও।তিনি তার এই চাষাবাদকে আরো এগিয়ে নিতে পরামর্শ এবং উৎসাহ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এই বিষয়ে জাহাঙ্গীর দিপু বলেন, আমি রাস্তার পাশে ফুটপাতে দোকানদারি করে আসছি বেশ কয়েক বছর ধরে। আমার অনেক কাস্টমার এবং মানুষ আমাকে বলতো এই জায়গা থেকে প্রচুর গন্ধ ছড়াচ্ছে। কাস্টমারও বেশিক্ষণ এখানে দাঁড়াতো না। এবং অনেক মানুষ দেখলাম এখানে ইচ্ছেমতো অনেক কিছু ফেলতো। তখন থেকেই আমার মাথায় চিন্তা আসলো, আমি এই জায়গাটিকে পরিষ্কার এবং সুন্দর করে রাখবো। যেহেতু পাশে শহীদ মিনার, বিভিন্ন সময় এখানে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে তাই সেকথা মাথায় রেখে এখানে যদি সবজি বাগান করি তাহলে মানুষ এখানে আর ময়লা আবর্জনা আর ফেলবেনা। সেই থেকে আমি এখানে সবজি বাগান করার উদ্যোগ নেই।