মো. এমদাদুল হক (রাজশাহী) : কৃষিবান্ধব সরকারকার গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদনে বেশগুরুত্ব প্রদান করেছে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদনে জন্য বীজ, সার কৃষদের মাঝে প্রদান করেছে। সামগ্রীক কৃষির উন্নয়নের জন্য ভর্তূকি, গবেষণায় পর্যাপ্ত বরাদ্দ, বহুমুখী উদ্যোগের ফলেই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। পেঁয়াজ গুরুত্বপূর্ণ মসলা অনেক সময় সবজি হিসাবে ব্যবহার হয়। মাঝে মাঝে দেশে পেঁয়াজের মূল্য আকাশচুম্বী হয়ে যায়, পেঁয়াজের এই উর্ধ্বগতি মূল্যে সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে যায়। অনেক পরিবার দাম বেশির জন্য পেঁয়াজ কম খায় বা খাওয়া ছেড়ে দিতে বাধ্যহয়। সংকট রোধে শীতকালীন পেঁয়াজের পাশাপাশি গ্রীস্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করতে হবে। এই মুহূর্তে আমাদের বাড়ির ছাদ বারান্দা কিংবা টবে পেঁয়াজ চাষ করা গেলে আমাদের পারিবারিক পেঁয়াজের চাহিদা নাও মিটতে পারে, তবে পেঁয়াজের মূল্য উর্ধ্বগতিকালীন সময়ে সামান্য সময়ের জন্য হলেও বাজারের পেঁয়াজ না কিনেই চাহিদা মিটাতে পারি। টব বাড়ির ছাদ কিংবা বারান্দা পেঁয়াজের চাষ করতে হলে। রোপণের ২সপ্তাহ আগে সার বা কম্পোস্ট জৈব পদার্থ যুক্ত করে রেখে এরপর বীজ বপন করতে হবে। বাসার বারান্দা বা ছাদ এমন একটি স্থান বেছে নিতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাস পায়।
পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের এবং পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত ভালো। আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁয়াজ চাষ করে ফলন ও মোট উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়। আর এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করা যায় এবং বাড়তি আয়, কর্মস্থানের সৃষ্টি হয়। আমাদের দেশে প্রায় সকল মসলা ফসলের চাহিদা দেশে উৎপাদনের চেয়ে অনেক বেশি। পেঁয়াজে স্বয়ংস¤পূর্ণ হতে হলে মৌসুম ভিত্তিক পেঁয়াজের পাশাপাশি গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদনে তৎপর হতে হবে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক এর কার্যালয় হতে জানা যায়, বিগত বছরে কর্মপরিকল্পনায় পেঁয়াজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে সাফলতা হয়েছিল। উৎপাদনে পর্যায়ক্রমে এগিয়ে যেতে হবে। রাজশাহী জেলার ৯টি উপজেলার পবা ২৭০ তানোর ৭০ মোহনপুর ২০০ বাগমারা ২০০ দূর্গাপুর ৩০০ পুঠিয়া ৩২০ গোদাগাড়ী ২২০ চারঘাট ২০০ বাঘা ২২০ মোট ২ হাজার চাষিকে ২ হাজার বিঘা জমির জন্য প্রতি জন চাষিকে ১ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষের জন্য নাসিক এন ফিপট্টিথ্রি (হ-৫৩) জাতের ১কেজি পেঁয়াজের বীজ, ২০কেজি ডিএপি সার, ২০কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে।
গ্রীস্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করতে হলে জুলাই আগস্ট মাষে বীজ থেকে চারা তৈরি করতে হয়। এখন রাজশাহীতে কোন চাষিরা বীজ তলায় চারা তৈরি করেছে কেউ কেউ মূল জমিতে চারাগুলো রোপণ করছে। চারা রোপণের ৬০-৭০ দিন পর পেঁয়াজ উত্তলনের উপযুক্ত হয় প্রয়োজনে ১০ দিন জমিতে বেশি রাখলে ফলন একটু বেশি হয়ে থাকে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বারি-৫ জাতের উৎপাদন সবচে ভাল, হেক্টর প্রতি প্রায় ১৯ মেট্রিক। উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষি সংশ্লিস্ট বিভাগ তৎপর রয়েছে। আর মাঠ পর্যায়ে কৃষদের চাষের সঠিক তথ্য পরামর্শ প্রদানের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাগণ কাজ করে যাচ্ছে।
রাজশাহী জেলায় প্রাকৃতি কোন দূর্যোগ না হলে এ জেলায় লক্ষ্য মত্রা অর্জন হবে। কৃষি সংশ্লিস্ট বিভাগ এর সারদেশের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে পেঁয়াজে উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যাবে।