যশোর সংবাদদাতা: সারাদেশে বারি হাইব্রিড টমেটো-৮ জাতটি ইতোমধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) -এর মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার। এজন্য এটি একটি মেগা ভ্যারাইটি বলে উল্লেখ করেন তিনি এ সময়। তিনি বলেন, বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষিকে লাভজনক কৃষিতে রূপান্তরিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। একজন কৃষক প্রতি শতাংশ জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে ৭ হাজার টাকা খরচ করে ১৬ হাজার টাকা আয় করছে। ফলে এ ফসলটি কৃষকের জন্য খুবই লাভজনক।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, যশোর এর আয়োজনে বারি উদ্ভাবিত গ্রীষ্মকালীন হাইব্রিড টমেটোর উপর মাঠ দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর অভিযোজন পরীক্ষা, উৎপাদন ও কমিউনিটি বেস্ড পাইলট প্রোডাকশন প্রোগ্রাম’ শীর্ষক কর্মসূচীর অর্থায়নে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বলরামপুর গ্রামে উক্ত মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।
বারি’র পরিচালক (পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন) ড. অপূর্ব কান্তি চৌধুরী এর সভাপতিত্বে মাঠ দিবসে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বারি’র সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, গাজীপুরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মাজহারুল আনোয়ার, সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, খুলনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হারুনর রশিদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, যশোরের উপ-পরিচালক জনাব মো. মনজুরুল হক, বারি’র সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, গাজীপুরের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ‘বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর অভিযোজন পরীক্ষা, উৎপাদন ও কমিউনিটি বেস্ড পাইলট প্রোডাকশন প্রোগ্রাম’ শীর্ষক কর্মসূচীর পরিচালক ড. মো. ফারুক হোসেন।
বারি’র মহাপরিচালক বলেন, ১৯৯৬ সালে এই বাঘারপাড়া উপজেলায় প্রথম গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষাবাদের সূচনা হয়। বর্তমানে এ অঞ্চলে প্রায় ৩১ হেক্টর জমিতে বারি উদ্ভাবিত গ্রীষ্মকালীন হাইব্রিড টমেটোর বিভিন্ন জাত তথা বারি হাইব্রিড টমেটো ৪, ৮ ও ১১ চাষ করা হচ্ছে।
ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, বর্তমানে দেশে বছরে ১৫ হাজার মেট্রিক টন গ্রীষ্মকালীন টমেটো উৎপাদিত হচ্ছে। পাশাপাশি বাইরের দেশ থেকে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন টমেটো আমদানি করতে হচ্ছে। তাই দেশে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর উৎপাদন বাড়ানো গেলে কৃষকেরা যেমন লাভবান হবে একই সাথে আমাদের টমেটো আর আমদানি করার প্রয়োজন হবে না। এ বছর আমরা বারি’র পক্ষ থেকে আমাদের নিজেদের উৎপাদিত হাইব্রিড টমেটোর বীজ কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করেছি এবং আগামীতেও আমরা কৃষকদেরকে গুণগত মানসম্পন্ন বীজ তুলে দিতে চাই। আর এ জন্য প্রয়োজনে আমরা বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করবো।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, যশোর এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাওছার উদ্দিন আহাম্মদ এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, যশোর এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জনাব মো. বাবুল আনোয়ার। মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে প্রায় শতাধিক টমেটো চাষী অংশগ্রহণ করেন।