শনিবার , নভেম্বর ২৩ ২০২৪

মোংলায় ষ্টিমারের পল্টুন ডুবিতে ঘষিয়াখালী  চ্যানেল দিয়ে নৌচলাচল বন্ধ

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): সাইক্লোন সিত্রাংয়ের আঘাতে মোংলায় ষ্টিমার ঘাটের একটি বড় পল্টুন ডুবে গেছে। সোমবার রাত ৮টার দিকে ঘুর্ণঝড়টি প্রচন্ড আঘাত হানলে রকেট ঘাটের শিকল ছিড়ে মোংলা-ঘষিয়াখলী মুল চ্যানেলে পল্টুনটি ডুবে যায়। এতে বন্ধ হয়ে যায় মোংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধ নৌ-ক্যানেল দিয়ে মোংলা বন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাওয়া পন্যবাহী লাইটার ও কার্গো জাহাজসহ অন্যান্য নৌচলাচল। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে দুর্ঘটনা কবলীত স্থান পরিদর্শন করেছে বিআইডব্লিউটিএ’র একটি প্রতিনিধি দল।

স্থানীয় প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানায়, দীর্ঘদিন থেকেই যাত্রী ও ভারী মালামাল বোঝাই করে খুলনা হয়ে ঢাকায় উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে মোংলা ঘাট দিয়ে তারপর যেতে হতো। তবে বর্তমানে এ নৌ-পথটির নদীর নাব্যতার কারণে এ রুট দিয়ে রটেক ও ষ্টিমার আসা-যাওয়া বন্ধ থাকায় কুমারখালী এলাকার ষ্টিমার ঘাটটি রয়ে যায়। এখনও ঘাট ও পল্টুনটি পাহারার জন্য এ প্রতিষ্ঠানের ৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত রয়েছে।

সোমবার রাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর আঘাতে হঠাৎ ষ্টিমার ঘাটের পল্টুনটি নদীর মাঝখানে ডুবে যায়। মোংলা বন্দরের সাথে সংযুক্ত মোংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধু মুল ক্যানেল দিয়ে নৌচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিআইডব্লিউটিএ’ এ প্রতিষ্ঠানের বিবি ১১৫১ নম্বরের এ পল্টুনটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬০ বর্গ মিটার। ঝড় দেখে পল্টুনটির মধ্যে ডিউটিরত থাকা ৬ জন ষ্টাফের মধ্যে সবাই আগে থেকে কিনারে উঠে থাকলেও শেখ রাশেদ নামের একজন ষ্টাফ ওখানেই রয়ে যায়। পরে ঝড়ের কবলে পড়া পল্টুনটির মধ্য থেকে তাকে অন্য ষ্টাফ ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে। এছাড়া পল্টুনের মধ্যে আটকে থাকা ষ্টাফদের মালামাল ও সরকারী কয়েকটি পাম্প মেশিন ও মেশিনারিজ মালামাল উদ্ধার করতে না পারায় প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বিআইডব্লিউটিএ এর প্রতিনিধ দল। এছাড়া দুর্ঘটাস্থলে বিপদ সংকেত হিসেবে লাল পাতাকা টানিয়ে বড় বড় লাইটার ও কার্গো জাহাজ চলাচলে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। তবে ট্রলার, নৌকা ও ছোট ছোট নৌযান সতর্কতার সাথে পার করছে বলে জানায় বিআইডব্লিউটিএ’র কর্তৃপক্ষ। ঝড়ের কবলে ডুবে যাওয়া পল্টুনটি দ্রুত উত্তোলনের জন্য আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিআইডব্লিউটিএ এর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনা কবলিত স্থলে আসার কথা রয়েছে বলে জানায় তারা।

মোংলা ষ্টিমার ও রকেট ঘাটের কর্মরত বিআইডব্লিউটিএ’র এ্যাকটিন টালী শুকানী শেখ রাসেদ জানায়, ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং আসার আগেই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল, কিছুক্ষন পরেই ঝড়ের আঘাতে প্লটুনটি শিকল ছিড়ে ক্যানেলের মাঝখানে ডুবে যায়। বর্তমানে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানায় তিনি।

দীর্ঘদিন মোংলা-ঘষিয়াখালী ক্যানেল দিয়ে রকেট ও ষ্টিমার চলাচল করলেও নদী নব্যতা সংকটের কারণে ২০২০ সালের প্রথম দিকে বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় পর থেকে অদ্যবধি পল্টুনটি ওখানেই রয়েছে যায়। তবে প্লটুনটি দ্রুত উত্তোলন করতে না পারলে মোংলা বন্দর দিয়ে পন্য বোঝাই লাইটার, কর্গো ও গ্যাসবাহী জাহাজ আসা-যাওয়া করতে না পারলে মোংলা বন্দরের ব্যাপক ক্ষতির মধ্যে পরবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

This post has already been read 1897 times!

Check Also

কপ২৯-এ জলবায়ু ন্যায়বিচার এবং প্রাক-২০৩০ উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য অর্জনের আহ্বান জানালো বাংলাদেশ

নিজস্ব সংবাদদাতা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান …