নিজস্ব প্রতিবেদক: এসিআই -এর একটা অনেক বড় শক্ত সোশ্যাল কমিটমেন্ট আছে। এই কমিটমেন্টকে মাথায় রেখেই আমাদের মিশন হচ্ছে আমরা বাংলাদেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য আমরা সর্বতোভাবেই আমাদের নলেজ-স্কিল এবং টেকনোলোজি অ্যাপ্লাই করবো এবং এটি অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণভাবে এবং এটি হচ্ছে আমাদের মিশন। আর এই মিশনকে সাপোর্ট করতে যেয়ে যেটা আমরা দেখতে পাই বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক অবস্থা; যেখানে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ গ্রামে বাস করেন এবং তাদের অধিকাংশই কৃষক। গ্রামে বাস করা এই অর্ধেক লোকের বেশিরভাগই কিন্তু কৃষক। যেহেতু আমাদের সোশ্যাল মিশনটা অনেক বড়, সেহেতু আমি মনে করি -কৃষকদের লাভবান ও জীবনমান উন্নয়ন করতে হবে। কৃষকদের নীডগুলোকে ফুলফিল করার মাধ্যমে তাদেরকে লাভবান করা গেলে কিন্তু সার্বিকভাবে আমাদের সামাজিক প্রতিশ্রুতি টেকসই হয়।
রাজধানীর এসিআই সেন্টার প্রাঙ্গণে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী মেলার দ্বিতীয় দিনে (বুধবার, ২১ ডিসেম্বর) এই প্রতিবেদককে এসব কথা বলেন এসিআই এগ্রিবিজনেস প্রেসিডেন্ট ড. এফএইচ আনসারি। মঙ্গলবার শুরু হওয়া এই মেলা চলবে ২২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।
ড. আনসারি বলেন, তিন দিনব্যাপী এই মেলা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো- আমরা সত্যিকারভাবে যা করি, আমরা যা ভাবি, যা আমাদের কমিট্মেন্ট, যেটা আমাদের স্ট্যান্ডার্ড সেগুলোকে জনসম্মুখে তুলে ধরা। জাপান, টার্কি থেকে শুরু করে দেশ বিদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের ভিজিটর ইতিমধ্যেই মেলাতে এসেছেন এবং সবাই সেগুলো দেখছেন। দেখে তারা বুঝতে পারছেন যে, এসিআই যে কমিটমেন্ট করেছে সেগুলোর সম্পূর্ণরুপে বাস্তবায়নও করেছে।
“আমরা বলেছি, কৃষকের যেন সম্পদ বৃদ্ধিতে সহায়তা দিবো বা কাছে থাকবো এবং এটা করার জন্য কৃষকের যেসব নিড আছে সেই নিড এর কমপ্লিট সলিউশন আমরা সাপ্লাই দিচ্ছি। এসবের মধ্যে টেকনোলোজি, ইনোভেশন টেকনোলোজি, প্র্যাক্টিসেস কমিউনিকেশন, প্রোডাকশন, পোস্ট হারভেস্ট, প্রসেসিং এবং ফরোয়ার্ড লিংকে এই কাজগুলো আমরা করছি। এটা করতে যেয়ে আমরা ক্রপ ও এনিমেল জেনেটিক্স করেছি, আমরা বীজ, সার, কৃষির প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, মাছ, মুরগি, গরু থেকে শুরু বিভিন্ন প্রাণির খাদ্য সরবরাহ করছি। আমরা প্রাণির স্বাস্থ্য সেবার জন্য ওষুধ, এডিটিভস, সাপ্লিমেন্ট, ভ্যাকসিন ইত্যাদি সরবরাহ করছি। আমাদের উৎপাদিত চিংড়ি মাছ সারা পৃথিবীতে রপ্তানি করছি“ -বলেন ড. আনসারি।
তিনি বলেন, আমাদের কৃষকগণ যেসব পণ্য উৎপাদন করছেন সেগুলো সংগ্রহ করে আমাদের নিজস্ব কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে সেগুলো আমরা সরাসরি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। সেগুলোর মধ্যে আমাদের অনেক বড় সল্ট রিফাইনারি প্রজেক্ট, রাইস প্রসেসিং, ফ্লাওয়ার মিল, স্নাকস ফ্যাক্টরি ছাড়াও বহু ধরনের কনজ্যুমার প্রোডাক্ট উৎপাদন ও বাজারজাত করছি। আবার এসব পণ্য সরাসরি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য সারাদেশে ‘স্বপ্ন’ নামে ২৬৬ টি সুপার শপ বা আউটলেট করেছি। মোট কথা, এগ্রিকালচার ভ্যালু চেইনের জন্য যা লাগে এসিআই তার সবকিছু করছে।
এছাড়াও আমরা দেশের গ্রাম ও শহরের মানুষের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে গতিশীলতা আনয়নে কাজ করছি। এর ফলে গ্রামের পণ্য শহরে এবং শহরের পণ্য গ্রামে যাচ্ছে। আমরা ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে একটি শক্ত সংযোগ স্থাপন করছি।
ড. আনসারি আরো বলেন- আমরা কনস্ট্রাকশন ইকুইপমেন্ট ব্যবসা করি; যাতে আমাদের দেশের অবকাঠামোগত যে দুর্বলতা রয়েছে সে উন্নতমানের মেশিন ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের মাধ্যমে সহায়তা করা যায়। আমরা কমার্শিয়াল ভ্যাহিকেল সাপ্লাই দিচ্ছি যাতে প্রয়োজনীয় মালামাল বহন/সরবরাহ করা সহজ হয়। আমরা জেনারেটর সাপ্লাই দিচ্ছি যাতে জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হয়।
তিনি জানান, আমাদের প্লাস্টিকের ব্যবসা রয়েছে যেখানে আমরা রিসাইকেল ও নতুন প্লাস্টিক ব্যবহার করছি; এখানে দু’ ধরনের ব্যবসা আছে। একটি হলো- ফ্লাক্সো প্যাকেজিং যেখান থেকে আমরা প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল প্রস্তুত করে দেশি-বিদেশি বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরবরাহ করি; অপরটি হলো-কনজ্যুমার প্লাস্টিক যেখানে ফার্নিচার থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করা হয়।
ড. আনসারি বলেন, দেশের ফার্মাসিউটিক্যালস সেক্টরে রয়েছে আমাদের অনেক বড় ব্যবসা; আমরা ওষুধ প্রসেস, প্যাকেজিং ও সরবরাহ করি। বাংলাদেশ ছাড়াও ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের ৫০-৬০টি দেশে আমাদের ওষুধ রপ্তানি হয়।
“আমাদের টোটাল কমিট্মেন্ট যেটিকে বাস্তবায়ন, সম্প্রসারণ ও টেকসই করার জন্য আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি। সোসাইটিতে সাস্টেইনেবল বেনফিটের জন্য এবং ইকোনমিক গ্রোথের জন্য আমরা এই কাজগুলো করছি” -যোগ করেন ড. আনসারি।