গাজীপুর সংবাদদাতা: কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, সামনের দিনগুলোতে চালের চাহিদা আরও বাড়বে। একদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে কৃষি জমি কমছে। ভুট্টা, শাকসবজিসহ অন্যান্য ফসলেও জমির ব্যবহার বাড়ছে। বাড়িতে যেসব ফসল হতো যেমন চালকুমড়া- তাও এখন মাঠে হচ্ছে। এসবের ফলে ধান চাষের জমি কমছে। এই জটিল পরিস্থিতিতে চালের উৎপাদন বাড়াতে হলে গবেষণায় আরও জোর দিতে হবে। একইসঙ্গে, উদ্ভাবিত জাতের দ্রুত সম্প্রসারণ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার সকলের জন্য পুষ্টিজাতীয় খাবারের নিশ্চয়তা দিতে কাজ করছে। বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ফল উৎপাদনেও জমির ব্যবহার বাড়ছে। এ অবস্থায় সকল সংস্থা, বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাদেরকে সমন্বিতভাবে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।
চালের বাম্পার উৎপাদনের পরও কেন দাম কমছে না, তার প্রকৃত কারণ খোঁজে বের করতে বস্তুনিষ্ঠ গবেষণার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ব্রির গবেষণায় আমরা অনেকগুলো কারণ খুঁজে পেয়েছি। ব্রির পাশাপাশি বিআইডিএস, সিপিডিসহ অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানকেও এ বিষয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ও কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, সম্মানিত অতিথি হিসেবে বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, বিএডিসির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভাপতিত্ব ও স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর। তিনি জানান, আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে। আগামী জুন পর্যন্ত চালের কোন সংকট হবে না, বরং ৪২ লাখ টন উদ্বৃত্ত থাকবে। ১৭ কোটি মানুষের চালের চাহিদার পাশাপাশি মানুষের বাইরে ( নন-হিউম্যান) ভোগ ২৬ শতাংশকেও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।
তারপরও বাজারে কেন চালের দাম কমছে না, তা জানতে ব্রি মাঠ পর্যায়ে গবেষণা করেছে। ব্রির মহাপরিচালক জানান, গবেষণায় দেখা গেছে, চালকল মালিকেরা ও খুচরা বিক্রেতারা অতিরিক্ত মুনাফা করছেন। চালকল মালিকেরা কেজিতে ৮-১৪ টাকা লাভ করছে। কৃষকের উৎপাদন খরচও কিছুটা বেড়েছে। এছাড়া, কর্পোরেট গ্রুপগুলো চালের বাজারে প্রবেশ করে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।