রাজেকুল ইসলাম (রাণীনগর, নওগাঁ): ক্ষতিকর দিক বিবেচনায় নিয়ে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় কৃষকরা রাসায়নিক সারের উপর নির্ভর না হয়ে দিন দিন ভার্মি কপোস্টের (কেঁচো সার) ব্যবহার করার আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
জানাগেছে, জৈব সার ব্যবহার করে তৃণমূলের কৃষকরা রাসায়নিক সারের পরিবর্তে ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করছেন কেঁচো সার। আর কৃষি অফিসের সহযোগিতায় বাণিজ্যিক ভাবে এই কেঁচো সার উৎপাদন করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে উপজেলার কুজাইল মহিলা সিআইজি (সবজি) সমবায় সমিতি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু হয়েছে এ সারের উৎপাদন।
রাজশাহী বিভাগের মধ্যে নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার সফল নারী উদ্যোক্তা কুজাইল মহিলা সিআইজি (সবজি) সমবায় সমিতির সভানেত্রী ও মোছা. সানজিদা বেগম বলেন, ২০১৮ সালে উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আমার আশেপাশের কয়েকজন মহিলাদের নিয়ে সমবায় সমিতি গঠনের মাধ্যমে প্রথমে ৩টি রিং-এ থাই কেঁচোর দ্বারা ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করে। এরপর থেকে তাকে আর পেছন ফিরে দেখতে হয়নি। ভার্মি কম্পোস্ট সার দিয়ে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা পূরণের পর বাজারে বিক্রি করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছি। বর্তমানে কৃষি অফিসের সহায়তায় ২০টি রিং এ বাণিজ্যিক ভাবে কেঁচো সার উৎপাদন করছি। বর্তমানে উৎপাদিত কেঁচো সারের সুনাম আশেপাশের এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। আশেপাশের ও দূরদুরান্তের কৃষকরা এই কম্পোস্ট সার জমিতে ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছেন। তাই নিজেদের চাহিদা পূরণের পরও প্রতি মাসে এই কম্পোস্ট বিক্রি করে ১৫-২০হাজার টাকা আয় হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে রাসায়নিক সার আর কীটনাশকের যত্রতত্র ব্যবহারে মাটির জীবনবায়ু প্রায় ওষ্ঠাগত। চাষাবাদে জৈব সার, কম্পোস্ট সারের বিকল্প নেই। বিভিন্ন প্রকার জৈব বস্তুতে (উদ্ভিদ ও প্রাণিজ) বিশেষ প্রজাতির কেঁচোর পাচন ক্রিয়ার ফলে জমিতে প্রয়োগের উপযোগী যে জৈব সার পাওয়া যায় তাই ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার। দীর্ঘস্থায়ী ভাবে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এই কম্পোস্ট সারের কোন বিকল্প নেই।