এগ্রিনিউজ২৪.কম : আগামী সোমবার (২৩ জানুয়ারি), রাজধানীর কাওরান বাজারের টিসিবি ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন (BPIA) এর দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে “পোল্ট্রি পণ্যের যৌক্তিক মূল্য” বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে ১৭টিরও বেশি নির্বাচনী সম্ভাব্য ইশতেহার ঘোষণা করেছে “খামারী প্যানেল” (ব্যালট নং ১ থেকে ১৯) প্রার্থী লিস্ট দেখতে এখানে ক্লিক করুন। উক্ত প্যানেলের নির্বাচনী ইশতেহার নিম্নে দেয়া হলো:
১. মূল্য নির্ধারণের জন্য গঠিত স্হায়ী কমিটি প্রতি মাসে কম পক্ষে একটি সভা করা। সময়ে সময়ে পোল্ট্রি পণ্যের উৎপাদন মূল্য নির্ধারণ করা ও ভোক্তাদেরকে উৎপাদন খরচ সম্পর্কে ধারনা দেয়া।
২. পোল্ট্রির খাদ্য উৎপাদনে অপ্রচলিত খাদ্য উপাদান যুক্ত করে খাদ্যের দাম কমিয়ে আনা (যেমন- পোল্ট্রি খাদ্যে আমের আটি ব্যবহার/শহর অন্চলের বাসা বাড়িথেকে রান্নার অবশিষ্ট পুষ্টি যুক্ত অংশ সংগ্রহ পূর্বক শোধন করে ব্যবহার)। কম সুদের অর্থ ব্যবহার করে দেশে ভুট্টা ও সয়াসিডের উৎপাদন বাড়ানো। আমদানি নির্ভরতা কমানো।
৩. ডিম ও মাংস উৎপাদনকারী খামার গুলোতে উন্নত প্রযুক্তির ক্যাপিটাল মেশিনারীজ স্হাপনে ভর্তুকি দেয়া।
৪. বহুজাতিক ও কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর সাথে ছোটদের অসম প্রতিযোগিতা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এলাকা ভিত্তিক ছোট খামারিদের যৌথ ব্যবস্হাপনায় নো-প্রফিট নো-লসের ভিত্তিতে মিনি ফিডমিল স্হাপনে সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। এটা কৃষি উপখাত হিসেবে কৃষি ভর্তুকির আওতায় হতে পারে।
৫. বিদ্যুৎ বিল রিবেট পাওয়ার ক্ষেত্রে ছোট খামারিদেরকে বড় খামারিদের মত ২০% রিবেটের আওতায় আনা এতে শুধু খামার নিবন্ধন সনদই যথেষ্ট হিসেবে বিবেচিত করা বা সবার জন্য সেচে ব্যবহৃত বিদুৎ বিলের আদলে আনা। একই সাথে ট্যাক্স সুবিধা গুলি ছোট ফার্মাদের জন্য উন্মুক্ত করা।
৬. ব্যাংক ঋণ ছোটদের জন্য সহজিকরণ। ‘০’ বা সর্ব্বোচ্চ ৪% ইন্টারেস্টে ডিম ও ব্রয়লার উৎপাদনকারি খামারিদের ঋণের ব্যাবস্থা রাখা।
৭. পোল্ট্রির উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণে টেকসই ব্যবস্থাপনা কাঠামো তৈরী ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন।
৮. বহুজাতিক ও কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর সাথে ছোট/প্রান্তিক/মাঝারি পোল্ট্রি খামারিদের অসম প্রতিযোগীতা দূর করার লক্ষ্যে অন্যান্য বাধাগুলো দূর করা। ছোট ও মাঝারি খামারিদেরকে প্রশিক্ষণের আওতায় রাখা। এতে নিরাপদ ডিম ও মাংস উৎপাদন বাড়বে।
৯. বন্দর সমূহে পোল্ট্রির অতি প্রয়োজনীয় আমদানি পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর করা বা দ্রুততর পদক্ষেপ নেয়া। বাধাহীনভাবে পোল্ট্রির খাদ্য উপাদান ও এডিটিভস আমদানির ব্যাবস্থা রাখা।
১০. ডাটা বেইজের মাধ্যমে ডিম, মুরগী, বাচ্চা,খা দ্যের উৎপাদন ও যোগান ঠিক রাখা। প্রয়োজনীয় কোল্ড-ষ্টোরেজ স্থাপন আবশ্যক।
১১. পলিসিতে বাচ্চা ও বাণিজ্যিক খাদ্য উৎপাদনকারী সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে উচ্চতর জীব নিরাপত্তার প্রয়োজনে সাপোর্ট প্রদান। একই সাথে বাচ্চা ও বাণিজ্যিক খাদ্য উৎপাদনকারীগণকে মুরগী ও খাওয়ার ডিম উৎপাদনে সীমা বেধে দেওয়া/নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা নেয়া।
১২. মধ্যস্বত্বভোগী খাদ্য, ঔষধ, ভ্যাক্সিন, ডিম, বাচ্চা, মুরগী বিক্রেতাগণের অতিরিক্ত লভ্যাংশের দিকে নজরদারির ব্যবস্থা রাখা।
১৩. বাচ্চার উৎপাদন খরচ কমানো, কার্টুনে সর্বোচ্চ বিক্রয় মূল্য লিখে দেয়া। বাচ্চা উৎপাদনে চাহিদা ও যোগান মেনে চলা।
১৪. পোল্ট্রি খামারগুলোর আধুনিকায়নে দেশীয়ভাবে যন্ত্রপাতি উৎপাদন কারখানা স্থাপনে উৎসাহ প্রদান। ঔষধ সহ সব ধরনের ভ্যাক্সিন দেশেই উৎপাদন করা। বিশেষ করে H9N2 ভ্যাক্সিন দেশে তৈরী অতি জরুরি।
১৫. বায়োসেফটি ল্যাব নির্মাণ। ভাইরাস আইসোলেট সহ ক্লেড যাচাই করা যায় এমন ল্যাব নির্মাণ এবং ল্যাব ফ্যাসিলিটি সহজ লভ্য করা।
১৬. কৌশলপত্রে ও মূল্যনির্ধারণ কমিটিতে মিডিয়া ব্যাক্তিত্বের উপস্থিতি, এনবিআর এর প্রতিনিধি, ভোক্তা অধিকার ও প্রতিযোগীতা কমিশনের প্রতিনিধি যুক্ত করা।
১৭. উপরের সব কিছু একই ছাতার নীচে আনয়নের লক্ষ্যে পোল্ট্রি ফেডারেশন বা পোল্ট্রি শিল্প উন্নয়ন বোর্ড করা যেতে পারে।
এ ছাড়া আরো যে বিষয়গুলো আমলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেগুলো হলো-
* রেজিষ্ট্রেশন ছাড়া ফার্ম করতে না দেয়া, রেজিষ্ট্রেশন দেয়ার আগে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের মতামত নেয়া।
* ঔষধ বিপণনকারী কোম্পানি গুলোর ব্যবসার নামে অনাকাঙ্খিত ঔষধ বিক্রির কৌশলে লাগাম টানা।
* স্বয়ংসম্পূর্ণতা না আসা পর্যন্ত সয়াবিন, ভূট্টা, রাইসপলিস রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
* ডিম ও মুরগীর ভোক্তা বৃদ্ধির বিজ্ঞাপনের ব্যবস্হা করতে হবে।
* পোল্ট্রির পণ্যবাহী গাড়ীতে চাঁদা আদায় কঠোরভাবে বন্ধের ব্যবস্থা নিতে হবে।
* গরুর খাদ্য সাইলেজ তৈরীতে ভুট্টাসহ গাছ ব্যবহারের ফলে ভুট্টা উৎপাদন কমে যাচ্ছে।