নিজস্ব প্রতিবেদক: অনেকের ধারনা, ডিম ও মুরগিতে খামারিরা অনেক লাভ করছেন, দ্বিগুন দাম নিচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। বিগত কয়েক বছর ধরে ধারাবারাহিকভাবে ডিম ও মুরগির দাম না পাওয়াতে দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ খামার বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে খামারির সংখ্যা কমে যাওয়াতে উৎপাদন কমে গেছে। অন্যদিকে ডলারের দাম বেড়ে গেছে, কয়েক মাস আগেও যে ডলারের দাম ছিল ৮৪-৮৫ টাকা, সেটি এখন ১১০ টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে। ডলার সংকটের কারণে আমরা এখন ঠিকমতো এলসি খুলতে পারছি না। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দামও অনেক বেড়ে গেছে। এসব সার্বিক কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। অন্যদিকে ক্রমাগত লোকসানের কবলে পড়ে সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অসংখ্য খামার বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমান বাজারে ডিম ও মাংসের বেড়ে যাওয়ার এসবই অন্যতম প্রধান কারণ।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে ‘৫ম আর্ন্তজাতিক সায়েন্টিফিক কনফারেন্স ২০২৩’ -এ এসব কথা বলেন ওয়াপসা-বিবি সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুব হাসান। নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কিত জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি ফর সেইফ ফুড (বিএসএসএফ), এফএও, বাংলাদেশ ও নিউট্রিশন ইউনিট, বিএআরসি’র সহযোগিতায় উক্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মাহাবুব হাসান বলেন, খামারিদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হলে ডিম ও মাংস রপ্তানির বিকল্প নেই। আগামী ২০২৫ সনের মধ্যে আমরা রপ্তানিতে যেতে চাই। বিপিআইসিসি, ওয়াপসা-বিবি, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সহ সরকারি বে-সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সাথে আমরা সমন্বয়ের মাধ্যমে একযোগে কাজ করার চেষ্টা করছি। নিরাপদ ডিম ও মাংস উৎপাদন এবং টেকসই পোলট্রি শিল্প গঠনে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
‘কিছু কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য ও গবেষণা আমাদের টেকসই শিল্প গঠনের অন্যতম বাঁধা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ডিম ও ব্রয়লার মুরগি নিয়ে মাঝেমধ্যেই অপপ্রচার চালানো হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এক গবেষণার মাধ্যমে তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে অপপ্রচারের উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন। ডিম ও ব্রয়লার মুরগির মাংস যে নিরাপদ সেটি তাঁরা প্রমাণ করেছেন। এজন্য মাননীয় কৃষিমন্ত্রীকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত ডিম মাংস উৎপাদনে আপনাদের মতো বিজ্ঞানীদের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন’ -যোগ করেন মাহাবুব হাসান।
মাহাবুব হাসান আরো বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়েছে ২০১৫ সনে; অথচ ওয়াপসা-বিবি এরও আগে থেকে নিরাপদ পোলট্রি উৎপাদনে কাজ করে যাচ্ছে। পোলট্রির উৎপাদন বৃদ্ধি ও সাশ্রয়ী মূল্যে সবার জন্য পুষ্টিকর প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ওয়াপসা-বিবি’র সূচনালগ্ন থেকেই কাজ করে যাচ্ছে। নিরাপদ ডিম ও মাংস নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংগঠনটি ২০১৫ সন থেকে বিভিন্ন বিশেষ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। খামারগুলোকে নিবন্ধনের আওয়াতায় আনতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। যাতে প্রান্তিক খামারিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে নিরাপদ পোলট্রি উৎপাদনে সহযোগিতা করা যায়।
আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় ‘আন্তর্জাতিক পোলট্রি শো ও সেমিনার-২০২৩’ এ অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে আমন্ত্রণ জানান, এ সময় তিনি।