শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪

পৃথিবীর প্রায় ৫২টি দেশে আমাদের মৎস্য রপ্তানি হয়

কক্সবাজার সংবাদদাতা: পৃথিবীর প্রায় ৫২টি দেশে আমাদের মৎস্য রপ্তানি হয়। চায় সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি খাত সমন্বিতভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাক। সরকার বেসরকারি খাতকে সহায়তা করার জন্য সরকার বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মৎস্য খাতে বিএফআরআইয়ের গবেষণা সাফল্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণ ও এর যথাযথ ব্যবহারে বর্তমান সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

আজ বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)-এর সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে সুনীল অর্থনীতিতে সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ: গবেষণা অর্জন ও সম্ভাবনা শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, সমুদ্রে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে আইন করেছিলেন। সেই আইনের উপর ভিত্তি করে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমুদ্রসীমায় অধিকার অর্জনের কাজ শুরু করেন। সমুদ্রসীমায় অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা সরকার ছাড়া আর কোন সরকার কোন পদক্ষেপ নেয় নি।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেরা কুটনৈতিক নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রায় সমপরিমাণ আয়তনের সমুদ্রসীমা আমরা অর্জন করেছি। সে সমুদ্রসীমায় সম্পদ আহরণ ও তার গুণগত ব্যবহারের মাধ্যমে কিভাবে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে এ বিষয় নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থা কাজ করছে। সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণ ও এর যথাযথ ব্যবহার নিয়ে কাজ করছে বিএফআরআই।

মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার গবেষণায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিচ্ছেন, সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। দেশের সর্বত্র গবেষণা ছড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে মৎস্যসম্পদে আমূল পরিবর্তন এসেছে। মৎস্য উৎপাদনে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করা সম্ভব হয়েছে। সরকারের সময়োপযোগী ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত ও পৃষ্ঠপোষকতায় এটা সম্ভব হয়েছে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ। মৎস্য রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা ক্রমান্বয়ে সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

মন্ত্রী বলেন, মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় নতুন নতুন কার্যক্রম সংযোজন করছে। সমুদ্রে মাছের মজুদ নিরূপণে গবেষণা জাহাজ আরভি মীন সন্ধানী জরিপ পরিচালনা করছে। প্রচলিত ও অপ্রচলিত সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের উন্নয়ন ও সংরক্ষণে বিএফআরআই গবেষণা অব্যাহত রেখেছে। গভীর সমুদ্রে টুনা মাছ আহরণের সরকারের উদ্যোগে জাহাজ আনা হচ্ছে। এভাবে সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে শেখ হাসিনা সরকার যে পর্যায়ে যা কিছু সহযোগিতা দরকার তা সম্প্রসারণ করছে।

প্রধান অতিথি আরো যোগ করেন, সমুদ্রসম্পদ আহরণে সরকারের সব প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি খাতের কাজের মধ্যে সুসমন্বয় থাকা দরকার। পাশাপাশি এ খাতে গবেষণা ফলাফল ব্যবহারে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রান্তিক পর্যায়ে গবেষণার সাফল্য ছড়িয়ে দিতে হবে। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিই শুধু নয়, বরং গুণগতমানের মৎস্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরো জানান, আমাদের সমুদ্রে সীউইডসহ যে অপ্রচলিত মৎস্যসম্পদ রয়েছে তার আন্তর্জাতিক চাহিদা রয়েছে। এর ব্যবহার ও বিপণন কিভাবে করা যায় সেটাকে গবেষণার অংশে পরিণত করতে হবে। গবেষণার অর্জন মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিএফআরআই-এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ। কর্মশালায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআই-এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এহসানুল করিম।

এদিন বিকালে কক্সবাজার ফিশারি ঘাটে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন কর্তৃক কক্সবাজার জেলায় বাস্তবায়নাধীন শুটকি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন প্রকল্পের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।

This post has already been read 2760 times!

Check Also

যে জেলায় ইলিশ উৎপাদন হয়, ওই জেলার মানুষ গরিব হতে পারে না -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ভোলা সংবাদদাতা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ইলিশের সম্পদ রক্ষায় সবাইকে একসাথে কাজ …