আ.ন.ম. বোরহান উদ্দিন ভূঞা (সিলেট): সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, সিলেট এর পরামর্শে ১ একর পতিত জমিতে বারি সূর্যমুখী-৩ চাষ করেছি। জাত খাটো হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে অন্যান্য জাতের তুলনায় ক্ষতি কম হয় এবং রোগবালাইও তুলনামূলক কম। উৎপাদন খরচ কম এবং পরিচর্যাও কম লাগে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (সরেজমিন গবেষণা বিভাগ) সিলেট আয়োজিত গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বারি উদ্ভাবিত সূর্যমুখীর খাটো জাত ’বারি সূর্যমুখী-৩ এর উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন প্রযুক্তি’ শীর্ষক মাঠ দিবসে এসব কথা বলেন মৌলভীবাজার জেলার স্থানীয় কৃষক সংগঠক আলী আহমেদ। তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প (বারি অংগ) এর আর্থিক সহযোগিতায় মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার হাকালুকি হাওরের বেলাগাঁও গ্রামে উক্ত মাঠ দিবস অনুষ্ঠিতত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান অতিথি ড. ফেরদৌসী বেগম, প্রকল্প সমন্বয়ক এবং মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বিএআরআই, বারি অংগ, গাজীপুর। এছাড়াও প্রগতিশীল কৃষক হিসেবে আরজান মিয়া, রাশেদা বেগম, রফিকুল ইসলাম, আমীর হোসেন, সাইফুল আলম, শাহজাহান আলম, প্রমুখ মতবিনিময় করেন।
ড. ফেরদৌসী বেগম বলেন, তেলের দাম বেড়ে যাওয়াতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তেলের আমদানি নির্ভরতা কমানোর জন্য আমাদের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তেল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের চলমান তেল ফসলের চাহিদা মোকাবেলায় পতিত জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করে উৎপাদিত তেল দিয়ে দেশের তেলের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। বারি সূর্যমুখী-৩ জাত উচ্চ ফলনশীল এবং রোগ বালাইর আক্রমন কম হয়। ভবিষ্যতে সূর্যমুখীর নতুন জাত উদ্ভাবিত হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেণ।
মাঠ দিবসের সভাপতি, ড. মাহমুদুল ইসলাম নজরুল, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, সিলেট, বলেন- পতিত জমির সর্বোচ্চ সঠিক ব্যাবহার, কৃষির প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধির জন্য সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, সিলেটের ছোট বড় পাহাড়-টিলা থেকে শুরু করে হাওরাঞ্চলে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। চলতি রবি মৌসুমে সিলেট বিভাগের প্রতিটি জেলায় ব্যাপক ভাবে বারি উদ্ভাবিত সূর্যমুখী, সরিষা, চীনাবাদাম এবং তিল ফসলের চাষ হয়েছে। বারি সূর্যমুখী-৩ চাষে অল্প খরচে অধিক আয়; জাত খাটো বলে বাতাসে হেলে পরে না; পরিচর্যা করতেও সুবিধা। তিনি আরো বলেন- সূর্যমুখীর সাথে মিষ্টি কুমড়া এবং ক্ষিরার মিশ্র চাষ করে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।
মাঠ দিবসে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মো. সাইফুল ইসলাম, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, মৃত্তিকা সম্পাদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, মৌলভীবাজার এবং সগবি সিলেট এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জুলফিকার। মাঠ দিবসে স্থানীয় কৃষক, গণ্যমান্য ব্যাক্তি ও গণমাধ্যমের সংাবাদিকসহ প্রায় শতাধিক উপস্থিত ছিলেন।