রবিবার , নভেম্বর ১৭ ২০২৪

ধানের জাত উদ্ভাবন প্রক্রিয়ার সময় কমিয়ে আনা হবে ৫-৭ বছর

গাজীপুর সংবাদদাতা: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে দুইদিন ব্যাপী ট্রান্সফরমিং রাইস ব্রিডিং বা টিআরবি শীর্ষক কর্মশালায় ধান বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জাত উদ্ভাবন প্রক্রিয়ার সময় ৫-৭ বছর কমিয়ে আনা হচ্ছে। আগে যেখানে একটি জাত উদ্ভাবনে ১০-১৫বছর লেগে যেত এখন ৮-১০বছরে সে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে।

আজ রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে গাজীপুরে অবস্থিত ব্রি’র কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আয়োজিত কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান সংশ্লিষ্ট ধান বিজ্ঞানীরা। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোঃ শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, ইন্টারন্যাশনাল রাইচ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্ল্যাটফরম লিডার ড. হ্যান্স রাজ ভারদোয়াজ, বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের (বিএমজিএফ), সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ড. গ্যারি এটলিন।

ইরি ও ব্রির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইরি বাংলাদেশ অফিসের সিনিয়র উদ্ভিদ প্রজননবিদ ড. রফিকুল ইসলাম। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রি’র পরিচালক (গবেষণা) ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে চলমান ট্রান্সফরমিং রাইস ব্রিডিং বা টিআরবি প্রকল্পের হালনাগাদ অগ্রগতি ও অর্জন উপস্থাপন করেন ব্রির মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান ড. খোন্দকার মো. ইফতেখারুদৌলা। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পক্ষে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মো: হাসানুজ্জামান রনি।

বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের (বিএমজিএফ) এর অর্থায়নে ব্রি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে ধানের জাত উদ্ভাবন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ পরিস্থিতিতে উন্নতজাতের ধান গবেষণার বর্তমান পরিস্থিতি ও সম্ভাবনা নিয়ে কর্মশালায় আলোকপাত করা হয়।

কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে ব্রি মহাপরচিালক মোঃ শাহজাহান কবীর বলনে, বিএমজিএফর আর্থিক সহায়তায় এবং ইরির কারিগরী সহায়তায় ট্রান্সফরমিং রাইস ব্রিডিং বা টিআরবি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি যার মাধ্যমে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জাত উদ্ভাবন প্রক্রিয়ার যে সময় তা ৫-৭ বছর কমিয়ে আনা হচ্ছে। আগে যেখানে একটি জাত উদ্ভাবনে ১০-১৫বছর লেগে যেত এখন ৮-১০বছরে সে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে। গবেষণা কার্যক্রমের আধুনিকীকরণের মাধ্যমে আগামী দিনের ধানের জাতে জেনেটিক গেইন অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ভৌগলিক স্থান, বাজার ও কৃষকের চাহিদা ভিত্তিক ধানের জাত উদ্ভাবনে ব্রি’র সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ট্রান্সফরমিং রাইস ব্রিডিং এর পাশাপাশি জাত উদ্ভাবনের সময় কমানোর জন্য আমরা স্পিড ব্রিড্রিং কৌশল অবলম্বন করছি।

ব্রির পরিচালক(গবষেণা) ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, টিআরবি কৌশল অনুসরণের মাধ্যমে ধানের ফলনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমাকে অতিক্রম করা যাবে। এই প্রকল্পের আওতায় র্বতমান ফলন স্তরকে অতক্রিম করে ৩য় স্তররে উচ্চ ফলনশীল ও গুণগত মানসম্পন্ন জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে। ভৌগলকি স্থান, বাজার ও কৃষকরে চাহদিা ভত্তিকি ২,৭৭,৯৩৮ টি ফিক্সড লাইন উদ্ভাবন করা হয়েছে যা থেকে প্রতিনিয়ত নতুন জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে ব্যাকক্রস কৌশল ব্যবহার করে প্রতি শীষে ৮৫০টি পুষ্ট দানা উৎপাদনক্ষম কৌলিক সারি উদ্ভাবন করা হয়েছে যা র্বতমানে অষ্টম প্রজন্মে রয়েছে। যেখান থেকে ভবষ্যিতে আরো অধকি উৎপাদনশীল ধানরে জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে। কর্মশালায় ব্রি-বিনা-ইরি এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কৃষিবিজ্ঞানী, সরকারী-বেসরকারি বীজ উৎপাদক প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীসহ শতাধিক প্রতিনিধি কর্মশালায় অংশ নেন।

This post has already been read 1842 times!

Check Also

বারি উদ্ভাবিত আনারসের লাড্ডু মেটাবে পুষ্টি চাহিদা

কৃষিবিদ ইফরান আল রাফি : বাংলাদেশের প্রধান ফলগুলোর মধ্যে পুষ্টিগুন সম্পন্ন আনারস অন্যতম। উৎপাদন মৌসুমে …