চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: আসন্ন পবিত্র রমজানে নিত্যপণ্য মূল্যের ক্রমাগত উর্ধ্বগতিরোধ, অবৈধ মজুতদার, কালোবাজারী, মূল্য সন্ত্রাসীদের সামাজিক ভাবে বয়কট ও ইফতারে ভাজা পোড়া বাদ দিয়ে খিচুরি খাওয়ার দাবিতে বাজার ভিত্তিক প্রচারণা কর্মসূচি শুরু করা হয়। বুধবার (১৫ মার্চ) কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম ও ক্যাব যুব গ্রুপ এর উদ্যোগে নগরীর কাজীর দেউরী বাজারে গণঅবস্থান ও বাজার ভিত্তিক প্রচারণা শুভ সুচনা করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।
ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি আবদুর রাজ্জাক, ক্যাব মহানগরের সহ-সভাপতি হাজী আবু তাহের, বিশিষ্ঠ লেখক ড. মাসুম চৌধুরী, ক্যাব মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, বিশিষ্ঠ কলামিস্ট মুসা খান, ক্যাব পাঁচলাইশের সাধারন সম্পাদক সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব চান্দগাঁও থানা সভাপতি মোহাম্মদ জানে আলম, ক্যাব সদরঘাট থানার শাহীন চৌধুরী, ক্যাব জামালখানের সভাপতি সালাহউদ্দীন আহমদ, নবুয়ত আরা সিদ্দিকী, হেলাল চৌধুরী, ক্যাব পাহাড়তলীর হারুন গফুর ভুইয়া, ক্যাব মহানগরের যুব সম্পাদক রেবা বড়ুয়া, ক্যাব কর্নেলহাট থানার সাধারন সম্পাদক দিদার প্রধান, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরী কে এনএম রিয়াদ, ক্যাব বোয়ালখালী উপজেলার প্রধান উপদেষ্ঠা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ, ক্যাব পাথারঘাটা ওয়ার্ড সভাপতি সায়েরা বেগম, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সাকিলুর রহমান, মিনা আকতার, জান্নাতুন নিশি, আমজাদুল হক আয়েজ, ইমদাদুল ইসলাম, রাসেল উদ্দীন, করিমুল ইসলাম, আবুল কালাম, সাঈদ, ইব্রাহিম ফারুক, নিশিতা নিশি, অহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন দেশে ইফতারে প্লেটভর্তি ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, জিলাপি ও মুড়ি ছাড়া হয় না। কিন্তু রোজাদারের স্বাস্থ্যের পক্ষে এসব খাবার কতটুকু উপকারী? স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার পর সন্ধ্যায় ইফতারিতে ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। ডায়েবেটিস বা বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত রোগীদের অবশ্যই সাহরি ও ইফতারিতে দুধ, ওটস এবং বাদামের মতো হালকা খাবার খাওয়া উচিত। ভাজাপোড়া ও মিষ্টান্নজাতীয় খাবার শরীরে ক্যালরির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই যেসব খাবারে তেল ও শর্করাজাতীয় উপাদান থাকে সেসব খাবার পরিহার করাই শ্রেয়। একইভাবে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদেরও ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া উচিত নয়। বিকল্প হিসাবে খিচুরীও শরীরের জন্য ফলদায়ক বলে মত প্রকাশ করা হয়।
বক্তাগন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, করোনার লকডাউন পরবর্তী সময় থেকে নিত্যপণ্যের বাজারে ক্রমাগত উর্ধ্বগতিতে অবিলম্বে ১৮ কোটি মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে অবিলম্বে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তির দাবি করেন। বক্তারা আরও অভিযোগ করে বলেন নিত্যপণ্য মূল্যের বাজারে আগুন ও গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে সরকারের কালক্ষেপন সব অর্জনকে ¤øান করে দিচ্ছে। আর এভাবে বিষয়টিকে অবজ্ঞার ফল দীর্ঘমেয়াদে সরকারের জনপ্রিয়াতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলবে। কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সব সরকারের আমলে সরকারের কাধে ভর করে বিপলু পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেন। আবার ক্ষমতার পালা বদল হলে সাইনবোর্ড বদল করেন।
তাদের কাছে আদর্শ কিছুই না, মানুষের রক্ত চুষে অর্থ লুন্টনই মুখ্য। তাই এসমস্ত ব্যবসায়ীদের মিস্টি কথায় না ভিজে সাধারন মানুষের জন্য কিছু করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
বক্তাগন বলেন, সাধারন জনগনের দুঃখ দুুুর্দশা লাগবে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আন্তরিক হলেও তাঁর অধিনস্তদের আন্তরিকতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে। সেকারনে ১ কোটি পরিবারের জন্য টিসিবির রেশন কার্ড প্রদান, টিসিবির ট্রাক সেল, ওএমএস ও ১০ টাকায় চাল বিক্রির মতো জনহিতকর কর্মসুচি সফল করতে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরী করা হচ্ছে। করোনা পরবর্তী সময় থেকে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপণ্যের বাজারে কারসাজি করে বাজারে আগুন ধরাচ্ছেন। যার কারনে চালের দাম দীর্ঘ দুই বছর ধরেই অস্থির। এসুযোগে ব্যবসায়ীরা একবার আলু, একবার পেয়াঁজ, একবার ডাল, আটা-ময়দা এভাবে প্রতিটি পণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরী করছেন। সরকারের সংস্লিষ্ঠ সংস্থার লোকজন অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি বন্ধের পরিবর্তে এসমস্ত অসাধু ব্যবসায়ীদের কর্মকান্ডকে বৈধতা প্রদানে সাধারন মানুষের ওপর নানা অভিযোগ তুলছেন। রমজানকে সামনে রেখে দাম বাড়েনি এমন পণ্যের তালিকা খুঁজে পাওয়া কঠিন। এ অবস্থায় গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীদেরকে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে বর্জনের আহবান জানান।
উল্লেখ্য ক্যাব চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার ২২টি বাজারে পবিত্র রমজানে নিত্যপণ্য মূল্যের ক্রমাগত উর্ধ্বগতিরোধ, অবৈধ মজুতদার, কালোবাজারী, মূল্য সন্ত্রাসীদের সামাজিক ভাবে বয়কট ও ইফতারে ভাজা পোড়া বাদ দিয়ে খিচুরি খাওয়ার দাবিতে বাজার ভিত্তিক প্রচারণা কর্মসূচি পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।