নিজস্ব প্রতিবেদক: সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ১০ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
তিনি জানান, এখন থেকে প্রতি লিটার প্যাকেটজাত সয়াবিন তেল ১০ টাকা কমিয়ে ১৮৯ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ৯ টাকা হ্রাস করে ১৬৭ টাকা এবং পাম অয়েলের দাম ১৩৫ টাকা থেকে ২ টাকা কমিয়ে খুচরা পর্যায়ে ১৩৩ টাকা নির্ধারন করা হয়েছে।
রবিবার (১১ জুন) সকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের ৭ম সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আজ থেকে ভোজ্যতেলের দাম কমানোর জন্য আমরা বলেছি। আশা করি দুই-তিনদিনের মধ্যে নতুন দামে বাজারে তেল পাওয়া যাবে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে ঈদের আগে তেলের দাম আরও কমানো যায় কিনা তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আসন্ন ঈদের আগে আর একদফা দাম কমানো সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সিনিয়র সচিব বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পিঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার পরপরই বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত পাঁচ লখ মেট্রিক টন পিঁয়াজ আমদানির অনুমতি প্রদান করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ৩০ হাজার মেট্রিক টন দেশে এসেছে। অনুমোদন প্রাপ্ত বাকি পিঁয়াজ দেশে আসলে দাম আরো কমবে বলে উল্লেখ করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত এক বছরে চাহিদা বিবেচনায় দেশে চিনি, গম ও আদা ব্যতিত অন্য কোনো পণ্যে সরবরাহে ঘাটতি নেই। ঈদুল আযহাতে যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে সেগুলোর দাম স্থিতিশীল রাখা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অন্যান্য পণ্যের দামও স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে কথা হয়েছে। চীন থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় দেশে আদার সংকট আছে। সমাধানের চেষ্টা চলছে। আমরা ব্যবসায়ী সকল পক্ষের সাথে কথা বলেছি তারা বাজারে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
তপন কান্তি ঘোষ জানান, দেশে এক বছরে ব্যবধানে গম আমদানি ২৪ লাখ টন এবং চিনি আমদানি কমেছে ৭২ হাজার টন। আমদানি কম হওয়ার দামের প্রভাব পড়েছে বাজারে। দেশের চিনি চাহিদার প্রায় পুরোটাই আমদানি নির্ভর। এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করে দাম নির্ধারণ করতে হয়। বেশ কিছুদিন ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম স্থির রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সিনিয়র সচিব বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেই সঙ্গে সঙ্গে দেশে সেই পণ্যের দাম কমানো সম্ভব হয় না। কারণ, আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে ডলারের দাম একটা বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। এছাড়া, শুল্কহার, অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যয় মূল্য নির্ধারণে প্রতিফলন ঘটে।
বাণিজ্য সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।