নিজস্ব প্রতিবেদক: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় স্বাস্থ্যবান জাতি গঠনে নিরাপদ খাদ্যের কোন বিকল্প নেই কারণ একটি জাতি শুধু অর্থনীতির মানদন্ডে উন্নত জাতিতে পরিণত হয় না, সেখানে নিরাপদ খাবার এবং সুস্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। টেকসই উন্নয়নের জন্য তাই সবার জন্য নিরাপদ খাবারের সংস্থান করতে হবে।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, একসময় খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। খাদ্য যোগানোর সাথে সাথে এখন আমরা খাবারের মান নিশ্চিত করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি যা আমাদের গ্রামীণ কৃষি নির্ভর অর্থনীতি থেকে নগরায়ন ও শিল্পোন্নত দেশের পথে অগ্রযাত্রার ফসল।
তিনি আজ (রবিবার, ১১ জুন) ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে “ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ এন্ড ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন আরবান ফুড ফিউচারস: এশিয়ান পারস্পেক্টিভস” শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন। স্থানীয় সরকার বিভাগ ও জাতিসংঘের ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের যৌথ উদ্যোগে দুদিন ব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে এমন একটি সংবিধান দিয়েছেন যেখানে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাথে অন্যান্য মৌলিক চাহিদা যেমন খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, আশ্রয় ও বাসস্থান সবকিছুর দিক নির্দেশনা রয়েছে। সেই পথনকশা অনুসরণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ জনগণের নিরাপদ খাবারের সংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছেন। মানসম্মত নিরাপদ খাবার নিশ্চিতকল্পে বিভিন্ন পদক্ষেপ এরই মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং এ সম্মেলনের মাধ্যমে আরো বিভিন্ন উদ্যোগ ভবিষ্যতে বাস্তবায়িত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডস এর এম্বাসেডর এ্যান ভ্যান লিওয়েন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এ সময় জানান, আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে গুলশানে পর্যটন কর্পোরেশন ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নির্ধারিত ফুড স্ট্রিটে নিরাপদ খাবার বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মো. আতিকুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে জাতিসংঘের ফুড এন্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশনকে সিটি কর্পোরেশনের মহাখালী ও মোহাম্মদপুর মার্কেটকে ক্রেতাবান্ধব করার উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানান।
ঢাকার দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে তাপস তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বাংলাদেশের জিডিপির চল্লিশ শতাংশ আসে রাজধানী ঢাকা থেকে সুতরাং ঢাকায় বসবাসরত মানুষের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ব্যবস্থা করার কোন বিকল্প নেই। ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস জানান, ঢাকার সকল বেসরকারি মার্কেটের জন্য নীতিমালা বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং বর্তমানে ঢাকায় আধুনিক পশু জবাই ও মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণেরও ব্যবস্থা হয়েছে। এ ধরনের আধুনিক ব্যবস্থা আমাদের নিরাপদ খাদ্য উৎস কে আরো শক্তিশালী করবে বলে জানান তিনি। এ সময় তিনি রাজধানী ঢাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগের সফলতা তুলে ধরেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইবরাহিম নিরাপদ ও মানসম্মত খাবার নিশ্চিতকল্পে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে বলেন, এক্ষেত্রে সরকারের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের উৎস নিশ্চিতকল্পে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।