রবিবার , নভেম্বর ১৭ ২০২৪

মাশরুম চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে দারিদ্র্য থাকবে না- কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, মাশরুম খুবই সম্ভাবনাময়। এটি খুবই পুষ্টিকর, যাতে প্রোটিন আছে ২২ ভাগের মতো। যেখানে চালে শতকরা ৮ ভাগ, গমে প্রায় ১২ ভাগ প্রোটিন রয়েছে। এছাড়া এটি অর্থকরী ফসল।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের আমলে দারিদ্র্যের হার আমরা শতকরা ৪০ ভাগ থেকে ১৮ ভাগে আর চরম দারিদ্র্যের হার ১৮ ভাগ থেকে ৬ ভাগে নামিয়ে এনেছি। মাশরুমের চাষ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে কোন দারিদ্র্য থাকবে না। তাছাড়া, আগামী ৩-৫ বছরের মধ্যে আমরা মাশরুম বিদেশে রপ্তানি করতে পারব।

আজ বুধবার (১৪ জুন) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল-বিএআরসি মিলনায়তনে মাশরুম চাষের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ বিষয়ক জাতীয় সেমিনারে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

দেশের প্রত্যেক উপজেলার কৃষি কর্মকর্তাদেরকে ২০০-৩০০ মাশরুম উদ্যোক্তা তৈরির জন্য এসময় নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৬ সদস্যের বিবৃতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন,  তাদের বিবৃতিটি দেখে মনে হয়েছে, বিএনপি বিবৃতি দিয়েছে। এটি বিএনপির ইইউ শাখার বিবৃতির মতো হয়েছে।

ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও আদিবাসীরা আওয়ামী লীগের আমলে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ থাকে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ইইউ পার্লামেন্টের ৬ জন সদস্যের এই বিবৃতি ভিত্তিহীন ও অনাকাঙ্ক্ষিত।

সেমিনারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাসের সভাপতিত্বে গেস্ট অব অনার হিসাবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: মাসুদ করিম, বিশেষ অতিথি হিসাবে বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো: বখতিয়ার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন। আলোচক হিসাবে অংশগ্রহণ করেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক হামিদুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক নিরদ চন্দ্র সরকার প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাশরুম চাষের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্পের পরিচালক আখতার জাহান কাঁকন। তিনি জানান, মাশরুম চাষ সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয় করতে পারলে তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে। দেশে বর্তমানে প্রায় ৪০-৪১ হাজার মেট্রিক টন মাশরুম প্রতি বছর উৎপাদন হচ্ছে যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ অনেক দেশেই  মাশরুম রপ্তানির  সুযোগ রয়েছে। চাষীরা শুকনা ওয়েসটার মাশরুম রপ্তানী শুরু করেছে যার অনেক চাহিদা আছে। এসব শুকনা মাশরুম দুবাই, মালয়েশিয়া ও সিংগাপুরসহ বিভিন্ন দেশে চাহিদা আছে। শিক্ষিত বেকার যুবক, যুবতিদের  প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসাবে তৈরি করতে পারলে মাশরুমের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার সৃস্টি হবে।

প্রবন্ধে জানান হয়, সম্ভাবনাময় এ ফসলটির চাষ সম্প্রসারণের প্রধান অন্তরায়গুলো হলো- আমাদের খাদ্যাভ্যাসে মাশরুম না থাকা, রান্না/প্রক্রিয়াজাতকরণে  জ্ঞানের অপ্রতুলতা; মাশরুম খাওয়া যাবে কি যাবে না, অর্থাৎ হালাল কি হারাম এ বিষয়ে দ্বিধা; এদেশের প্রচলিত অন্যান্য ফসলের চাষ পদ্ধতির সাথে মাশরুম চাষ পদ্ধতির মিল না থাকা এবং মাশরুম চাষে উচ্চ মূল্যের যন্ত্রপাতি ও উচ্চ প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানুষের প্রয়োজন হওয়া, গ্রামাঞ্চলে মাশরুম বাজারজাতকরণের সমস্যা, ব্যপক প্রচার প্রচারণার অভাব, সব জায়গায় মাশরুমের উপস্থিতি না থাকা।

সেজন্য,  মাশরুমের চাষ সম্প্রসারণ ও খাবার হিসাবে জনপ্রিয় করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মাশরুম চাষের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ২০২৩-২৭ পর্যন্ত ৫ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের মোট বাজেট ৯৬ কোটি টাকা।

This post has already been read 1747 times!

Check Also

অ্যামচেম এর সাথে বিডার সংলাপ

আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স ইন বাংলাদেশ আজ ( সোমবার ,২১ অক্টোবর) রাজধানীর অভিজাত এক হোটেলে …