মিঠুন সরকার (যশোর সংবাদদাতা) : ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে খাদ্য উৎপাদনের হার সামাল দিতে কৃষিতে নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহন করছে সরকার। তিন ফসলী জমিকে চার ফসলী জমিতে পরিণত করতে নেপথ্যের নায়কের ভূমিকায় আছে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ফলসের উৎপাদন ক্ষমতা ঠিক রেখে জীবন কাল কমিয়ে আনা হচ্ছে সর্বাধুনিক ও টেকসই কৃষি প্রযুক্তির মাধ্যমে। ফলে একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ হ্রাস করা যাচ্ছে তেমনি অল্প সময়ে অধিক ফলন নিশ্চিত করা যাচ্ছে। সামগ্রিক ভাবে কৃষিতে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হচ্ছে।
সরকার ও কৃষি বিভাগের এ নানা মূখী উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে কিছু অসাধু সেচ পাম্প মালিকরা। অধিক মুনাফা লাভের জন্য সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেচ কার্যক্রম শুরু করছে না। ওনেক ক্ষেত্রে প্রতি মৌসুমে ১ মাস পর্যন্ত সেচ কার্যক্রম পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আছে।
মাগুরা ইউনিয়নের মিশ্রীদেয়াড়া ব্লকের কৃষক মনিরুল ইসলাম জানান, ‘সঠিক সময়ে যদি মাঠে পানি ছাড়ে তাহলে আগাম আমন ধান চাষ করে সরিষা করে লাভবান হতে পারতাম। তার পরেও আবার সেচের দাম বেশি রাখে। চারার বয়স অনেক সময় ৪০-৪৫ দিন হয়ে যায় ফলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আমরা পাচ্ছিনা’।
গদখালী ইউনিয়নের ফতেপুর ব্লকের কৃষক আব্দুল জলিল জানান, ‘সেচ যদি আগে ছাড়া যায় তাহলে আমনের পর সরিষা বা মিষ্টি কুমড়া চাষ করে আমরা অধিক লাভবান হতে পারি।’
সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শনে ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, ‘আমন মৌসুমে যদি ১০-২০ দিন আগে ধানের চাষ শুরু করতে পারেন তাহলে শতকরা ৬০-৭০ ভাগ দুই ফসলী জমিকে ৩ ফসলী জমিতে রূপান্তর সম্ভব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘আমন মৌসুমে যদি সল্প জীবনকালের ধান ১৫ দিন আগে রোপন করা সম্ভব হয় তাহলে শস্যচক্রের উৎপাদন চিত্র পালটে দেওয়া যায়। অর্থাৎ দুই অথবা তিন ফসলী জমি তিন অথবা চার ফসলী জমিতে রূপান্তর করা যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘ ঝড়-বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দূর্যোগে ফসলের ক্ষতি হ্রাস করতে সেচ কার্যক্রম আগাম করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষি কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে বিশেষ স্কোয়াড গঠনের মাধ্যমে কৃষকদের সেচ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হবে।
সরকার নির্ধারিত সেচের মূল্যের চেয়ে বেশি টাকা নিলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অথবা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি’।