রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪

ইছামতি নদীতে ঐতিহ্যর নৌকা বাইচ শনিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক:  আগামীকাল ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ইছামতী নদীতে  গ্রাম বাংলার শত বছরের ঐতিহ্যর নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হবে। হাসনাবাদ, মৌলভীডাঙ্গি,  নয়ানগর,মোলাশীকান্দা, নতুন বান্দুরা ও পুরাতন বান্দুরা গ্রাম বাসীর সার্বিক সহযোগিতায় এ  নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হবে ।

এরই মধ্যে সব প্রস্তুত সম্পন্ন। পুরো এলাকায় বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।  বাইচে ঢাকা, মানিকগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের ১৬ টি ( ঘাসি ও খেলনা নৌকা)  নৌক অংশ গ্রহণ করবে। এরই মধ্যে বেশিরভাগ নৌকা  চলে এসেছে। নৌকা বাইচ আয়োজক কমিটির সভাপতি মো. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটি ও নৌকা মালিক সমিতির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় ৩৫ বছর পর আবার দেওতলা টু হাসনাবাদ পয়েন্ট নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়েছে। এবার যদি  নৌকার মালিক ও দর্শক সুশৃঙ্খলভাবে বাইচ সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে তাহলে প্রতি বছরই এই পয়েন্টে নৌকা বাইচের আয়োজন করা হবে। তিনি সবার সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন।

নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের এই বাইচ কমিটি দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায়  যেসব স্থানে আগে নৌকা বাইচ হতো কিন্তু বর্তমানে নানা কারণে বন্ধ আছে, সেসব এলাকার আয়োজকদের  বাইচ আয়োজনে উদ্বুদ্ধ করি।  তারা আমাদেরকে বাইচ না আয়োজনের কারণ প্রসঙ্গে জানান,  বাইচ আয়োজন এখন অনেক ব্যায় বহুল। দর্শকদের বিনোদন দিতে মানুষের হাতে পায়ে ধরে অর্থ কালেকশন করি। আয়োজনের দিন কখনো নৌকার মালিক সময় মতো আসে না, আবার স্টার্টিং পয়েন্টে যায় না, লটারিতে জোড়া পড়ার পর উক্ত নৌকার সঙ্গে টান দিতে অস্বীকৃতি জানায়৷ এর মধ্যে আবার দর্শকদের বড় বড় ট্রলার (বোট), স্প্রিড বোট( গান বোট) নদীতে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাওয়া আসা করে। এমনকি বাইচের টান শুরু হওয়ার পরেও এসব নৌযান চলে। এতে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। ঝামেলায় পড়তে হয় আয়োজকদের। এতকিছুর পরেও নৌকা বাইচ ঐতিহ্য  টিকিয়ে রাখতে ও দর্শকদের বিনোদন দিতে কাল আয়োজন করা হয়েছে নৌকা বাইচের।  রাশিম মোল্লা বলেন, নবাবগঞ্জে নৌকা বাইচের ঐতিহ্য প্রায় শত বছরের।  আমাদের এলাকার বাইচের সুনাম দেশব্যাপী। সেই সুনাম ধরে রাখতে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি মাসুদ মোল্লা নৌকার মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনারা কমিটির দেয়া নির্দেশনা মেনে চলবেন। ১. লটারির মাধ্যমে দুটি করে নৌকার টান হবে। লটারিতে যে নৌকার সঙ্গে  যারবজোড়া পড়বে তার সঙ্গে টান দিতে হবে। এতে কোনো নৌকার মালিকের কোনো আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না। টান না দিলে তাকে বাতিল করা হবে। এক্ষেত্রে কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে। ২. প্রথম ও দ্বিতীয় রাউন্ডে যে নৌকা বিজয়ী হবে, তিনি সরাসরি স্টাটিং পয়েন্টে চলে যাবেন। স্টেজের ওখানে কিংবা অন্য কোন স্থানে নৌকা অবস্থান করা যাবে না। বাইচ ছাড়ার সময় স্টাটিং পয়েন্ট নৌকা পাওয়া না গেলে  তাকে কমিটি যেকোনো মুহূর্তে ডিসকোয়ালিফাই করে দিতে পারবে। ৩. প্রতিযোগিতা অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করতে দুপুর ২টার মধ্যে নৌকাসহ মালিককে আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা দর্শকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, কাছে কিংবা দূরে যে যেখান থেকেই নৌ-যান নিয়ে  বাইচ দেখতে আসবেন, তারা যেন বাইচ শুরুর সময় তাদের বোট নদীর কোনো এক পাশে ভিড়িয়ে বাইচ উপভোগ করেন।

This post has already been read 2449 times!

Check Also

ময়মনসিংহে তারুণ্যের সভায় মাদকমুক্ত জীবনের শপথ

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা: উন্নত সমৃদ্ধ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার পথে অবদান রাখতে মাদকমুক্ত জীবনের শপথ নিয়েছে ময়মনসিংহের …