ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : টানা তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে সুন্দরবনে প্রবেশ শুরু করেছে জেলে ও দর্শনার্থীরা। শুক্রবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ভ্রমন পিপাসুরা সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। প্রথম দিনে সাড়ে চারশ‘র বেশির দর্শনার্থী প্রবেশ করেছে সুন্দরবনে। ট্রলার ও পর্যটকবাহী কয়েকটি লঞ্চে সুন্দরবনের করমজলসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখছেন তারা।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় ভোর থেকে জেলেরা সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খালে মাছ আহরণ শুরু করেছে। বন্যপ্রাণী ও মাছের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে মাছ শিকার ও দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ ছিল ।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের (টোয়াস) সহ-সাধারণ সম্পাদক ও এভারগ্রিন ট্যুরসের স্বত্বাধিকারী মাঝহারুল ইসলাম কচি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা শেষের প্রথম দিনই পর্যটকবাহী নয়টি লঞ্জ সুন্দরবন গেছে। এর মধ্যে সাতটি খুলনার, একটি মোংলার ও একটি ঢাকার। এখন থেকে দর্শনার্থীরা নিয়মিত সুন্দরবন ভ্রমন করতে পারবেন বলে জানান এই টুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশনের নেতা।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘শুক্রবার থেকে সুন্দরবনে জেলে ও পর্যটকদের জন্য পারমিট দেওয়া শুরু হয়। এজন্য নির্ধারিত স্টেশনগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলে ও পর্যটকরা এদিন সকাল থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করছেন। সকাল থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত চারে চারশের বেশি দর্শনার্থী করমজল ভ্রমন করেছে। এই সংখ্যা দিনে দিনে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে জানান তিনি।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনে বর্তমানে ১১৪টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার, দুই লাখ হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী, সুন্দরীসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল, ১৩ প্রজাতির অর্কিড ও ৩০০ প্রজাতির পাখি রয়েছে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ১৮৭৪ বর্গ কিলোমিটার জলভাগে কুমির, ৬ প্রজাতির ডলফিনসহ ২৯১ প্রজাতির মাছ রয়েছে।
৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটারের সুন্দরবনের বুকচিরে রয়েছে ৪০০ নদীনালা এবং ২০০ খাল। বাঘ, হরিণ, শূকরসহ ২৮৯ প্রজাতির স্থল ও জলজ প্রাণী বাস করে এখানে। ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর এবং বিভিন্ন প্রজাতির মাছসহ ২১৯ প্রজাতির জলজ প্রাণী আছে সুন্দরবনে ।