নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে “পোল্ট্রি কুকিং কমব্যাট-২০২৩” এর চুড়ান্ত পর্ব। বিপিআইসিসি ও ইউসেক এর যৌথ উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডি কনভেনশন হলে উক্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে (বুধবার, ৩০ আগস্ট) প্রাথমিক নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়। চুড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিযোগীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এতে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইন্টারন্যাশনাল কালিনারি ইনস্টিটিউট-আইসিআই এর স্বনামধন্য মাস্টার শেফ ডানিয়েল সি. গোমেজ এবং রেড উইন্ডো’র করপোরেট এক্সিকিউটিভ শেফ সাবাবা ইসমাম।
চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণের জন্য মোট দশ জনকে বেঁছে নেয়া হয় এবং তাদের মধ্য থেকে মোট ৬ জনকে বিজয়ী হিসেবে নগদ অর্থ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এতে ১ম পুরষ্কার অর্জন করেন ফারহানা হোসেন, ২য় পুরষ্কার মোসা. রেবেকা সুলতানা, ৩য় পুরষ্কার শামীমা সুলতানা মলি, ৪র্থ পুরষ্কার ফুয়ারা ফারহা এবং ৫ম পুরষ্কার কোহিনুর বেগম এবং ৬ষ্ঠ পুরষ্কার অর্জন করেন সায়মা সিদ্দিকা। প্রথম পুরষ্কার ৪০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরষ্কার ৩০ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরষ্কার ২০ হাজার টাকা, চতুর্থ পুরষ্কার ১০ হাজার টাকা এবং ৫ম ও ৬ষ্ঠ পুরষ্কার ৫ হাজার টাকা। এছাড়াও অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে দেয়া হয় বিশেষ সনদ ও মেমেন্টো ।
বিপিআইসিসি’র পক্ষ থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখা (WPSA-BB) এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. সিরাজুল হক ও সাধারণ সম্পাদক ডা. বিপ্লব কুমার প্রামাণিক ।
ওয়াপসা-বিবি সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. সিরাজুল হক বলেন, পোলট্রি আমরা বাংলাদেশের সবাই ভালোবাসি। কারণ, পোলট্রি হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে সহজপ্রাপ্য আমিষ। মানুষ এখন অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন, তাই অনেক বাসায় এখন রেডমিট রান্নাই হয় না। আমরা মুরগির মাংস খাই। অন্যদিকে ডিম এমন একটি খাবার যেখানে সব ধরনের প্রোটিন ও মিনারেল বিদ্যমান। অনেকের একটি ভ্রান্ত ধারনা ছিল যে, দিনে একটির বেশি ডিম খাওয়া যাবে না। কিন্তু এই ধারনা পাল্টাচ্ছে, আমার ৬৩ বছর বয়সেও প্রতিদিন ২টি করে ডিম খাই।
ওয়াপসা-বিবি সাধারণ সম্পাদক ডা. বিপ্লব কুমার প্রামাণিক বলেন, খাদ্য বলতে এখন থেকে ২০ বছর আগে শুধু আমরা ভাতকেই বুঝতাম। যদি আমরা স্ট্যান্ডার্ড খাবার বুঝি সেখানে কিন্তু কার্বোহাইড্রেটের পাশাপাশি প্রোটিন, মিনারেল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান দরকার। কোন খাদ্যে যদি এসব প্রয়োজনীয় উপাদান না থাকে তবে সেটি পূর্ণাঙ্গ খাবার হয় না।
বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার এখন বড় হয়েছে,মধ্যবর্তী আয়ের দেশ হয়েছে এবং সামনে আরো বড় হবে। ফলে এখানকার মেধার যদি বিকাশ হতে চায়, আমাদের শিশুদের যদি আরো বড় হতে হয়; তাহলে আমাদের পূর্ণাঙ্গ খাবার দরকার। এই পূর্ণাঙ্গ খাবারের জন্য প্রোটিন দরকার। আবার প্রাণীজ প্রোটিনের সবচেয়ে সহজলভ্য সোর্স হচ্ছে মুরগি ও ডিম। আমরা যদি সবদিক বিবেচনা করি তবে বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত ডিম ও মুরগির মাংস হচ্ছে সবচেয়ে সস্তা খাবার। এ সময় তিনি পোলট্রি কমব্যাটে উপস্থাপিত চিকেন রেসিপিগুলো দেশের গ্রামে-গঞ্জে পৌঁছে দেয়ার প্রত্যয় করেন।
উল্লেখ্য, চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা আয়োজনের প্রথম পর্বে ছিল ডিসপ্লে রাউন্ড। এ পর্বে প্রত্যেক নির্বাচিত প্রতিযোগী ১টি করে খাবার রান্না করে নিয়ে আসেন এবং ভেন্যুতে ডিসপ্লে করেন। এর মধ্য থেকে ১৫ জনকে কুক ওভার রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত করা হয়। এ সময় প্রত্যেককে একটি করে শেফ এ্যাপ্রন প্রদান করা হয়। এরপর ১৫ জনের মধ্য থেকে ১০ জনকে বাঁছাই করা হয়। ১০ জন থেকে ৬ জন এবং সেখান থেকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় নির্বাচন করা হয়।