ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপে অতি বর্ষণ এবং শিবসা ও কড়ুলিয়া নদীর তীব্র খর স্রোতে আলমতলা ও খুদখালী নদী ভাঙ্গন আরো তীব্র আকার ধারন করে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়দের আশংকা ভাঙ্গন কবলিত স্থান থেকে যে কোন মুহূর্তে ওয়াপদার বাঁধ ভেঙ্গে গেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এতে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার লস্করের আলমতলা ও গড়ইখালীর খুদখালী ভাঙ্গন কবলিত ওয়াপদা ভেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন খুলনা পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ২ মোঃ আশরাফুল আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু, ইউএনও মুহাম্মদ আল আমিন, পাইকগাছা উপ সহকারি প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার ও সংশ্লিষ্ঠ দুই ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আব্দুস ছালাম কেরু ও কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন প্রমুখ।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, পাউবোর ১০/১২ পোল্ডারে শিবসা নদীর ভাঙ্গনে গড়ইখালীর খুদখালীর ৮শ মিটার ভেড়িবাঁধ ও লস্কর ইউনিয়নের আলমতলায় ৭শ মিটার ভেড়িবাঁধ দীর্ঘদিনের ভাঙ্গন কবলিত। এর মধ্যে খুদখালির ১শ মিটার এবং আলমতলার ২শ মিটার মুহুর্তে খুবই ঝুকিপূর্ণ অস্থায় রয়েছে। ইতোমধ্যে লঘুচাপ ও চলিত পূর্ণিমার অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার হরিঢালীর মাহমুদকাটি, গদাইপুর ও রাড়ুলীর জেলে পল্লী কপোতাক্ষ নদের ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।
এ দিকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে জাইকার ৫২কোটি টাকা অর্থায়নে খুদখালি ও আলমতলার নদী ভাঙ্গন রোধে টেকসই ভেড়িবাঁধ এবং বাইনতলা সুইচগেট নির্মাণ প্রকল্পের টেন্ডার হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত এ প্রকল্পের কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সাধারন মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে।
তবে সংশ্লিষ্ঠরা বলছে ২০২৪ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। এ প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর-রাদ কর্পোরেশনের প্রজেক্ট ইঞ্জিঃ আরাফাত জাহান বলেন, এ মুহুর্তে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙ্গন কবলিত খুদখালী ও আলমতলায় মাটি ও বালুর বস্তা ফেলে ডাম্পিং করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, টেন্ডারের পরে ভাঙ্গন কবলিত দুই স্থানে পানির গভীরতা তিন গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। কাজেই পাউবো’র নতুন ডিজাইন হাতে পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
পরিদর্শন কালে পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা -২ প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল আলম জানান সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কে পোল্ডার রক্ষার্থে জরুরি ভিত্তিতে ডিজাইন অনুযায়ী কাজ করার নির্দেশনা দেন। তানা হলে সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি। একই সাথে তিনি আরো বলেন, এ সময়ের মধ্যে কোন ক্ষয়-ক্ষতি ঘটলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু মুঠোফোনে জানান, সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মহোদয় ও সচিব কে বিষয়টি অবগত করলে তাৎক্ষণিক তারা দু’জনেই জুরুরী ভিত্তিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।