নিজস্ব প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের কান্ডারি হতেন। বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ উত্তরসূরি হতেন। অমিত সম্ভাবনাময় নেতৃত্বের গুণাবলী তার মধ্যে ছিল। তিনি অনন্তকাল ধরে আমাদের প্রেরণা জোগাবেন। তিনি অন্ধকারে দীপ্তিময় জ্যোতিষ্ক হয়ে স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতে আমাদের অনুপ্রাণিত করবেন।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শেখ রাসেল দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট শিশু রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ছোট রাসেলকে যারা গুলি করতে পেরেছে তারা কতটা নিষ্ঠুর, কতটা নির্মম ছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। ‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের ঘটনা কারবালা প্রান্তরের নির্মমতাকেও হার মানিয়েছে। বিশ্বে অনেক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু কোন হত্যাকান্ডে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে, শিশুকে এভাবে হত্যা করা হয়নি। বঙ্গবন্ধু ভবনে ১৫ আগস্ট যে বিভীষিকাময়, নারকীয়, বর্বরোচিত ঘটনা ঘটেছিল, বিশ্বের ইতিহাসে অন্য কোন দেশের কোন হত্যাকাণ্ডে এই নির্মমতা দেখা যায়নি। সেটা রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হোক বা অপরাপর হত্যাকাণ্ড হোক।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে ‘৭৫ এর খুনিরা দাম্ভিকতার সাথে এদেশে বিচরণ করেছিল। তাদের বাঁচাবার জন্য ক্ষমতালিপ্সু খন্দকার মোশতাক, জিয়াউর রহমান এবং তাদের সহযোগীরা বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। এমনকি তারা দেশে ফিরে এসে জাতীয় সংসদের সদস্য হয়েছিল, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছিল। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার করা যাবে না সে আইনও বাংলাদেশের সংসদে পাশ করা হয়েছিল ১৯৭৯ সালে। ইতিহাসের নির্মমতা-বর্বরতাকে আইনি কাঠামোতে সুরক্ষা দেয়ার চেষ্টা এ দেশে হয়েছিল। খুনিদের দাম্ভিকতার সাথে ঘুরে বেড়াতে দেওয়া হয়েছিল। এখনো সব খুনিদের বিচার হয়নি।
শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, বাবার সান্নিধ্য খুব বেশি না পেলেও বাবার জন্য শিশু রাসেলের মমত্ব ছিল প্রগাঢ়। তার ভালোবাসা ও আকর্ষণের জায়গা ছিল বাবাকে ঘিরে। বঙ্গবন্ধুর মতো দৃঢ় ব্যক্তিত্ব ছিল শেখ রাসেলের। তার চলা-ফেরা ও কথা-বার্তায় আভিজাত্য ছিল।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নৃপেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য প্রদান করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল ও মো. তোফাজ্জেল হোসেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব বলেন, শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার কান্ডারি হতেন। শেখ রাসেলের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর গুণাবলী ছিল। শেখ রাসেলের মৃত্যু পৃথিবীর সব ট্রাজেডিকে হার মানায়। এ ধরণের নিষ্ঠুরতা যেন কোন শিশুর ভাগ্যে না ঘটে
আলোচনা সভা শেষে শেখ রাসেলসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সকল শহিদ এবং জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে মন্ত্রণালয়ে স্থাপিত শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মন্ত্রী।