গাজীপুর সংবাদদাতা: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেছেন, কৃষিকে জনপ্রিয় ও লাভজনক করতে হবে। খোরপোষের কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর করতে হবে । প্রচলিত জাতের স্থলে ব্রি উদ্ভাবিত উফশী জাতের চাষ করতে হবে।
তিনি বলেন, কৃষিকে লাভজনক করতে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বিজ্ঞানীগণ। ব্রি’র রাইস ফার্মিং সিস্টেম বিভাগের উদ্যোগে ব্রি উদ্ভাবিত আমন ধানের নতুন জাত ব্রি ধান৭১, ৭৫, ৮৭, ৯০ এবং ১০৩ এর ফসল কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে ব্রি’র মহাপরিচালক এসব কথা বলেন।
আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত এই মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে স্থানীয় শতাধিক কৃষক অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় কৃষকরা জানান, আমন মৌসুমে ব্রির এই পাঁচটি জাতের নতুন ধান চাষ করে কৃষকরা অভূতপূর্ব ফলন পেয়েছেন। ৩৩ শতকে ফলন পেয়েছেন ১৮-২২ মন। স্বল্পকালীন এইসব জাতের ধান ২০ থেকে ২৫ অক্টোবর এর মধ্যে কাটতে পারছেন। ফলে আগাম শীতকালীন শাকসবজি ও সরিষা অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে প্রচলিত দ্বি-ফসলি শস্য বিন্যাস কে তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করতে পারছেন। কৃষকদের আয় বাড়াতে এই সকল স্বল্পকালীন জাত ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর। ব্রি’র রাইস ফার্মিং সিস্টেম বিভাগের প্রধান ড. মো. ইব্রাহীম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কৃষক সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন রাইস ফার্মিং সিস্টেম বিভাগের সিনিয়র বিজ্ঞানী ড. খায়রুল কায়েস, ড. শীলা প্রামাণিক, এবিএম জামিউল ইসলাম ও বীর জাহাঙ্গীর সিরাজী প্রমুখ।
এলাকার কৃষকরা জানান, আগে এখানে আমারা স্থানীয় জাতের চাষ করতাম, এখন ব্রি উদ্ভাবিত জাতগুলো কম সময়ে অর্থাৎ ১০৫-১১০ দিনে হচ্ছে ফলে আমন ধান কাটার পর কৃষকরা সরিষা চাষের মাধ্যমে বিঘাপ্রতি ২০-২৫ হাজারের বেশি লাভবান হচ্ছেন।
ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, প্রতি বছর আমাদের জনসংখ্যার সাথে ২০-২২লক্ষ লোক যোগ হচ্ছে। ১৭ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে খাবারের নিশ্চয়তা দিতে হলে অবশ্যই ব্রি উদ্ভাবিত নতুন জাতের ধানগুলো চাষ করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। এলাকার প্রবাসী কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, আগে বিদেশ ছিলাম কৃষি কাজ করতাম না। কৃষি কাজ অলাভজনক ভাবতাম কিন্তু ব্রি ধান৭১, ৭৫ ও ব্রি ধান৮৭ এবং ব্রি ধান১০৩ আমার ধারণা বদলে দিয়েছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর বিদেশ নয় আমি দেশেই কৃষি কাজ করবো। নতুন জাতের ধান চাষ করবো। কেননা কৃষি এখন আগের তুলনায় বেশি লাভজনক।